নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি নির্বাচন: হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর পক্ষে কৌশলে এগুচ্ছে ভোটাররা

n-alam-taslim-pic-copy

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:

আসন্ন ৩১ অক্টোবর ১নং নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের দিনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির উভয় প্রার্থীকে বৈধতা দিয়েছে নির্বাচন অফিস। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যাচাই বাছাই শেষে বৈধতা দেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার অরুন উদয় ত্রিপুরা।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে এখন বিরাজ করছে উৎসাহ আর উদ্দীপনা। নির্বাচনে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় এবং নৌকা-ধানের শীষ প্রতিক এক প্রকার নিশ্চিত থাকায় দুই প্রার্থীকে ঘিরেই জমে উঠছে সদর ইউনিয়ন। প্রার্থী ও তাদের কর্মীসমর্থকরা খাওয়া-দাওয়া ভুলে মাঠে ময়দানে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা ও সমর্থন আদায় করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও দলীয় লোকজন ও মুরব্বীদের নিয়ে প্রতিদিন তারা ছুটছেন মানুষের ঘরে ঘরে।

জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে এবার শুধুমাত্র দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি নুরুল আলম কোম্পানী। যার কারনে হেভিওয়েট এ দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের ধারনা এলাকার প্রতিটি ঘরে পরিচিত তসলিম ইকবাল চৌধুরী যদি এবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়, সরকারী দলের প্রার্থী হিসেবে সদর ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। কারণ তিনি বিচক্ষণ ও কৌশলী মানুষ। রাজনৈতিক দিক থেকে তার যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে। এছাড়াও ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকা এ নেতার কাজে-কর্মে কতটুকু সন্তুষ্ট জনগণ, তার পরীক্ষাও হবে নির্বাচনে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান মেম্বার জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের সম্প্রীতির বান্দরবানে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হবে এটি শতভাগ নিশ্চিত। তবে জনগণ উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ প্রাথীকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে আছে। এজন্য তিনি সকলকে একত্রিত হয়ে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর জন্য দোয়া কামনা করেন।

অপরদিকে বিএনপি মনে করছেন, ধনাঢ্য ও সদা হাসিখুশি সাদা মনের মানুষ হিসেবে এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত প্রাথী নুরুল আলম কোম্পানী। রাজনীতির মাঠে বিচক্ষণ ও কর্মঠ মানুষ হিসেবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। গত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের তিন প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তিনি মাত্র ১০৭ ভোটে হেরেছিলেন। এবার বিএনপি-জামায়াতের বিদ্রোহী কোন প্রার্থী না থাকায় শতভাগ বিজয়ের স্বপ্ন দেখছেন। এছাড়াও দির্ঘদিন ধরে দুটি ধারায় বিভক্ত থাকা বিএনপি এবার দলীয় প্রার্থীর জন্য একত্রিত হয়ে কোমর বেধে মাঠে নামায় প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: কামাল উদ্দিন জানান, উভয় প্রার্থীর মধ্যে এখনো সোর্হাদ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। এ সুন্দর পরিবেশ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত বজায় থাকুক এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে যাতে ভোটাররা নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে পারে এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সর্তক থাকতে হবে। যদি..অবাধ ও সুষ্ট নির্বাচন হয় বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষের প্রার্থী বিজয়ী হবে বলে মনে করেন তিনি।

সরেজমিনে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দলের চেয়ে ব্যাক্তি যোগ্যতা প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন এমন প্রার্থীকে তারা ভোট দিবেন। তবে কৌশলী এসব ভোটাররা সহজেই প্রকাশ্যে কোন প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দিচ্ছেন না। সামাজিক যোগাযোগ সাইটেও এসব ভোটার চিন্তা করেই লাইক কমেন্টে ক্লিক করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন