পঞ্চম শ্রেণীর শিশুকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারন

শিশু ধর্ষণ

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা হারবাং এর শান্তি নগর পাড়ায় ১১ বছর বয়সী ৫ শ্রেণীর এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণ শেষে ভিডিও ধারন করেছে জসিম উদ্দিন প্রকাশ কুপা শমশু (৩২) নামে মাদকাসক্ত এক ব্যক্তি। আর ওই ভিডিও নিয়ে ধর্ষিতার মাকে হুমকি দিচ্ছে তার সাথে ওই শিশুর বিয়ে দিতে হবে। নয়ত নগদ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। যদি না দেয় তাহলে ভিডিওটি ছেড়ে দেবে সবখানে। যদিও ইতিমধ্যে ভিডিওটি ওই যুবকের কয়েকজন বন্ধুসহ এলাকার বেশ কিছু নারী-পুরুষের মোবাইলে রয়েছে। শিশুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় শিশুটির পরিবার খুবই আতঙ্কে রয়েছে। কারণ ওই ধারনকৃত ভিডিওটি সবখানে ছড়িয়ে গেলে তার মান-সম্মান সব যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে ছোট্ট শিশুটির ভবিষ্যৎ। অন্যদিকে তারা কোন ভাবে মেনে নিতে পারছেননা একজন মাদকাসক্ত এবং দুই স্ত্রী ১ সন্তানের জনকের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়ার বিষয়টি।

এসব তথ্য জানা যায়, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ওসিসিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা ধর্ষণের স্বীকার শিশুটির মায়ের কাছ থেকে।

জসিম উদ্দিন প্রকাশ কুপা শামশু হলেন একই এলাকার মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে। তার ৩ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তার দুই স্ত্রী’র মধ্যে প্রথম স্ত্রী মারা গেছে আর দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ধর্ষনের স্বীকার শিশুটির মা জানায়, এ মাসের (ফেব্রুয়ারী) ১২ তারিখে তার মেয়ে স্কুল থেকে আসার পথে জসিম উদ্দিন তাকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে তার ঘরে ধর্ষণ করে। আর ধর্ষণকালে গলায় ছুরি ধরে এবং এসব দৃশ্য ভিডিও করে। ভিডিও’র দৃশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে তার মা কান্না করে দেয়, আর জানান, ‘আমার ছোট্ট মেয়ে চিৎকার করছিল আর মৃত্যু যন্ত্রণার মত ছটপট করছিল। কিন্তু ওই নরপশু আমার মেয়ের গলায় ছুরি ধরে অত্যাচার করেছে’

তার মা আরও জানান, জসিম উদ্দিন প্রায়ই তার মেয়ের দিকে কু-নজর দিত। এটা বুঝতে পেরে তিনি ঘটনার আগের দিন জসিমকে তার মেয়ের কাছ থেকে সরে থাকতে বলে। ওই সময় জসিম ও তার বন্ধুরা ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় ছিল। এর পর দিনই জসিম এ ঘটনা ঘটায়।

ভয় দেখানোর কারণে শিশুটি তার মাকে বিষয়টি জানায়নি। যদিও সেই থেকে শারীরিক অক্ষমতার কারণে সে স্কুলে যেতে পারছিলনা।

এরই মধ্যে ওই এলাকার এক নারীর সাথে ঝগড়া হয় ওই শিশুটির মায়ের সাথে। আর ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার মেয়ে চরিত্র হীনা বলে এক নারী এ ভিডিওটি দেখায় তার মাকে। এর পরই জসিম তার মাকে প্রস্তাব পাঠায় এ ভিডিও ডিলেট করতে হলে তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আর নয়ত তার মেয়েকে তার সাথে বিয়ে দিতে হবে। নয়ত সে সব জায়গায় ভিডিওটি ছেড়ে দেবে। যদি এ ভিডিওটি তার বন্ধু তারেক ও ফারুকসহ আরও কয়েকজন নারীর কাছে রয়েছে। এ অবস্থায় তারা খুবই আতঙ্কিত এবং অসহায়। এ বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারও যানেন। তারা স্থানীয়ভাবে বিচারের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে সময়ও নির্ধারন করেছিলেন। পরে তিনি ওই শিশুর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে পরার্মশ করেন। আর তিনি বলেন, আগে মেয়েকে চিকিৎসার জন্য  হাসপাতালে ভর্তি করা হোক। পরে প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়া হবে। তার কথা অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেল-সেন্টার (ওসিসি) ’র প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ শাহজালাল জানান, এ শিশুটি ধর্ষিত হয়েছে। শিশুটিকে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবারে তাকে এ সেন্টারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খাঁনের সাথে কথা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে তিনি এফিয়ার পাঠাচ্ছেন। আর অনুরোধ করা হয় এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। আর এ ব্যাপারে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন