Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

পানছড়ির এক মমতাময়ী মায়ের আত্মনাদ

PMARPUR PIC copy

নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার ৫নং উল্টাছড়ি ইউপির ওমরপুর গ্রামের মো. মোজাফ্ফর আলী ও হোসনে আরা বেগমের ছেলে মো. আবুল হাসেম।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সে এসএসসি পাশ করে। অভাবের সংসারের হাল ধরতে ২০১০ সালে যোগ দেয় বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নে (বিজিবি)। তার ভর্তিকৃত ইউনিট ৩০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, পানছড়ি, তালিকাভুক্তির তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১০, ৭৮তম ব্যাচের ৩৩৫তম রিক্রুট।

ভর্তিকালীন সময়ে তার বয়স ছিল ১৮ বছর ৯ মাস ১০ দিন (২০ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১১ পর্যন্ত)। জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে মা-বাবার মুখে হাঁসি ফোটাতে চট্টগ্রামের বাইতুল ইজ্জতে শুরু হয় তার প্রশিক্ষণকালীন সময়। কিন্তু ছয় মাস প্রশিক্ষণ শেষে তার জীবনে নেমে আসে এক চরম অন্ধকার। তার বাবার সাথে হলুদ চাষ ও জায়গা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে ওমরপুর গ্রামের কয়েক কুচক্রী মহলের একটি মিথ্যাচারেই শেষ হলো তার জীবনের সব স্বপ্ন। পারভিন নামের এক মেয়েকে আবুল হাসেমের বৌ সাজিয়ে এক মিথ্যা অভিযোগ ও সুষ্ঠু তদন্ত না করার ফলে ২০১১ সালে ২০ ফেব্রুয়ারী তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।

অবিবাহিত হয়েও নিজেকে বিবাহিত হিসেবে মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় তাকে চাকুরী হতে ডিসচার্জ করা হয় মর্মে উল্লেখ রয়েছে। ছেলের চাকুরি ফিরে পেতে বিভিন্ন অফিস আদালতে ধর্না দিতে দিতে তার বৃদ্ধ মাতা হোসনে আরা এখন ক্লান্ত। এ মমতাময়ী মায়ের একটি আত্মনাদ ছেলেকে যারা মিথ্যাচার করে চাকুরিচ্যুত করেছে তাদের বিচার চাই। এখনও যদি সুষ্ঠু তদন্ত করে তার ছেলে সম্পূর্ন নির্দোষ প্রমাণিত হবে তার শতভাগ বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রীর নিকট ন্যায় বিচারের দাবি জানায় হোসনে আরা।

সরেজমিনে, এলাকাবাসী বিবাহের কোর্ট এফিডেভিট, হলফনামা, নিকাহনামা, জন্ম নিবন্ধন সদন, পরীক্ষা পাশের সনদসহ সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় তার বিরুদ্ধে আনীত সব কিছুই গরমিল। বিবাহ বন্ধন সম্পর্কিত হলফনামা ও নিকাহনামায় লেখা রয়েছে মো. খোকন মিয়া (২৬), পিতা  মো. মোজাফ্ফর আলী ও মাতা খোদেজা বেগম। অথচ তার জন্ম নিবন্ধন ও পরীক্ষা পাশের সনদে রয়েছে মো. আবুল হাসেম, পিতা  মোজাফ্ফর আলী, মাতা হোসনে আরা। বিবাহ বন্ধন সম্পর্কিত হলফনামা সম্পাদন হয়েছে ১/৯/২০১০ তারিখে  ও নিকাহনামা ২/৯/২০১০ ইং তারিখে। জন্ম নিবন্ধন ও পরীক্ষা পাশের  সনদে তখন তার বয়স ১৯ বছর কিন্তু বিবাহের কাগজপত্রে রয়েছে ২৬ বছর। তাছাড়া বিবাহ বন্ধন সম্পর্কিত হলফনামা ও নিকাহনামায় মাত্র ১দিনের ব্যবধানে মো. খোকন মিয়া নামের স্বাক্ষর দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। অথচ তার রেজিষ্ট্রেশন কার্ডে তার স্পষ্ট স্বাক্ষর রয়েছে মো. আবুল হাসেম। যা তদন্তে শতভাগ সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

ওমরপুর গ্রামের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছেলেটি চক্রান্তের শিকার। সঠিক তদন্তের অভাবে এভাবে একটি ছেলে চাকুরি হারানো খুবই দুঃখজনক বলে তাদের দাবি। অনেকে জানান, অভিযোগ পত্রে ছেলের নাম আবুল হাসেমের স্থলে মো. খোকন মিয়া, ছেলের মা হোসনে আরার স্থলে খোদেজা বেগম লেখা রয়েছে। মামলার বাদী পারভিন মামলার পর পরই অন্যত্র বিয়ে করে আজও অধরা। তাছাড়া ২৬/৫/২০১১ তারিখে তৎকালীন পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের শেখ ’র কার্যালয়ে পারভিনের একটি নোটিশের শুনানির দিন ধার্য্য থাকলেও হাজির হয়নি। এছাড়াও পুলিশের বিভিন্ন তদন্তে  বাদীর দেয়া নামীয় খোকন মিয়া, মাতা খোদেজা নামীয় কেউ উল্লেখিত বসবাস করে না মর্মে ১৩/৯/২০১৫ তারিখে পুলিশের একটি প্রতিবেদন উল্লেখ রয়েছে।

এলাকার দীর্ঘদিনের ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, বর্তমান ইউপি সদস্য মো. দুলাল মিয়া, বয়োবৃদ্ধ আলী আকবর, মো: সৈয়দ আলী, মো: মাহ আলম, মো: আজিজ, আ: জলিল, ওমর ফারুক, সাইফুল, সহিদুল, আ: কাদের সহ অনেকে জানায়,  আবুল হাসেমকে চাকুরীছাড়া করাটা একটা নাটকের মতো। সামাজিকভাবে আমরা জানিনা এমনকি কোনদিন শুনি নাই যে সে বিয়ে করেছে। তাছাড়া মামলার বাদী পারভিন এখন পলাতক কেন? তাদের দাবি চক্রান্তকারীদের যেন আ্ইনের আওতায় আনা হয়।

আবুল হাসেমের মা হোসনে আরা জানায়, ২৯৮নং খাগড়াছড়ি আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সুপারিশকৃত একখানা আবেদন  বিজিবি মহাপরিচালক বরাবরে ৩১/১২/২০১৪ তারিখ দাখিল করেছি। আজো কোন ফল পাইনি। বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে পূনঃতদন্ত পূর্বক বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করে একটি অসহায় পরিবারকে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জোর দাবি জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন