পাহাড়ে শুরু হয়েছে বৈসাবী উৎসব মেলা

Rangamati biju mela pic01

স্টাফ রিপোর্টার:

পাহাড় জুড়ে বিজু-সাংগ্রাইন-বৈসু-বিষু (বৈসাবী) উৎসবের মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১০ ভাষাভাষির ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবী ঘিরে রাঙামাটিতে তিন দিনব্যাপী মেলা আয়োজন করা হয়েছে।

জানা গেছে, পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব নিয়মে বৈসাবী উৎসব পালন করে থাকে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রনে এক বৈচিত্র্যময় রূপ ধারণ করে বৈসাবী উৎসবকে কেন্দ্র করে। তাই আগাম নানান কর্মসূচীর মাধ্য দিয়ে বৈসাবী আনন্দে মেতে উঠে এ অঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙ্গালীরা।

এবার উৎসবটিকে ঘিরে রাঙামাটির জেলায় আয়োজন করা হয়েছে নানা আয়োজন। রাঙামাটি উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী মেলায় বসানো হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতির উৎসবের আসর।

বিকাল ৪টায় বিজু-সাংগ্রাইন-বৈসু-বিষুকে (বৈসাবী) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকাম, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শান্তনা চাকমা, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি মজুবুল হক বুলবুল, রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ভারপাপ্ত পরিচালক রুনেল চাকমাসহ আরো অনেকে।

শুরু হওয়া বৈসাবী মেলার প্রথম দিন ছিল উৎসব মুখর। পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের অগণিত নারী-পুরুষের ঢল নামতে শুরু করে মেলা স্থলে। সন্ধ্যা নাগাদ জমে উপচেপড়া ভিড়। মেলাকে ঘিরে পাহাড়ের বইছে আনন্দের বন্যা। সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলন মেলায়।

মেলার স্টল সাজানো হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্য কৃষ্টি-সংস্কৃতি, অলংকার, বই, কোমর তাঁতের তৈরি পোশাক ও বেতের পণ্য প্রদর্শনী দিয়ে।

অন্যদিকে মেলায় চলছে আনন্দের হোলি আর পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, খেলাধূলা, নাটকসহ চাকমা, বম, চাক, ত্রিপুরা ও মারমা সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে মেলা চলাকালে যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোড়দার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র এক বছর পর থেকে শুরু হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক উৎসব ও মেলার আয়োজন। দীর্ঘ ১৭বছর ধরে এ প্রথা চালু রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন