নয় মাস পর খুলে দেয়া হল স্বর্ণ মন্দির

bandarban-pic-16-11

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পর্যটকদের জন্য ‘বুদ্ধ ধাতু জাদি’ বা স্বর্ণ মন্দিরের দুয়ার খুলে দেয়া হল। দীর্ঘ নয় মাস পর্যটক প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার পর বুধবার ২টার পর উন্মুক্ত করে মন্দির কর্তৃপক্ষ।

নিষেধাজ্ঞার সময় মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা বৌদ্ধ মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করছে, বিভিন্নভাবে ভক্তদেরও হয়রানি করেছে।

সে অভিযোগ থেকে সরে এসে মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা উ প ঞা জোত থের বলেন, বর্তমান সরকারকে উৎখাত ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে সারাদেশে জঙ্গি হামলা ও দেশের  যেখানে সেখানে বোমা হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পর্যটকদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তার আশ্বাসে পর্যটকদের জন্য মন্দিরটি আবারও খুলে দেয়া হয়েছে।

বুধবার বিকালে মন্দির পরিদর্শনে যান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। তিনি যাওয়ার পর মন্দিরের মূল কক্ষের তালা খুলেদেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। এ সময় জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, পৌর মেয়র মো. ইসলাম বেবীসহ অতিথিদের নিয়ে মূল কক্ষের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন।

প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দির ও রাম জাদি দুটো গুরু ভান্তে প্রতিষ্ঠাতা। দুটোই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থান। ভান্তে চান মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করে পর্যটকরা আসুক এবং এর সৌন্ধর্য্য ও সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক রাইহান বলেন, কক্সবাজার হয়ে বান্দরবানে এসেছি। শুনলাম আজ স্বর্ণ মন্দির পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করা হয়েছে। মন্দিরে ঘুরতে পেরে বেশ খুশি।

মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা পর্যটকদের আমন্ত্রন জানিয়ে বলেন, নিরাপত্তার মধ্য মন্দিরের সৌন্দর্য্য উপভোগ করুন। স্বর্ণ মন্দিরের সুনাম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক এমনটাই তিনি আশা করেন।

মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেখানে পর্যটকরা প্রবেশের সুযোগ পাবেন। মাঝে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রার্থনার জন্য পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে ।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, স্বর্ণ মন্দির ও পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ী করা হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়জন পুলিশ সদস্যর মধ্য দুইজন নারী পুলিশ থাকবে। সন্দেহভাজনকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাসী করে প্রবেশ করানো হবে বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক বলেন, পর্যটকদের মনে রাখতে হবে মন্দিরটি বৌদ্ধধমালম্বীদের তীর্থ স্থান। মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা করা সকলের দায়ীত্ব।

প্রসঙ্গত, জেলা শহর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে বালাঘাটা এলাকায় প্রায় এক হাজার ৬০০ফিট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে উঠেছে বৌদ্ধ ধাতু জাদী (স্বর্ণজাদী)। স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন বৌদ্ধ ধাতু জাদী স্বর্ণমন্দির। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি তীর্থস্থান হলেও পর্যটকদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন