দেড় লাখ ঘনমিটার এলএনজি নিয়ে  ‘জাশাসিয়া, মহেশখালী উপকূলে

মহেশখালী প্রতিনিধি:

দেড় লাখ ঘনমিটার এলএনজি (তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস) নিয়ে জাশাসিয়া নামে একটি মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ)বঙ্গোপসাগরের মহেশখালী উপকূলে এসে পৌঁছেছে। শনিবার (০১ ডিসেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রে এসে পৌঁছায়।

বিষয়টি নিশ্চিত কর পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি সেল) রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা দেশে আসা এলএনজিবাহী অষ্টম জাহাজ। প্রায় দেড় লাখ ঘনমিটারের এলএনজি মজুদ রয়েছে ওই জাহাজটিতে।

এই চালান খালাসের পর আমদানি করা এলএনজি ঢাকায় সরবরাহ করা হবে। তাই মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রতিমাসে ৫টি মাদার ভ্যাসেলে করে এলএনজি আমদানিরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রতিমাসে দুই থেকে তিনটি এলএনজি জাহাজ আসছে দেশে।

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এক লাখ ৩৬ হাজার ঘনমিটার তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে এলএনজিবাহী প্রথম বিশেষায়িত জাহাজ ২৩ মার্চ কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি উপকূলে নোঙর করে। এটাই ছিল বাংলাদেশে আসা প্রথম এলএনজিবাহী জাহাজ। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় জাহাজ আগে আসেনি। এটি সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত জাহাজ।

বর্তমানে জাহাজটি মহেশখালী উপকূল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে অবস্থান করছে। আগামী ১৫ বছর জাহাজটি ভাসমান টার্মিনাল হিসেবে সাগরে অবস্থান করবে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজনী অবকাঠামো গড়ে তুলবে। এরপর পুরো প্রক্রিয়াটি সরকারের মালিকানায় চলে আসবে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে আমদানিকৃত এলএনজি ঢাকায় সরবরাহের জন্য মহেশখালী-আনোয়ারা ও আনোয়ারা-ফৌজদারহাট এ দুই ভাগে মোট ১২১ কিলোমিটারের দুটি পাইপলাইন নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছিল জ্বালানি বিভাগ। এর মধ্যে ৩০ সেন্টিমিটার ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ মহেশখালী-আনোয়ারা সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ এ বছরের মাঝা-মাঝিতে শেষ হয়েছে। এ লাইনের মাধ্যমে বর্তমানে চট্টগ্রামে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।

অন্যদিকে ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪২ সেন্টিমিটার ব্যাসের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট সঞ্চালন লাইনটির নির্মাণের কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এই পাইপলাইন দিয়ে ঢাকায় সরবরাহ করা হবে আমদানি করা বাকী ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এসব গ্যাস কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরাসরি সরবরাহ করা হবে।

আমদানি করা এলএনজি দিয়ে প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম এবং ঢাকার গ্যাসের চাহিদা পূরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মহেশখালী দ্বীপে নির্মিত এলএনজি টার্মিনালের মজুত ক্ষমতা বাড়লে এবং এলএনজি আমদানি বৃদ্ধি পেলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে এই গ্যাস।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন