Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

নারী শ্রমিকেরা পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরী

????????????????????????????????????

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
পহেলা মে’। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিবস। এই দিবসেও কক্সবাজারের নাজিরারটেকের শুটকী পল্লীর নারী শ্রমিকেরা পাচ্ছে না তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরী। তাদের সাথে চলছে বৈষম্য। একই ধরনের শ্রম করার পরেও পুরুষের অর্ধেকেরও কম মজুরী দিয়ে তাদের বিদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেও কোন লাভ হচ্ছে না। বরং কাজ থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে জীবন সংসার চালাতে হীমসিম খেতে হচ্ছে ওখানকার নারী শ্রমিকেরা।

নাজিরার টেক দেশের বৃহৎ শুটকীপল্লী। যেখানের শুটকী দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে। আর এই শুটকী পল্লীতে পুরুষদের পাশাপাশি ৫ হাজারেরও বেশি নানা বয়সী নারী শ্রমিক কাজ করেন। তারা ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও শ্রমের মূল্য দিতে গিয়ে তাদের ঠকানো মালিক পক্ষ। এমনটাই অভিযোগ ভূক্তভোগী নারী শ্রমীকদের।

ওই শুটকী পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, প্রচন্ড রোদের মধ্যে কিশোরী থেকে শুরু করে হাজার হাজার নারী শ্রমিকেরা কাজ করছেন। তারা মাছ বাছাই, ধোয়া, আনা-নেওয়া, শুকানো, গোদামজাতসহ নানা ধরনের কাজ করছেন। অরেনকটা পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়েই কাজ চলছে।

তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একই ধরনের কাজ করার পরেও পুরুষ শ্রমিকদের দিচ্ছে ৪ থেকে ৫শ টাকা আর নারী শ্রমিকদের দিচ্ছে ১ থেকে ২শ টাকা। এই বৈষম্যের ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে তাদের দেওয়া হচ্ছে হুমকি। এমনকি মারধরও করছে।  বেশি বাড়াবাড়ি করলে বের করে দিচ্ছে কাজ থেকে।

নারী শ্রমিক সফুরা খাতুন জানান, গত ২ বছর আগে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে স্বামী মারা যান। সেই থেকে ৪ সন্তান নিয়ে জীবন-যাপন করতে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। বাধ্য হয়ে মাছ বাছাইয়ের কাজ করছে। ভোর ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কাজ করে পায় মাত্র ২শ টাকা। অনেক সময় ওই টাকাও বাকী রাখেন শুটকী ব্যবসায়ীরা। তাদের সাথে প্রতিবাদ করা যায় না। প্রতিবাদ করলে কাজ থেকে বের করে দেয়। এই টাকা দিয়ে সফুরা খাতুনের সংসার চলেনা। তাই স্কুলে পড়া দুই সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তাদেরকেও মাছ বাছাইয়ের কাজ করাচ্ছে। কিন্তু একই কাজ করে পুরুষেরা পায় ৪শ টাকা থেকে ৫শ টাকা।

শুধু সফুরা খাতুন নয় এই ধরনের ঘটনা শত শত নারী শ্রমিকের। তারা দু’বেলা খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করছে। তারা অপেক্ষা করতে পারছেনা ন্যায্য মজুরীর জন্য। আর এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে অসাধু শুটকী ব্যবসায়ীরা। তারা সিন্ডিকেট করে নিজেরাই আইন তৈরী করেছে নারী শ্রমিকদের ঠকানোর জন্য।

শুটকী মহালের মালিক জাহাঙ্গীর জানান, নারীরা কম দামে কাজ পেলেও করে। এছাড়া নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। তাই কমদামে নারীদের শ্রমিক হিসেবে খাটানো যায়। আর পুরুষেরা যা পারে তা নারীরা পারেনা। তাই তাদের বেতন কম দেওয়া হয়।

এই বৈষম্যের কারন কি জানতে চাইলে, সাজ্জাদ হোসেন নামে আরেক শুটকী মহাল মালিক বলেন, এখানে নারী শ্রমিকদের বেতন কম দেওয়া হয়। তবে কাজের চাপ বাড়লে বেতনও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা’ই এখানকার নিয়ম।

এ ব্যাপারে ঝাউতলা নারী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী ফাতেমা আলম লিপি জানান, নাজিরারটেক শুটকী পল্লীতে নারীরা পুরুষের সাথে সমানভাবে কাজ করলেও তাদের বেতন কম দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই অন্যায়। তাই সবার এই অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর নিশ্চিত করতে হবে নারীদের সমাজ অধিকার।

এ ব্যাপারে জেলা শ্রমীক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারী জানান, অধিকার আদায় করে নিতে হয়। সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই অধিকার বাস্তবায়ন করা যাবে। বিচ্ছিন্নভাবে কোন কাজ কখনও সফল হয় না।

কক্সবাজারের শুটকী ব্যবসার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে যে নারী শ্রমিকেরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছে তাদের ন্যায্য মজুরী দেওয়া নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আর বন্ধ করতে হবে বৈষম্য। এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন