নির্বাচনের কয়েকদিন কড়া নজরদারিতে থাকবে রোহিঙ্গারা

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে রোহিঙ্গাদের মাঝে ফিরেছে শৃঙ্খলা। তবে, রোহিঙ্গাদের মাঝে এক ধরণের ভীতিও কাজ করছে বলে জানান রোহিঙ্গাদের অনেকেই।

৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচল না করতে স্ব-স্ব ক্যাম্পে দায়ীত্বরত ক্যাম্প ইনচার্জরা ক্যাম্প অভ্যন্তরে মাইকিং করে সতর্কতা করেন।

বালুখালী ক্যাম্প-এর রোহিঙ্গা লালু মাঝি জানান, ক্যাম্প ইনচার্জ মাঝিদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বের না হতে বলে দিয়েছেন।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গারা অর্থের বিনিময়ে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর হয়ে কক্সবাজারের নির্বাচনের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে নজরদারি বাড়ানোর কথা জানান প্রশাসন।

জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে কক্সবাজারের চারটি সংসদীয় আসনে ভোটের আমেজ শুরু হয় প্রার্থী এবং ভোটারদের মাঝে। তবে অনেক এলাকায় হামলা-মামলা হয়েছে তুলনামূলক। উৎসবমুখর পরিবেশ থাকলেও রাজনৈতিকভাবে সম্প্রীতির জেলা কক্সবাজারে এবার নির্বাচনে আশঙ্কার নাম রোহিঙ্গা। কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনেই অবস্থান এসব রোহিঙ্গার। যার কারণে যত শঙ্কা এ আসনের প্রার্থীদের।

তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের আশঙ্কা থাকলেও নেই বলছে বিএনপি। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, যদি নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তাহলে নৌকায় ভোট বিপ্লব হবে। কিন্তু জামায়াত-বিএনপিরা আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে সহিংসতা ঘটনার পরিকল্পনা করছেন বলে মন্তব্য করেন তিতি।

কোনো শঙ্কা নেই জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ আসনের ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কেউ সহিংস ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়তে পারবে না। কারণ কেউ যদি তাদের ব্যবহার করে তাহলে সেটা আমরা দেখব।

এদিকে জেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের কোনো গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে। আর সেটাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন, উখিয়ায় যেকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে তার আশেপাশের এলাকায় পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৩ টি ক্যাম্পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উখিয়ার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন-উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমুহের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক র‍্যাব, বিজিবি, পুলিশ, ব্যাটেলিয়ন আনসারের সমন্ধয়ে ক্যাম্প এলাকায় নিয়মিত টহল রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। যে সকল ক্যাম্পকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছে সেখানে বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারিও রাখা হয়েছে। উখিয়া-টেকনাফের নির্বাচনের মাঠে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন