ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন: পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশংকা
মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ
খাগড়্ছড়ি-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মানিকছড়ির আমতলাস্থ বেইলী ব্রিজটি ধসে পড়ার পর গত ১৫ দিন ধরে দু’পারে অস্থায়ী বাসস্টেশনে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে নদী পারাপার করলেও গত দু’দিনের ভারী বর্ষণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে যাত্রীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে।
অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কেটে বসত গড়ে তোলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির আংশকা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মানিকছড়ির আমতলা বেইলী ব্রিজটি গত ৬ জুন গাড়ীসহ ধসে পড়ে। ফলে গত ১৫ দিন ধরে উক্ত সড়কের যাত্রীরা দু’পাড়ের অস্থায়ী বাসস্টেশনে পায়ে হেঁটে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অস্থায়ীভাবে ব্রিজটি চালু করতে বিরামহীনভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ী চলাচল বন্ধ থাকায় দু’জেলার জনগন এখন সরাসরি যোগাযোগ তেকে যেমন বিচ্ছিন্ন তেমনি এ অঞ্চলের কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল আম, কাঁঠাল, আনারস ও তরু-তরকারী বাজারজাতকরণে চরম বিপাকে পড়েছে।
ইতোমধ্যে কোটি টাকার ফলমূল গাছেই পচে গেছে! গত দু’দিনের ভারী বর্ষণে নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে পায়ে হাঁটার সাঁকোটি ভেঙ্গে গিয়ে যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। যদিও যাত্রী পারাপারে সাঁকোটি স্বাভাবিক রাখতে আনসার সদস্য ও ব্রিজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মনিকো লিমিটেড কর্তৃপক্ষ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
খাগড়াছড়ির আটটি উপজেলা এবং রাঙ্গামাটির দু’টি উপজেলার লক্ষ লক্ষ জনগন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য খাদ্য শষ্য, ওষধপত্র সংকট বাড়ছে। খাগড়াছড়ি-চট্রগ্রাম সড়কটিতে ধসে পড়া ব্রিজটির পাশে অস্থায়ী ব্রিজ নির্মিত প্রতিষ্ঠান মনিকো লিমিটেডের সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার পাল জানান, আবহাওয়ার কারণে গত দু’দিন কাজে থমকে আছে। বৃষ্টি কমলে ৭-১০ দিনের মধ্যে সড়কটিতে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক হবে।
অন্যদিকে ভারী বষর্ণের ফলে উপজেলা সদর রাজপাড়া, নাথ পাড়া, মুসলিম পাড়া, মহামুনি, মাষ্টার পাড়া, পান্নাবিল, বাটনাতলী ইউপি সড়কের স’মিল সংলগ্ন টিলা, বাজার সংলগ্ন কয়েকটি টিলাসহ বিভিন্ন লোকালয়ে পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এসব লোকালয়ে অপরিকল্পিতভাবে পাহাড়ের ঢালুতে এবং যত্রতত্র পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তুলছে এক শ্রেণির লোকজন।
বিশেষ করে সদরে জায়গা-জমির দাম বৃদ্ধির ফলে এক শ্রেণির অসাধু ভূমি ব্যবসায়ীরা কমদামে ঢালু পাহাড় কিনে তাতে মাটি কেটে সমানের নামে ঢালু অংশ ভরাট করে চড়া দামে বিক্রি করছে। এতে ক্রেতারা না বুঝে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘর তৈরী করে দেদারসে বসবাস শুরু করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে গতকাল শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজিদা শরমিন ও গচ্ছাবিল ২৯ আনসার ব্যাটালিয়ন সিও মো. মইনুল ইসলাম উপজেলা ফাঁড়ি সড়কে হালকা যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখতে সরজমিনে পরিদর্শন করে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।