পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন অনেক, সংকট আস্থার
পাহাড়ের সুখ-দুঃখ-১
পিনাকি দাসগুপ্ত, পার্বত্য অঞ্চল থেকে ফিরে
শান্তি চুক্তির ২২ বছর চলছে। তিন পার্বত্য জেলা— বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি। যারা আট বছর আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন, তারা বুঝতে পারবেন কতটা পরির্বতন হয়েছে এ জনপদে। সর্বত্রই উন্নয়নের ছোঁয়া। পাহাড়ি কাঁচা রাস্তা এখন পিচঢালা পথ। গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল-মোটেল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সড়কে চলছে দামি দামি গাড়ি। বাহারি দোকানপাট।
আগে যেখানে সন্ধ্যার পর নেমে আসতো ভুতুড়ে পরিবেশ, সেখানে এখন ভ্রমণ পিপাসু মানুষের পদভারে মুখরিত; কিন্তু এতো কিছুর পরও এলাকার পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে রয়েছে আস্থার সংকট। শান্তি চুক্তির অধিকাংশ দফাই বাস্তবায়িত হয়েছে; কিন্তু পাহাড়ে হানাহানি বন্ধে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল তা বন্ধ করেনি এই অঞ্চলের সশস্ত্র গ্রুপগুলো। বন্ধ হয়নি অস্ত্রের ঝনঝনানি।
ফলে পাহাড়ে সেই কাঙ্ক্ষিত শান্তি ফিরে আসেনি। উল্টো কিছু কিছু বিষয় নিয়ে অশান্ত হয়ে উঠছে পার্বত্য অঞ্চল। পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা দিন দিন তাদের শক্তি বৃদ্ধি করে চলছে। মজুদ বাড়াচ্ছে অবৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদের। ফলে মানুষের মধ্যে আবারও আশঙ্কা বাড়ছে নতুন সংঘাতের। এখানে এখনো গড়ে ওঠেনি বড় ধরনের কোনো শিল্প কারখানা। এলাকায় বাড়ছে বেকারত্ব। সরেজমিন পরির্দশনকালে এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে কথা বলে এ চিত্রই পাওয়া যায়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা আস্থার সংকটের কথা স্বীকার করছেন। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমানে বাঙালি-পাহাড়ি সংখ্যা প্রায় সমান সমান। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি, শান্তি পূর্ণ পরিবেশ ও সহাবস্থান এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরো বলেন, বিশ্বের যেসব এলাকায় বিদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহিতা বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে সেখানে আস্থা ফেরাতে একটু সময় লেগেছে। আমাদেরও একটু সময় লাগবে। তবে এটা চলমান প্রক্রিয়া। সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।