পার্বত্য এলাকায় ৫৯ পপি বাগান ধ্বংস করেছে সেনাবাহিনী

fgsafafa

আশরাফ ইসলাম :

ফের বিস্তীর্ণ পার্বত্য এলাকাজুড়ে নিষিদ্ধ মাদক আফিমের গাছ পপি চাষ করা হচ্ছে। রবিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তা জানতে পেরে এ ধরণের ৫৯টি পপি বাগান ধ্বংসও করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
পপি, নিরীহ দর্শন এ গাছ মাদকের আকর। এ গাছের রস থেকেই তৈরি করা হয় আফিম, হেরোইন ও মরফিন। গত ২২ জানুয়ারি থেকে বান্দরবানের বিস্তীর্ণ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৯টি পপি বাগান খুঁজে বের করে রবিবার ধ্বংস করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
বান্দরবান (২)বান্দরবানের থানছি উপজেলার মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ওইসব বাগান ধ্বংস করা হয়েছে – উল্লেখ করে অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া লে. কর্নেল আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, জেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের সাংঙ্গু রিজার্ভ ফরেষ্টের ভেতর এসব পপি বাগান তৈরি করা হয়েছিল।

“গত ১৫ দিনে মায়ানমার সীমান্তের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে ৫৯টি পপি  বাগানের সন্ধান পাই আমরা। পপি বাগানে নিয়মিত পানি দিতে হয় বলে বাগানগুলো জুম চাষীরা তাদের বাসস্থান ঝিড়ির কাছেই গড়ে তুলেছিল।”

kk

 তিনি জানান, অল্প সময়ের মধ্যেই রস সংগ্রহ শেষে জাল দিয়ে আফিম তৈরী করা যায় ও সেই আফিম থেকে হেরোইন ও মরফিন তৈরী করা যায় বলে পাহাড়ি এলাকার জুমচাষিদের এর প্রতি তীব্র আকর্ষণ।
‘উৎপাদিত আফিম ও পপির রসের বেশির ভাগই মায়ানমারে পাচার হয়ে যায়। মায়ানমারে মাদকের ক্রেতা থাকায় ও নিরাপত্তাজনিত ঝামেলা না থাকায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ এলাকার জুমিয়া পরিবারগুলো পপি চাষ করতে আগ্রহী।’
তিনি আরও জানান, মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন পানঝিড়ি, বুলু পাড়া, লেইক্রে ঝিড়ি এলাকার বিভিন্ন পাহাড়ি ঝর্ণার আশেপাশেই জুমিয়া পরিবারগুলো পপি বাগান তৈরি করে।

 গত ২২ জানুয়ারি থেকে চালানো এসব বাগান ধ্বংসের অভিযানে বান্দরবান সেনা রিজয়নের ৪টি ব্যাটালিয়নের প্রায় আড়াইশ সৈন্য অংশ নেয়। সেনাসদস্যদের বাইরে প্রায় সমান সংখ্যক বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্যও এতে অংশ নেয়। পপি – বান্দরবান (৩)অভিযানের শুরুতে রেকি করা হয় সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করে।

রবিবার ১০ দিনের ওই অভিযান শেষে সীমান্ত সংলগ্ন ওই বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখে সেনাবাহিনীর চট্রগ্রামের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সাব্বির আহম্মেদ জানান, আপাতত কোনো বাগান নেই বলেই ধারণা করা হচ্ছে তবে মায়ানমার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরণের আরো পপি বাগান থাকতে পারে।

“সাংঙ্গু রিজার্ভের একেবারে দক্ষিণে মায়ানমার সীমান্ত পরিবেষ্টিত এ এলাকাটি খুবই নির্জন। বছরে একবার নিরাপত্তা বাহিনী এখানে অভিযান করলেও বছরজুরে পাহারা বা নিরাপত্তাবাহিনীর কোনো ক্যাম্প না থাকায় এ এলাকাটি অরক্ষিত। দু-তিনটি অস্থায়ী পপিচাষি পাড়া রয়েছে, এছাড়াও মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচরণ রয়েছে এ এলাকায়। এরা স্থানীয় জুমচাষিদের ব্যবহার করে প্রতিবছরই এ এলাকায় চাষ করাচ্ছে।”
তবে পপিচাষিদের মাদকের ভয়াবহতার কথা জানিয়ে পুনর্বাসন বা অন্য কোনো লাভজনক চাষাবাদে উদ্ধুদ্ধ করা গেলে সীমান্তে পপি চাষ বন্ধ করা সম্ভব – বলেও জানান সেনাবাহিনীর এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এসময় তার সঙ্গে আরও ছিলেন – বিজিবির চট্রগ্রাম এরিয়ার কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহম্মেদ, বান্দরবানের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদ সিদ্দিকী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম ও বিজিবির বান্দরবানের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সাইফ। সূত্র: এটিএন টাইমস

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “পার্বত্য এলাকায় ৫৯ পপি বাগান ধ্বংস করেছে সেনাবাহিনী”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন