নাইক্ষ্যংছড়িতে নিষিদ্ধ সময়ে বাঁশ কেটে পাচারের অভিযোগে কয়েক হাজার বাঁশ জব্দ
নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
বাঁশের প্রজনন বৃদ্ধি ও চারা বাঁশ নিরাপদে বেড়ে উঠার জন্যে জুন-জুলাই-আগস্ট (৩ মাস) বন্ধের সময়ে বাঁশ কেটে পাচারকালে কয়েকহাজার বাঁশ ও মূল্যবান কাঠ জব্দ করেছে ১১ বিজিবি। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ টাকা।
বিজিবি সদস্যরা বুধবার (১৮ জুলাই)সকালে এ সব বাঁশ ও কাঠ জব্দ করেন চিকনছড়ি বনবিট কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জার নূরে আলমের দায়িত্বপূর্ণ বন এলাকা থেকেই। পাচারকারী দল কর্তৃক এ সব বাঁশ কেটে আনার সময় ১১ বিজিবির ছাগল খাইয়া বিওপি’র জোয়ানরা ঠাণ্ডাঝিরির মুরুংখাই বাঁশঘাট থেকে আটক করে।
১১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ারুল আজিম জানান, বাঁশ জব্দের সময় কোন কাগজ না থাকায় বিজিবি এ সব বাঁশ তাদের নিয়ন্ত্রনে আনে। এ সময় এসব বাঁশের কোন কাগজ বাঁশ ব্যবসায়ীরা দেখাতে পারে নি। তাই বাঁশগুলো জব্দ করা হয়েছে। আর বন্ধের সময় বাঁশ কাটার প্রশ্নই-তো আসে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাশ কাটা বন্ধ হলেও জুলাই মাসে প্রতিটি বাজারে বাঁশ বিক্রি হয়েছে দেদারছে। বুধবারের ঘটনাও তাদের ধারাবাহিকতা। বুধবার বিজিবি বাঁশ আটকের আগ মূহুর্তে বাঁকখালীর এ বাঁশঘাটে অন্তত ৫ হাজারের অধিক বাঁশ এই ঘাটে বাঁধাছিল।আর পাহাড়ে পাচারের অপেক্ষায় আছে আরও ১ লাখের উপরে। যা পাহাড়ে, ছড়ায়-ঝিরিতে মজুদ আছে। সুযোগ বুঝে রাতে বাঁকখালী নদী পথে রামুর বাঁশ বাজারে পাচার করা হবে ক্রমান্বয়ে।
তারা আরও জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি বনরেঞ্জ আওতাধিন একাধিক বনবিট থেকে কাটা গাছ-বাঁশ বিক্রির জন্যে হাট বসে প্রতি বৃহস্পতিবার। সে মতে এ হাটেও গাছ-বাঁশ বিক্রি হয়ে আসছে হরদম বর্তমানেও।
তারা জানান, বর্তমানে শতশত বাঁশ ও গাছ কাঠুরিয়া পুরো নাইক্ষ্যংছড়ির বিস্তৃর্ণ বনে বাঁশ-গাছ কাটছে বিরামহীনভাবে। যাদের কিছু অংশ কাঠ গিলে খাচ্ছে উপজেলায় নানা স্থানে স্থাপিত প্রায় ২০টির অধিক করাত কল। এখানে আরও আছে ৭টি ইটভাটাও। এভাবে এ বনের কাঠ ব্যবহারে নাইক্ষ্যংছড়ি, রামু, উখিয়া, ঈদগাঁও, কক্সবাজার ও খুটাখালীতে গড়ে উঠছে ৫ শতাধিক ফার্নিসারের দোকান-পাট। আর এভাবে বাঁশের বেলাতেও অনুরূপ ঘটনা ঘটে যাচ্ছে এ উপজেলায়।
স্থানীয়রা জানান, চিকনছড়ি বনবিট এলাকার সরকারি বেসরকারি সব ধরনের পাহাড় এখন বনদস্যূদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় এভাবে। এ বনে বনবিভাগ মুখে কুলূপ নিলেও বিজিবি যা করেন-তাতেই সার। বুধবারের ঘটনাও তারই অংশ বিশেষ। তাদের বক্তব্য বন্ধের সময় ১টি বাঁশ কাটতে শত চারা বাঁশ নষ্ট হয়, কাটা যায়। আর কাঠ-বাঁশ পাচারকারী দলের চলাচলে বাঁশে প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা নূরে আলম এ প্রতিবেদককে জানান, বিজিবি কতৃর্ক বাঁশ আটকের কথা শুনেছেন তিনি। তবে কতটি বাঁশ তারা ধরেছে সে মূর্হুতে বলতে পারেননি তিনি।