পুণরায় মেয়র হলে প্রথম লক্ষ্য হবে পৌর এলাকাকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তোলা- সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভুট্টো
আসন্ন রাঙামাটি সদর পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পূণরায় মেয়র নির্বাচনের অংশ নিচ্ছেন বর্তমান মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভূট্টো। বর্তমানে তিনি রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাঙামাটিতে পৌর নির্বাচনে তার প্রার্থি হওয়া ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে একান্তে কথা বলেছেন পার্বত্যনিউজের সাথে। পার্বত্যনিউজের নিজস্ব প্রতিনিধির সাথে তার সেসব একান্ত আলাপচারিতা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
পার্বত্যনিউজ: আপনি কি লক্ষ্য নিয়ে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন?
ভূট্টো: আমি বর্তমানে মেয়র হিসেবে শত প্রতিকূলতার মধ্যে মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। রাঙামাটি অঞ্চলের অধিবাসীদের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে আমি এবারের পৌরসভা নির্বাচনের অংশ নিয়েছি।
পার্বত্যনিউজ: স্থানীয় পৌরসভার প্রধান সমস্যাগুলো কি কি?
ভূট্টো: স্থানীয় পৌরসভার বহু সমস্যা থাকলেও উল্লেখযোগ্য প্রধান সমস্যা হলো: রাঙামাটি পৌরসভার উন্নয়নে বাড়তি আয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। যে কারণে আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন দিতে অনেক সময় হিমসিম খেতে হয়েছে। আমি মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে অনেক চেষ্টা করেছি এ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য আয়ের ব্যবস্থা করতে। আমি পূণরায় মেয়র হলে এলাকার উন্নয়নের পাশাপশি পৌরসভার আয় বৃদ্ধির জন্য আয়বর্ধনমূলক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করবো।
পার্বত্যনিউজ: পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা জাতির বসবাস। তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রতি প্রতিষ্ঠায় আপনার ভাবনা কি?
ভুট্টো: আমি সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি না। আমি পূর্ণাঙ্গভাবে চেষ্ঠা চালিয়ে যাবো এ সকল জাতি, সকল বর্ণ মিলে এ অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য কাজ করা।
পার্বত্যনিউজ: রাঙামাটির মূল সমস্যা হলো অবৈধ অস্ত্র। এ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আপনার ভূমিকা কি থাকবে?
ভুট্টো: এ অঞ্চলের উন্নয়নের প্রধান সমস্যা হলো অবৈধ অস্ত্র। অবৈধ অস্ত্রের কারণে এ অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যঘাত ঘটছে, সেটা আমি মানি। যদি এ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পৌরসভার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার কোন দায়িত্ব থাকে তাহলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আমার পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা থাকবে।
পার্বত্যনিউজ: রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে একটি গোষ্ঠি বিরোধীতা করছে এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?
ভুট্টো: যে গোষ্ঠিই বিরোধীতা করুক না কেন, শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষিত হবে হবে। এ বিশেষ গোষ্ঠী কি বুঝে শিক্ষাসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান করছে সেকারণ একমাত্র ঐ বিরোধী গোষ্ঠেই ভাল জানে। তবে তাদের এ দাবিকে আমি ভিত্তিহীন ছাড়া আর কিছুই বলবো না।
পার্বত্যনিউজ: নির্বাচনী কাজ পরিচালনায় কোন বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কিনা?
ভুট্টো: আমি এখনো ব্যাক্তিগতভাবে কোন পক্ষ থেকে বাঁধার সম্মুখীন হইনি। তবে শাসক গোষ্ঠী আমাদের সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট মামলা দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন তাদের পক্ষে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
পার্বত্যনিউজ: রাঙামাটি পৌরসভা এলাকায় বাসা-বাড়ির ট্যাক্স নির্ধারণ নিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনা কি?
ভুট্টো: বর্তমানে বাসা-বাড়ির ট্যাক্সের পরিমাণ অনেক বেশি। তবে পৌরসভায় ট্যাক্সই আয়ের একমাত্র ভরসা। পৌরসভার অন্য কোন আয় না থাকায় দেশের অন্যান্য পৌরসভার ন্যায় এখানেও ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। তবে আমি যদি পুণরায় মেয়র হয় তাহলে চেষ্টা চালাবো ট্যাক্সের পরিমাণ সহনশীল রাখার জন্য।
পার্বত্যনিউজ: তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙামটি পর্যটন শিল্প অনেক পিছিয়ে রয়েছে। রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আপনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?
ভুট্টো: একটি দেশের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে পর্যটন শিল্প। যে দেশের পর্যটন শিল্প যত বেশি উন্নত, সে দেশে অর্থনৈতিকভাবে তত বেশি সমৃদ্ধশালী। রাঙামাটি শহরের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পুণরায় মেয়র হলে আমার প্রথম লক্ষ্য হবে পৌর এলাকাকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ে তোলা।
পার্বত্যনিউজ: আপনাকে মানুষ কেন ভোট দেবে?
ভূট্টো: খুব কঠিন প্রশ্ন। মানুষ আমাকে ভালবাসে বিধায় গতবারে ভোট দিয়ে পৌর মেয়র নির্বাচন করেছিল। এবারেও আমার অটুট বিশ্বাস, সাধারণ মানুষ আমার কাজের প্রতি বিশ্বাস রেখে আবারো মেয়র পদে পুণরায় নির্বাচিত করবে।
পার্বত্যনিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।
ভুট্টো: আপনাকে ও পার্বত্যনিউজকে ধন্যবাদ।