নাইক্ষ্যংছড়িতে রোহিঙ্গা আইয়ুবের উৎপাত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটানো তার নিয়মিত কাজ। বিজিবির হাতে যারা পুশব্যাক হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যায় তাদেরকে নানা কৌশলে আবারও নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রবেশ করান রোহিঙ্গা আইয়ুব।

অনুপ্রবেশকারীদের ছলে কৌশলে মালেশিয়া পাঠানোর কথা বলে দালালদের হাতে তুলে দেন। এবাবেই অবৈধভাবে টাকা আয় করছে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী পাড়ায় বসবাসকারী মিয়ানমারের বুচিদং এলাকার মৃত আবু তাহেরের ছেলে রোহিঙ্গা আইয়ুব (৩৪)। তার অপকর্মের কথা জানিয়েছেন, সদর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আবদুল জলিল ও আবুল ফজল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহাম্মদ আইয়ুব আনুমানিক ৭-৮ বছর আগে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রবেশ করেন। তার বাবা মিয়ানমারে মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। কিন্তু তার মা‘সহ অসংখ্যা আত্মীয় স্বজন এখনো মিয়ানমারের বুচিদং এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তবে আইয়ুব টাকার লোভে পড়ে আত্মীয় স্বজনদের বন্ধন ছেড়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে বসবাস করছেন অবৈধভাবে। রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মৌলভীর কাটা গ্রাম থেকে বিয়েও করেছেন কৌশলে।

স্থানীয়রা অভিযোগে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা আইয়ুব নানা ধরণের অপ-কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। সে ইয়াবা ব্যবসা, মালেশিয়ায় মানব পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায় জড়িত। আইয়ুব এখন কোটি টাকার মালিক। তার সাথে স্থানীয়রাও পেরে উঠতে পারেনা। মিয়ানমারের অসংখ্য নারী-পুরুষকে নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে টাকার বিনিময়ে এ দেশে প্রবেশ করিয়েছে। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মালেশিয়ায় পাচার করেছে।

একাধিক সূত্র মতে, মিয়ানমারের বুচিদং এলাকার ছব্বির আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর (২০), মৃত জাফরে ছেলে ইদ্রিস (২২), সিরাজ উদ্দিনের ছেলে তোহা (৩১), ছৈয়দ আমিনের ছেলে কামাল উদ্দিন (২৮) ও নূর হোছেনের ছেলে মোহাম্মদ জাবের (৩২)‘সহ শত শত রোহিঙ্গা নাগরিগকে প্রথমে মিয়ানমার থেকে নাইক্ষ্যংছড়িতে অনুপ্রবেশ ঘটানোর পর মালেশিয়ায় পাচার করেছে অবৈধভাবে। পাশাপাশি দালালের ভূমিকায় সে এখন স্থানীয়দেরকেও মালেশিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে যারা টাকা কম দিচ্ছে তাদেরকে আটক রেখে নানা উপায়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে দ্বিগুণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কক্সবাজার জেলার চলতি হালনাগাদ কার্যক্রমে রোহিঙ্গা আয়ুব কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে ভোটার হতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি টের পেয়ে যাওয়ায়, তা আর হয়ে উঠেনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আইয়ুবের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, তার বয়স ৩৪ । কিন্তু এখনো ভোটার হতে পারেনি। তবে চেষ্টায় আছেন। অবৈধ কর্মকান্ডের বিষয়গুলো সত্য নয় বলে দাবি করেন। এদিকে উপজেলার সচেতন মহল রোহিঙ্গা আইয়ুবের এসব অপকর্ম বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন