নানা সমস্যার অন্তরালে নিহিত নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
বাইশারী প্রতিনিধি:
পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া চাকঢালা এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় নানা সমস্যার অন্তহীন বেড়াজালে নিহিত রয়েছে। বিদ্যালয়টির বাহ্যিক অবস্থা দেখলে মনে হবে যে এই বিশাল আকৃতির প্রতিষ্ঠানটিতে কোন প্রকার সমস্যা নেই। তবে অাভ্যন্তরিণ খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায় বিদ্যালয়টির সমস্যার অন্ত নেই। সীমান্তের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯২ সালে টিনসেট বেড়ায় প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমান বিশাল আকৃতির পাকা ভবনে রূপান্তরিত হয়। মাঝখানে ২০০০ সালে আর্থিক দুর্বলতা, শিক্ষকদের বেতন ভাতা না থাকায় এবং আরো কিছু সমস্যার কারনে হঠাৎ বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এসইএস ডিপি প্রকল্প থেকে ভবন নির্মাণ হয় ২০১২ সালে। দীর্ঘ ১২ বছর পর বিদ্যালয়টি পুনরায় চালু হয়। বর্তমানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে। গেল ২০১৪-১৫ শিক্ষা বর্ষের জেএসসি পরীক্ষার ফলাফলে উপজেলায় ২য় স্থান অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে জানা যায়।
সরজমিনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পিটিএ কমিটি, শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৪শত জনের মত শিক্ষার্থী রয়েছে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একাডেমিক স্বীকৃতি পেলেও দশম শ্রেণি পর্যন্ত এখনো স্বীকৃতি পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। তবে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান।
পিটিএ কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মীর আহমদ বলেন, বিদ্যালয়টি আবারো বন্ধ হওয়ার উপক্রমের পথে। দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন ভাতা নেই। শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি থেকে সল্প ভাতা দেওয়া হয় শিক্ষকদের। তাও আবার ২ বছর পর্যন্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গত কিছুদিন আগে বিদ্যালয়টিকে টিকিয়ে রাখার জন্য ও অভিভাবকদের চিঠি দিয়ে সমাবেশ করার পর ৪ মাসের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয়। তারপরেও ১৮ মাস বাকি রয়েছে।
শিক্ষার্থী অভিভাবক মাওলানা শামশুল আলম বলেন, বিদ্যালয়ের পড়া লেখার মান ভাল কিন্তু ৬ জন নিয়মিত ও ২ জন খন্ডকালীন শিক্ষকের বেতন ভাতা দিতে না পেরে তারা নিজ সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত। এর পরেও পিটিএ কমিটি এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সমন্বয়ে বিদ্যালয়টি কোন রকম চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়টিতে পরিচালনা কমিটি থাকলেও তা এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তারপরেও তারা হাল ছাড়েন নি।
স্কুলটির প্রবীন শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, শুরু থেকে তিনি বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকতা করে আসছেন। স্কুলটি এখনো পর্যন্ত এমপিও ভুক্তির আওতায় আসে নি। শুধু মাত্র দশম শ্রেণিতে মানবিক বিভাগ চালু রয়েছে। অন্য বিভাগের শিক্ষক না থাকায় নতুন করে বিভাগ চালু করা যায়নি। তিনি অবিলম্বে এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্তির দাবি জানান।
এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বসার জন্য টেবির-বেঞ্চের অভাব, বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ সুবিধা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ফেন না থাকায় গরমের সমস্যা রয়েছে। সীমান্তের উচ্চ বিদ্যালয়টির সমস্যা সামাধানের জন্য পার্বত্য মন্ত্রনালয়, জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।