নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবি

cox-boat-dobi-6-copy

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে টেকনাফের নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রোববার রাতে নাফ নদীর টেকনাফ প্রান্তের জাদিমুড়া নামক জায়গার বিপরীতে মিয়ানমারের বড়গজিরবিল গ্রাম থেকে একদল রোহিঙ্গা নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ কালে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় রেহেনা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা নারী সাঁতার কেটে বাংলাদেশের জলসীমায় লালদিয়া দ্বীপে আশ্রয় নেয়। সোমবার ভোরে বাংলাদেশী জেলেরা মুমূর্ষ অবস্থায় মহিলাটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করে।

স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া ওই নৌকায় ৩০-৩৫ জন রোহিঙ্গা ছিল। আরোহীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

উদ্ধার হওয়া ওই মহিলা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, টেকনাফের একজন দালালের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। নৌকাটি ছোট হওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করায় নৌকাটি ডুবে যায়।

তবে টেকনাফস্থ বিজিবি ২-ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবু জার আল জাহিদ জানিয়েছেন, নৌকা ডুবির খবর পেয়ে বিজিবি’র টহল দল নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় সোমবার সকাল থেকে ২ ঘন্টাব্যাপী তল্লাশি চালায়। বিজিবি নাফ নদীর ঘটনাস্থল ও আশপাশে নৌকা ডুবির কোন আলামত কিংবা লাশের খোঁজ পায়নি।

অপরদিকে মিয়ানমারের বড়গজিরবিল থেকে বিভিন্ন সূত্রের দেয়া খবরে জানা গেছে, উক্ত নৌকা ডুবির ঘটনায় অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। ওই গ্রামের রোহিঙ্গারা নাফ নদীর মিয়ানমার জলসীমায় ব্যাপক অনুসন্ধান করে ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করে। নৌকাটির অধিকাংশ যাত্রী মিয়ানমারের বড়গজিরবিল ও রাইম্মাারবিল গ্রামের বাসিন্দা।

বড়গজিরবিল গ্রামের এক রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করে মোবাইলে জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন ওই গ্রাম পরিদর্শন করে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় রোহিঙ্গা নারী পুরুষ তাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চলমান সহিংসতা, গনহত্যা, ধর্ষনের কথা মানববন্ধন করে প্লেকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন। কফি আনান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই আবারও ওই গ্রামের শতাধিক পুরুষ রোহিঙ্গাকে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও শনিবার ও রোববার রাতে ওই ২টি গ্রামের ৫০-৬০টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এতে করে গৃহহারা নারী ও শিশু নাফ নদীর পাড়ে এসে আশ্রয় নেয়।

এদিকে রোববার রাতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে এই রোহিঙ্গারা নৌকায় করে বাংলাদেশের পালিয়ে আসার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশের কোন সূত্র এসব মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন