নাইক্ষ্যংছড়ির নিখোঁজ বিজিবি সদস্য উদ্ধার হয়নি : পতাকা বৈঠকে সাড়া দেয়নি মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী

pic-1

নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি:

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূর্গম দোছড়ি ইউনিয়নের মায়ানমার সীমান্তবর্তী পাইনছড়ি এলাকায় (বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন) বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বর্ডার গার্ড পুলিশ) বিজিপি কর্তৃক গুলিবর্ষণ ও  ওই এলাকার নবগঠিত পাইনছড়ি বিওপি’র নায়েক মিজানুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ।

 

এই ঘটনার উত্তরণের জন্য গত ২৮ মে বিকাল ৪.০০ঘটিকায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) ’র নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে .কর্ণেল সফিকুর রহমান মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ(বিজিপি) মংডু ২নং সেক্টরের কমান্ডার থিং কো কো বরাবরে পতাকা বৈঠকের জন্য পত্র প্রেরণ করে । কিন্তু এ পত্রের কোনো উত্তর দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।

বিজিবি গতকাল ২৯ মে সকাল ১১.০০ ঘটিকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি সীমান্তের ৫০নং পিলারের নিকটবর্তী বাহির মাঠ এলাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের জন্য সকল প্রকার আয়োজন সম্পন্ন করে । আয়োজন সম্পন্নের পরও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) পতাকা বৈঠকে আসেনি । সকাল ৯.০০ ঘটিকা থেকে রাত ৮.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিল  বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)’র কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল খন্দকার ফরিদ হাসান, নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে .কর্ণেল সফিকুর রহমান, উপ-পরিচালক (এডি) মোশারফ হোসেনসহ বিজিবি ও সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ।

বাংলাদেশ সীমান্তের প্রতিটি সীমান্ত পয়েন্টে অতিরিক্ত বিজিবি ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে । নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে .কর্ণেল সফিকুর রহমান বলেন, মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী জেনেভা আইন লংঘন করেছে । সীমান্ত আইন অনুযায়ী সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় উভয় দেশের পতাকা নিয়ে সশস্ত্র টহলরত অবস্থায় কোন সেনা, সৈন্য ও সীমান্তরক্ষীকে গুলি বা অপহরণ করা যাবে না । এই আইন লংঘন করে গুলি চালায় এবং এক বিজিবি সদস্যকে অপহরণ করে নিয়ে যায় । এই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে মায়ানমার সরকার তাদের টিভি, রেডিওসহ সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করছে , বাংলাদেশর দূর্গম সীমান্তে এক সশস্ত্র মুজাহিদ আটক ।

এদিকে গতকাল নিখোঁজ বিজিবি সদস্য নায়েক মিজানুর রহমান এর খবরাখবর নেওয়ার জন্য তার ভাই, ভাই পো, চাচাসহ নিকট আত্মীয়রা নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের জোন সদরে আসেন । উদ্ধার অভিযান, উদ্ভুত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য আলীকদম রিজিয়ন থেকে ৪০ জন সেনা ও ৩১ এবং ৫০  বিজিবি থেকে বাড়তি বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে সীমান্ত এলাকায় । রাত ৮.০০ ঘটিকা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলছে ।

এদিকে গতকাল ২৯ মে বৃহস্পতিবারও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তের ৫০নং পিলারের নিকটবর্তী বাহির মাঠ এলাকার বিপরীতে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিজিপি’র ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশের বিজিবির সদস্যদের লক্ষ্য করে ৭০-৮০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে । বর্তমানে মায়ানমারের ওই ক্যাম্পে ৫ শতাধিক মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) অবস্থান করছে । ওই এলাকায় যুদ্ধাভাব বিরাজ করছে । বিজিবি ও সেনা সদস্যগণ সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করছে । সীমান্তে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে । জিরো পয়েন্টে কারফিউ জারি করা হয়েছে ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নাইক্ষ্যংছড়ি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন