পানছড়ি উপজেলায় মা ও শিশু মৃত্যু রোধে সাংবাদিকদের সাথে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) পানছড়ি উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন জাতীয়/আঞ্চলিক ও স্থানীয় সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের সাথে SHOW প্রকল্পের কর্মসূচি অবহিতকরন সভা অনুষ্ঠিত হয়। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে বাস্তবায়িত Strengthening Health Outcomes for Women and Children (SHOW) প্রকল্পের এ অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয় । প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় ইপসা এই সভার আয়োজন করে।

ইপসার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন। শো প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রকল্প প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কমিউনিকেশনস স্পেশালিস্ট বিপ্লবী রানী দে রায়।

উপস্থাপনার উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্মএলাকা, অংশগ্রহণকারী, মূল কার্যক্রম, উল্লেখযোগ্য অর্জন এবং সফলতা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় প্রশ্ন উত্তর পর্ব যেখানে সাংবাদিকবৃন্দ প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। প্রকল্পটি কাদের জন্য কাজ করে, কিভাবে কাজ করে, দরিদ্র পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, কিভাবে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে এবং গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে পরিবারের পুরুষ সদস্য কি ভূমিকা পালন করছে, তাদের কি দায়িত্ব রয়েছে ইত্যাদি।

আলোচনা শেষে সাংবাদিকবৃন্দ পানছড়ি উপজেলার লোগাং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে প্রকল্পের কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শন করেন। প্রকল্পের অংশগ্রহণকারীগণ কিভাবে বিনামূল্যে সেবা গ্রহণ করছে এবং স্বাস্থ্য কর্মীগণ কিভাবে সেবা প্রদান করছে এ বিষয়ে অবহিত হন। স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির কি ভূমিকা রয়েছে এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অবহিতকরন সভায় জানানো হয় যে, পানছড়ি উপজেলার সকল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র থেকে এ প্রকল্প শুরু থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ১৬৮জন গর্ভবতী মা প্রসব পূর্ববতী, ১০৬জন প্রসূতি মা প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন এবং ৩ জনকে নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, মা ও শিশু মৃত্যু রোধে বিনামূল্যে এই সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ২জন করে দক্ষ সিএসবিএ রয়েছেন যারা ২৪/৭ দিন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র অবস্থান করে নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। এছাড়াও গ্রাম পাড়া পর্যায়ে নিরাপদ প্রসব সম্পর্কে সচেতন করার ৪৬জন নারী এবং ১০জন পুরুষ স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছে।

দূর্গম পাহাড়ি এলাকার গরীব মায়েরা যাতে জরুরী অবস্থায় উন্নত প্রসব সেবা পাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে যেতে পারে এইজন্য একটি  এ্যামবুলেন্স’র ব্যবস্থা রয়েছে। ওই এ্যামবুলেন্সর সাহায্যে খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে গিয়ে মোট ২৪জন মা নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করেছে এবং তারা এখন সুস্থ্য আছে। ২০১৬ সাল থেকে ঝঐঙড প্রকল্প পানছড়ি উপজেলায় মা ও শিশু মৃত্যু রোধে কাজ করে আসছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন পানছড়ি উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং ইপসা  SHOW প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ।।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন