পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত চুঁই যাচ্ছে সারাদেশে
দীঘিনালা প্রতিনিধি,
পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে মসলা জাতীয় উদ্ভিদ চুঁই। এক সময়ে এটি বন্য লতা নামে পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে সুস্বাধু খাবার হিসেবে বেড়েছে এর চাহিদা ও কদর। যা স্থানীয় জুমচাষীরা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন বাজারে। পাহাড়ের এ সংগৃহিত চুঁই এখন যাচ্ছে সারাদেশে।
চুঁই সর্ম্পকে জানা যায়, চুঁই মসলা জাতীয অপ্রচলিত উদ্ভিদ। এটি লতা জাতীয় গাছ। এর কাণ্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মত সবুজ রঙের। এর কাণ্ডটিই মসলা হিসেবে ব্যবহ্নত হয়। চুঁই সাধারনত দুই প্রকারের হয। একটির কাণ্ড আকারে ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার এবং অন্যটির আকার ২.৫ সেন্টিমিটার থেকে ৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত মোটা হয় ও ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
জমিতে অথবা গাছের গুড়িতে চাষ করা যায়। চাষের জন্য দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে পানি নিষ্কাশন সুবিধাজনক স্থানে ভালো জন্মায়। তবে পাহাড়ের মাটিও চুঁই চাষের জন্য উপযোগী। বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে এবং আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাটিং পদ্ধতিতে কাণ্ড সরাসরি মাটিতে রোপন করা হয়। চুঁই চাষের জন্য আলাদা মাচা তৈরী করতে হয় না। যেকোন বৃক্ষ জাতীয় গাছ আম, কাঁঠাল, জাম, সুপারি, নারিকেল ও জিয়ল গাছের গোড়ায় রোপন করলে এক বছরের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়।
ঔষধিগুণ সম্পন্ন মুখরোচক এ চুঁইশ্লেষ্মানাশক, গায়ে ব্যথা উপশমে কার্যকর। এটি হজমিকারক হিসেবে বেশ সহায়ক। সাধারণত মাংসের সাথে এ চুঁই ব্যবহার করা হয়।
তবে পাহাড়ে বসবাসরত জুম চাষীরা, জুম চাষের সুবাদে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এসব চুঁই সংগ্রহ করে থাকেন। পরে তা আটি বেঁধে নিয়ে আসেন বাজারে।
চুঁই বিক্রি করতে আসা দীঘিনালা উপজেলার যতিন ত্রিপুরা জানান, প্রতি বছর জুমের জমি তৈরীর সময় চুঁই পাওয়া যায়। এসব চুঁই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত।
স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন জানান, প্রতি বাজার থেকে আমরা ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে থাকি। পরে তা আমরা শহরের অভিযাত হোটেলগুলোতে প্রতিকেজি ২০০-৩০০টাকা কেজি হারে বিক্রি করা হয়। পাহাড়ের চুঁই ব্যপক চাহিদা রয়েছে।
দীঘিনালা হটিকালচারসেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান তত্ত্ব কর্মকর্তা মো. সেলিম জাবেদ জানান, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া চুঁই চাষের উপযোগী। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত চুঁই সংগ্রহ করে সারা দেশে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তামাকের বিকল্প হিসেবে এখানে বাণিজ্যিকভাবে চুঁই চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।