পেকুয়ায় ইউপি সদস্যের পিতাকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ৩

পেকুয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা :
দা বাহিনীর তান্ডবে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের পিতা নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। জানাযায়, গতকাল দুপুরে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী স্কুল মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত ২৫ জুলাই জুমার নামাজের পর পরই দা বাহিনীর ১০/১৫ জনের একটি স্বশস্ত্র সদস্য বটতলী ও কাচারি পাহাড় এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তিকে টার্গেট করে হামলা চালায়। এসময় দা বাহিনীর ক্যাড়াররা ওই এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুপুরের নামাজের পরপর দা বাহিনীর ক্যাডাররা টার্গেট করে বটতলী এলাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা আবদুল জলিলের বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ পিতা উকিল আহমদ (৬৫) কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে তাকে পেকুয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তার অবস্থার অবনতি দেখে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

গতকাল রাত ৮ টার দিকে চমেক হাসপাতালে নেয়া হলে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার পুত্র আবদুল জলিল এমইউপি। এ ঘটনায় আরো ৩ ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানাগেছে।

স্থানীয়রা ধারণা করছেন, সম্প্রতি বোরকা বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে দা বাহিনীর কয়েক সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে দা বাহিনীর সদস্যরা। আর এ ফাঁকে পেকুয়ার ওসি হাবিবুর রহমান বদলী হলে নতুন ওসি যোগ দেয়ার মাঝখানেই তান্ডব চালিয়ে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটাল দা বাহিনীর ক্যাডাররা। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকে টইটং ইউনিয়নে ভীতিকর এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আহত ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাস্তায় গাড়ী চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে দা বাহিনীর ক্যাডাররা একই সময়ে তান্ডব চালিয়ে স্থানীয় কালু সওদাগরের দোকান ভাংচুর ও লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাট করে বলে জানাগেছে। একইভাবে দা বাহিনীর ক্যাডাররা একই ইউনিয়নের কাচারী পাহাড় এলাকায় হামলা চালিয়ে জুমার নামাজ থেকে বের হবার সময় আবু তালেব নামের এক ব্যক্তিকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

নিহতের পুত্র যুবলীগ নেতা আবদুল জলিল এমইউপির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দা বাহিনীর ক্যাডাররা তাকে হত্যা করতে এসে তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ পিতাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ২৬ জুলাই আছরের নামাজের পর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে জানাযাতে হামলা করবে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন বলে জানান।

ঘটনার পরপরই পেকুয়া থানার এসআই রেজাউল করিম রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে সাথে সাথেই আমি এবং পেকুয়া থানার আরেক এসআই আবদুল মতিন সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে চমেক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি। হামলাকারী কারা জানতে চাইলে তিনি জানান, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানলাম দা বাহিনীর কমান্ডার নাছিরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ইউপি সদস্যের পিতাকে আহত করলে পরে তার মৃত্যু হয়। হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, সম্প্রতি দা বাহিনীর সদস্যের উপর গুলির ঘটনায় জড়িত থাকার অজুহাতে তাদের উপর হামলা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন