পাহাড়ে ৮২ হাজার বিদেশি পরিবারকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

পার্বত্যাঞ্চলে ভূমিহীন অভ্যন্তরীণ লক্ষাধিক বাঙালি পরিবারকে পুনর্বাসন ও নতুন করে ৮২ হাজার উপজাতীয় পরিবারকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র চলছে।

সোমবার(৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায়  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তারা একথা বলেন।

পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জি: আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া, বিশেষ অথিতি ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মো. শেখ আহাম্মদ রাজু, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সমন্বয়ক আবদুল হামিদ রানা, প্রধান বক্তা ছিলেন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. ইব্রাহিম মনির প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সংখ্যা বাড়াতে ভারতের মনিপুর, আসাম ও মেঘালয় এবং মিয়ানমার থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের এদেশে এনে শরণার্থী হিসেবে সাজানোর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। আর এজন্য ভারত প্রত্যাগত ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি (উপজাতীয়) শরণার্থী বিষয়ক কমিটি  ট্রাস্কফোর্স গত সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখের এক বৈঠকে আভ্যন্তরীণ (নতুন করে) ৮২ হাজার উপজাতি শরণার্থী পুনর্বাসন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এধরনের সিদ্ধান্ত গভীর ষড়যন্ত্র বলেও বক্তারা মনে করেন। তাই এ সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত ফেরৎ আসার আহ্বান জানান।

আভ্যন্তরীণ ৮২ হাজার উপজাতিদের সঙ্গে প্রশিক্ষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী, অস্ত্রবাজরা ঢুকে যাবে না এমন গ্যারান্টি কে দেবে প্রশ্ন রেখে বক্তরা বলেন, নতুন করে যাদের পূনর্বাসনের (৮২ হাজার) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের তালিকা শীঘ্রই প্রকাশ করা হউক।

বক্তারা বলেন, সর্বশেষ আভ্যন্তরীণ ভারত প্রত্যাগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি (উপজাতীয়) শরণার্থী ২১টি পরিবারকে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালায় জামতলীতে পূনর্বাসন করা হয়। কিন্তু সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন বর্তমান জেএসএসের হত্যা নির্যাতনে উদ্বাস্তু ৫৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে এখন পর্যন্ত পূনবার্সনের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ২২,২২২টি উপজাতীয় পরিবারকে পুনর্বাসনের পর উপজাতীয়- ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী, আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় কোন  উদ্বাস্তু ছিল না। তাহলে হঠাৎ করে ৮২ হাজার  উদ্বাস্তু কোথা থেকে আসল। এদের খবর সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কেউই জানেন না। হঠাৎ করে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ কোথা থেকে নতুন করে এই ৮২ হাজার পরিবার বা চার(৪,০০০০০) লাখের বেশি  উদ্বাস্তু  আবিষ্কার করলেন। তালিকায় স্থান পাওয়া ২১ হাজার ৯০০ পরিবার সহ ৮২ হাজার পরিবারের সদস্যরা কারা তার বিস্তারিত প্রকাশ করার আহ্বান জানান বক্তারা।

বক্তারা মনে করেন- পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের কাঙ্খিত জুম্মল্যান্ড বানাতে গোপনে মিয়ানমার ও ভারত থেকে উপজাতীয় পরিবারকে কৌশলে পার করে আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু সাজানো হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোসহ তালিকাটি বাতিল করে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে ৫৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে পূনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন যাবত বাঙ্গালীদের ভূমি বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় ভূমি রেজিস্ট্রি হচ্ছেনা, তাই তিন পার্বত্য জেলায় লক্ষাধিক বাঙ্গালী বসতভূমিতে দখলসত্ত্ব থাকা সত্ত্বেও সরকারের তালিকায় ভূমিহীন আর নিজ নামে ভূমি বন্দোবস্তি বা রেকর্ড না থাকায় বাঙ্গালীরা যুগের পর যুগ বসবাস করেও স্থায়ীবাসিন্দার সনদ পেতে ব্যর্থ হচ্ছে, আর স্থায়ী বাসিন্দার সনদ না থাকায় নাগরিকত্বসহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বক্তাদের দাবি- এ সকল লক্ষাধিক বাঙ্গালীদের তালিকা প্রস্তুত করে আগে স্বার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাঙ্গালীদেরকে পুনর্বাসন করা হউক। অন্যথায় কোন পুনর্বাসনই করতে দেয়া হবে না।

বক্তারা আরও বলেন, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ২০০১ সালে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করা হয়েছিল শুধু  ১২,২২২টি ভারত প্রত্যাগত উপজাতি শরণার্থী পরিবারের সমস্যা সমাধানের জন্য- কিন্তু এ নেতারাই কৌশলে ২২ হাজার উপজাতীয়কে বাংলাদেশে শরণার্থী বানিয়ে পূনর্বাসন করেছে। অন্যদিকে আভ্যন্তরীণ লক্ষাধিক বাঙালি উদ্বাস্তুকে এখন পর্যন্ত পূনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ প্রক্রিয়া শীঘ্রই বন্ধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এর জবাব দেয়া হবে বলেও বক্তারা জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন