পানছড়িতে দিগন্ত গাইডের সাথে গিফট

DUIDE PIC copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার বিদ্যালয়ে, বিদ্যালয়ে দৌরাত্ম বেড়েছে গাইড প্রকাশনীর দালালচক্রের। এ বছর তাদের মধ্যে অন্যতম রেখা প্রকাশণীর “দিগন্ত” গাইড। বছরের শুরুতেই নিম্নমানের গাইড পাঠ্য নিয়ে উপজেলার এপার-ওপার দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে অসাধু এ দালালচক্র। জানুয়ারিতেই তাদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশী।

এবারে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে “দিগন্ত” সৌজন্য সংখ্যা গাইডের পাশাপাশি শিক্ষকদের মন জয় করতে দেয়া হচ্ছে ফ্রি উপহার পানির জগ, বোতল, টিফিন বক্স, ডায়েরী ও সৌজন্য সংখ্যা। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের আলমিরাতে এসব সামগ্রী শোভা পাচ্ছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়।

তাছাড়া গিফট সামগ্রী ও সৌজন্য সংখ্যা গাইড ভাগাভাগি নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে গ্রুপিং ও দ্বন্দের সৃষ্টি হয় বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে এবারের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় প্রথম শ্রেণী ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গাইড নিয়ে। উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে গাইড ক্রয়ের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আবার কোন কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই বই বহন করে বিদ্যালয়ে নিয়ে  বিলি করার পাশাপাশি লভ্যাংশের একটি ভাগও পাচ্ছে।

শনি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে পানছড়ি বাজারের প্রধান সড়কে দাঁড়ালে শিক্ষকদের বইয়ের বোঝা বহন করার দৃশ্যটিও নজরে আসবে। তাছাড়া দালালচক্ররা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে পানছড়ি বাজারে চায়ের আসরেই তাদের গোপন কার্যাদি সেরে নেয় বলেও জানা যায়।

অনেক অভিভাবক জানায়, ছাত্র-ছাত্রীদের বই কিনতে বাধ্য করার এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় বিদ্যালয়ে। যা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা প্রথম ও  দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া কোমলমতি শিশুরাও। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গাইড শিশুদের লেখাপড়ায় বিশাল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে তাদের ধারনা। তাছাড়া কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয় শেষে বাড়ি ফিরেই মা-বাবার কাছে আবদার গাইড কিনতে হবে।

এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুজিত মিত্র চাকমা জানায়, বিদ্যালয়ে কোন গাইড পাঠ্য করার নিয়ম নাই। এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সচেতন কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে গাইড কেন তা বোধগম্য নয় তবে আমরা যতটকু জানি, এসব কোমলমতিদের বিভিন্ন আনন্দ-উৎসাহ দিয়েই পড়ালেখা শেখানো হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গাইড নিষেধসহ বিভিন্ন অসাধু প্রকাশনীর দালালেরা বিদ্যালয় এলাকায় যাতে প্রবেশ করতে না পারে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন অভিভাবক মহল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন