পানছড়িতে চার বন্ধুর বাঁশের বাহন

4 Friends Pic

স্টাফ রিপোর্টার:

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার পানছড়ি বাজার হয়ে লোগাং-দুধুকছড়া সড়কে চলার পথে মাইল দু’-তিনেক গেলেই কানুনগোপাড়া। এককালে এ কানুনগোপাড়ায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বসবাস থাকলেও বর্তমানে অন্যান্য সম্প্রদায়ও এখানে বাস করে। যার ফলে চাকমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল ও যৌথখামার পাড়ার মারমা ছেলেরা এই পাড়ায় এসে সহপাঠিদের সাথে যোগ দিয়ে মেতে উঠে নানান খেলা-ধুলায়।

বিশেষ করে প্রতিদিন বিকালে দেখা মিলে বাঁশের বাহনে তাদের পথ চলার প্রানবন্ত দৃশ্য। চিকন সাইজের দুটি বাঁশকে আট-থেকে দশ ফুট করে কাটা হয়। তরপর বাঁশের মোটা অংশের নিচে প্রায় দুই ফুট উচ্চতার শক্ত কঞ্চিটি রেখে বাকি সবগুলো কঞ্চি ফেলে মশৃন করে বাঁশটিকে কিছুদিন রোদে শুকানো হয়। রোদে শুকানো হলে রেখে দেয়া কঞ্চিটির ইঞ্চি দুয়েক রেখে বাকিটা খুব সাবধানে ফেলে দিয়ে ঐ জায়গায় সাইকেল বা রিকসার পুরনো টিউব কেটে শক্ত করে বেঁধে পা রাখার উপযোগী করেই বানানো হয় বাঁশের বাহন।

এই বাহনে চড়ে চার বন্ধুর ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য সত্যিই দেখার মত। এই সড়কের বুক চিরে চলা মোটরসাইকেল, চান্দের গাড়ি, সিএনজি, ও টমটমসহ সব ধরনের বাহন চলাচলের পথে তাদের উচু হয়ে দু’বাঁশের কঞ্চি বেয়ে চলার দৃশ্য প্রাণ ভরে উপভোগ করে। দু’টি বাঁশের উপর পা রেখে তারা খুব দ্রুত গতিতে দৌড়াতেও পারে।

সরেজমিনে পানছড়ি কানুনগোপাড়ায় দেখা যায় বাঁশ বাহনের প্রাণবন্ত দৃশ্য। প্রথমে এ প্রতিবেদককে দেখে চার বন্ধু বাহনে চড়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও এলাকার কয়েকজনের অনুরোধে বাঁশ বাহন নিয়ে হাজির হয় ক্যামেরার সামনে।

চার জনেই মুচকি হেসে জানায়, আকাশ মারমা, সুমন সাঁওতাল, ভোলা ত্রিপুরা ও সুমন ত্রিপুরা তাদের নাম। আকাশ পানছড়ি বাজার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী, সুমন কানুনগোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণি, ভোলা ৩য় শ্রেণি ও সুমন একই বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়ে। বিদ্যালয় ছুটি হলেই তারা মেতে উঠে বাঁশ বাহন নিয়ে। আকাশ মারমার মা আরেমা মারমা ও বাবা চেলাউ মারমা জানায়, এই ঠ্যাংয়ের গাড়িকে মারমা ভাষায় বলে “খ্যাদাক”। এই গরমের মাঝে সারাটি দিন সে চড়ে বেড়ায়। সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই চার বন্ধু ঠ্যাংয়ের গাড়ি নিয়েই টিলা-টংঙ্কর বেয়ে ছুটে চললো বাড়ির উদ্দেশ্যে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন