পেকুয়ায় এক কিশোরীকে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের অভিযোগ
পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ায় সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে হত দরিদ্র পরিবারের পুতু বেগম (১৬) নামের এক কিশোরীকে ভারত পাচার করেছে বলে অভিযোগ করছে তার পরিবার। পুতু বেগম পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়া ঘোনা গ্রামের মৃত মোক্তার আহমদের কন্যা বলে জানা গেছে।
পরিবারটি অভিযোগ করে, চাকরী নয় কিশোরীকে পাচারকারীরা ভারতে নিয়ে যৌনদাসী হিসেবে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। তবে পাচারের শিকার ওই কিশোরী ভারতে কোথায় আছে। জীবিত আছে কিনা মারা গেছে তা কিছুই জানেন না এই দরিদ্র পরিবারটি। আর এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটির জন্য পরিবারটি দায়ী করছে উপজেলার মানব পাচারকারী একটি সিন্ডিকেটকে।
গত বছর ১৮ জুন পাচারকারীরা কিশোরীকে ২৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পরিবারের অজান্তে ভারত প্রবাসী বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মনু ও তার ছেলে এলাকায় অবস্থানরত নেজাম উদ্দিনের পুত্রবধু হামিদা বেগম যোগসাজসে ভারতে পাচার করে দেয়। পাচারের পর থেকে পুতু বেগমের কোন খোঁজ না পাওয়ায় কিশোরীর মা মাহমুদা বেগম (৪০) ঘটনার সাথে জড়িত নেজাম উদ্দিনকে ১নং আসামী করে। অপর ৬ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনাল (কক্সবাজার জেলা জজ) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৬৬৫/১৬ইং।
আদালত মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য পেকুয়া থানার ওসি বরাবরে প্রেরণ করেন। পেকুয়া থানার তদন্ত প্রতিবেদনকারী তার প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা উল্ল্যেখ করে ভিকটিম পুতু বেগমকে পাচারকারীরা গত ১ সেপ্টেম্বর ১৫ইং তারিখে ভারতের ভিসা দিয়ে ভারতে পাঠায়। ভারতে পৌছার ৫দিন পর পুতু বেগম তার চাকরীতে যোগ দেয়।
প্রতিবেদনে আরেও উল্ল্যেখ থাকে যে, ২নং আসামী হামিদা বেগম ও ৩নং আসামী মনোয়রা বেগম মনু’র স্বীকারোক্তিতে বলেন, চাকরীতে থাকাকালীন অবস্থায় ভিকটিম তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু প্রতিবেদনে সরেজমিনে তার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেদনকারীর প্রাথমিক তদন্তে পাচারের ঘটনা ৭/৮ ধারায় অপরাধ প্রতিয়মান হলে ও ঘটনার সাথে জড়িত ১নং আসামী নেজাম উদ্দিনকে তার দুই পা নেই (পঙ্গু) উল্ল্যেখ করে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বর্তমানে সঠিক বিচারের আশায় আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ভিকটিম ও নিখোঁজ পুতু বেগমের মা মাহমুদা বেগম।