পেকুয়ায় এক যুবককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

 

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে সোলেমান বাদশা নামের এক যুবককে ফাঁসানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। কাল্পনিক দৃশ্যপটে ওই যুবককে ফাঁসিয়েছে বলেও দাবি স্থানীয়দের। ওই যুবককে ফাঁসানোর ঘটনা জানাজানি হলে পুরো উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৬মার্চ রাত ৯টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের আরবশাহ বাজার এলাকার একটি ওষুধের দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। পেকুয়া থানার এসআই আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে দোকানটির মালিক ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস উদ্দিন, ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ফরিদুল ইসলাম ও আব্দুল হাকিম নামের এক যুবকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৫৩পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু ঘটনার দিন রাতে অদৃশ্য কারণে শুধুমাত্র আব্বাসকে আটকে রেখে অপর দুইজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

তাছাড়া সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, পরেরদিন এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় কাল্পনিক দৃশ্যপট সৃষ্টি করে সোলেমান বাদশা নামের নিরহ এক যুবককে আসামি করা হয়। যার সাথে এ ঘটনার নূন্যতম সম্পর্ক নেই। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের দায়েরকৃত মামলার সাক্ষীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের দায়েরকৃত মামলার সাক্ষী কাইছার ও শেহাব উদ্দিন বলেন, পুলিশ দোকানটিতে ঢুকে তিনজনকে আটক করে। পরে স্থানীয়দের সামনে তাদের কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘোষণা করেন। কিন্তু ইয়াবা গুলো কার কাছ থেকে পেয়েছে বা কিভাবে উদ্ধার করেছে তা উপস্থিত কেউ দেখেনি। আসামীদের থানায় নেওয়ার কথা বলে সাদা কাগজে পুলিশ আমাদের স্বাক্ষর নেয়। পরে জেনেছি আমাদের সাক্ষী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং এ ঘটনার যে ব্যক্তি কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই, তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, রাজাখালীতে ইয়াবা মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অবৈধ এ ব্যবসার বিরুদ্ধে কথা বলে কেউ নিস্তার পেয়েছেন এমন নজির নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া এ অবৈধ ব্যবসায় কেউ বাধা দিলে প্রশাসনকে দিয়েই তাদের হয়রানী করেন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। এ মামলা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

ভুক্তভোগী সোলেমান বাদশা বলেন, পেকুয়া থানা পুলিশের সাথে আঁতাত করে মাদক মামলায় আমার নাম জুড়ে দিয়েছেন উপকূলের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলাম টিপু ও নেজাম উদ্দীন নেজু। তারাই পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি সাজিয়েছেন। এবং সে সময় পুলিশের হাতে আটক দফাদার ফরিদুল ইসলাম ও আব্দুল হাকিমকে থানা থেকে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছেন। টিপু ও নেজুর অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা বন্ধে আমি প্রতিবাদ করেছি। তাই ইয়াবা ব্যবসার কালো টাকার বিনিময়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা আমাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৭মার্চ রাতে আরবশাহ বাজার থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা (নং-৭) দায়ের করে পুলিশ। পেকুয়া থানার এসআই আশিকুর রহমান বাদী হয়ে দায়েরকৃত এ মামলায় সাবেক ইউপি সদস্য আব্বাস উদ্দীন ও সোলেমান বাদশাকে আসামি করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন