পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে খাগড়াছড়িতে আ’লীগের দুই পক্ষ আবারো সরব

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:
পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে খাগড়াছড়িতে আ’লীগের দুই পক্ষ আবারো সরব হয়ে উঠছে। তবে প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় ২ এপ্রিল রবিবার সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে ভিন্ন ব্যানারে দুই পক্ষেরে ডাকা পাল্টা-পাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার রাতে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে এ তথ্য দিয়েছেন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মানববন্ধন আহ্বানকারী দুই পক্ষের নেতৃবৃন্দ।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিনা নোটিশে ৮৭ গ্রুপের কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারা করার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির ব্যানারে রবিবার সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি পৌর শাপলা চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বান করে। অপর দিকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার কর-ট্যাক্স বৃদ্ধি ও অসম উন্নয়নের প্রতিবাদে সচেতন পৌরবাসীর ব্যানারে একই সময় ও একই স্থানে মানববন্ধন আহ্বান করে অপর পক্ষ। কর্মসূচির সমর্থনে উভয় পক্ষ শহরে মাইকিং করে। দুই পক্ষের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কার শনিবার রাত ৮টায় জেলা প্রশাসন উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠকে বসে।

বৈঠকে জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম কাউছার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দীন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান, সচেতন পৌরবাসী কমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. শানে আলম, সদস্য সচিব ও জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, শুভ মঙ্গল চাকমা। অপর পক্ষের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক মো. আব্দুল মোবিন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ও ঠিদাকার কল্যাণ সমিতির সচিব দিদারুল আলম, ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ ও তাজুল ইসলাম বাদল। বৈঠক চলে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা।

বৈঠক শেষে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় প্রশাসন কোন পক্ষকে অনুমতি দেননি। প্রশাসনের অনুরোধে উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দ কর্মসূচি স্থগিত করেছে।

সচেতন পৌরবাসী কমিটির আহ্বয়ক মো. শানে আলম জানান, পরীক্ষা ও বৈসাবী উৎসবকে সামনে রেখে প্রশাসনের অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে আগামীতে একই দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হবে। অপর দিকে দিদারুল আলম জানান, কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও যে দিন পরীক্ষা থাকবে না, ওইদিন জেলা প্রশাসনকে স্বারকলিপি দেওয়া হবে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী পরিষদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিনা নোটিশে ৮৭ গ্রুপের কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগভাটোয়ারার অভিযোগ প্রত্যাখান করে বলেন, নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতি আড়াল করতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠন থেকে বহিস্কৃতরা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ষড়যন্ত্র করছে।

প্রসঙ্গত, গত পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। সে থেকে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা, মামলা চলছে। এ পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও অপর পক্ষে জাহেদুল আলম।