দেশের প্রথম সাবমেরিন নৌ-ঘাঁটির জন্য জমি অধিগ্রহন সম্পন্ন: প্রকৃত ভুমি মালিকরা ক্ষতিপূরণের অর্থ না পাওয়ার আশংকা

পেকুয়া প্রতিনিধি:

দেশের একমাত্র সাব-মেরিন নৌ ঘাঁটি এখন হতে যাচ্ছে পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নে। প্রস্তাবিত সাব-মেরিন নৌ ঘাঁটি বাস্তবায়নের জন্য সম্ভব্যতা যাচাই করে এর নকশা চুড়ান্ত করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে নৌ-ঘাঁটির জন্য জমি অধিগ্রহন কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুরু হচ্ছে প্রকৃত জমির মালিকদের অধিগ্রহনকৃত জায়গার ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।  কিন্তু স্থানীয় একটি দালাল চক্রের কারণে জমির প্রকৃত মালিকরা ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার আশংকায় ভুগছেন।

জানা গেছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে ৪০০ একরেরও কিছু বেশি জমি বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানোর পর জমি অধিগ্রহন কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীকে আধুনিকায়ন ও তাদের সক্ষমতা বাড়াতে ১০ বছর ব্যাপী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বর্তমান সরকার সাব-মেরিন নৌ ঘাঁটি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার।

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি দালালচক্র জমির প্রকৃত মালিকদের বঞ্চিত করতে অপতৎপরতা শুরু করেছে। কক্সবাজারের একটি হোটেলে বসে এ দালালচক্র বর্তমান চেয়ারম্যানের সম্পূর্ন অগোচরে সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল মোস্তাফার সীল, স্বাক্ষর জাল করে অথবা তাকে ম্যানেজ করে ওয়ারিশ সনদসহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র পূর্বের তারিখ উল্ল্যেখ করে বানিয়ে দিচ্ছে জমির ভুয়া মালিকদের। যার কারণে জমির প্রকৃত মালিকগণ ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ার আশংকা করছেন।

ঐ এলাকার মাহামুদুল হক, সিরাজদৌল্লাহ চৌধুরী, আজিজদুল্লাহ চৌধুরী, হাজ্বি আকতার আহমদসহ আরো বেশ কয়েকজন ভোক্তভূগী জানান, মগনামা এলাকার মৃত আবদুর রহমানের পুত্র রোস্তম আলী, মগঘোনার সাইফুল ও কালোর পাড়ার রিপনসহ বেশ কয়েকজনের একটি প্রতারক চক্র কক্সবাজারস্থ হোটেল আল হেরায় অবস্থান নিয়ে জমির ভূয়া মালিকদের ওয়ারিশ সনদসহ আরো কিছু কাগজপত্র তারা বানিয়ে দিচ্ছেন টাকার বিনিময়ে। যার কারণে জমির প্রকৃত মালিকগন ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ার আশংকায় আছি। তারা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, বর্তমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প মগনামার নৌঘাটি স্থাপন। এরই মধ্যে যার জমি অধিগ্রহন শেষ হয়েছে। জমির প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণ এর টাকা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর থেকে কাগজপত্র দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে প্রকৃত মালিকের নায্য প্রাপ্য পাওয়া।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি আগের চেয়ারম্যানের সনদ দিয়ে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে আমার গোচরে এসেছে। তাছাড়া আমার ইউপি কার্যালয় থেকে কয়েকদফা কাগজপত্র যাচাই বাচাই করে ভূমির প্রকৃত মালিক বের করা হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে অনেক খতিয়ানের মালিক জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এ জমির মালিক হচ্ছে যারা ক্রয় করেছেন তারা। কিন্তু তাকে আঁড়াল করে বিক্রি করা ওই মালিকের নামে আবারো টাকা উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। এতে একটি দালালচক্র সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে। যার কারণে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ না নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সনদ নিয়ে কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিচ্ছে। আমার অনুরোধ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সঠিক মালিক যাতে টাকা পায় সে ব্যবস্থা করলে ভাল  হয়।

এ ব্যাপারে মগনামা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল মোস্তফা জানান, আমি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমান সময়ে আমার দস্তখত ও সীল জাল করলে কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না। তারপরেও কেউ যদি এ ধরণের কাজ করে থাকে তা অপরাধ। আমি এ বিষয়ে তথ্য প্রমাণ পেলে এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন