দু’ইউনিয়নে দেড় হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের ভোগান্তি

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় শাহারবিল ও পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের(পিড়িবি)বিদ্যুতের  লোডশেডিং’র পাশাপাশি লো-ভোল্টেজের কারণে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন দুই ইউনিয়নের প্রায় দু’সহস্রাধিক গ্রাহক। আর যেটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছেন তা লো-ভোল্টেজের কারণে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। দিনে বেশ কয়েক বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। বিদ্যুতের এ সমস্যা সংশ্লিষ্টদের জানানোর পরও কোন সমাধান না হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ২৫০কেভি করে তিনটি ট্রাস্পারমার মধ্যদিয়ে এ বিদ্যুৎ সংযোগ চালানো হচ্ছে।

চলতি মাসের শুরু থেকে উপজেলায় বিদ্যুৎ সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। যার কারণে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। লো-ভোল্টেজের ফলে মোটর পাম্প নির্ভর বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে চলছে পানির হাহাকার। ২২০ ওয়ার্ডের স্থলে বিদ্যুৎ থাকে মাত্র ৮০-১২০ ওয়ার্ড।

উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের বাটাখালী, নাপিত পাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, নোয়া পাড়া, মাইজঘোনা, উত্তর পাড়া, পশ্চিম পাড়া ও পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের শমসু মিয়ার বাজার, বুড়ির পাড়া, মাবিয়া বাপের পাড়া, ফজল রহমান পাড়ায় বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি দিনের অর্ধেকেরও বেশি সময় বিদ্যুত সরবরাহ থাকে না। দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকলেও সন্ধ্যার পর সরবরাহের পরপরই দেখানো হয় এক থেকে দেড় ঘন্টার লোডশেডিং।

এক ঘন্টার এ লোডশেডিং দু‘তিন ঘন্টায়ও শেষ হয়না বলেও অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের। কোন কারণ ছাড়াই ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে  গুরুত্বপূর্ণ কাজে ও বাসা-বাড়ির পানির মোটর ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে বিদ্যুতের জন্য বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বুড়ির পাড়া এলাকার বাসিন্দা আফলুল কাদের ও ব্যবসায়ী মো. শাহিনসহ অনেক গ্রাহক জানান, মাসের শুরু থেকেই বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সারাদিনে অর্ধেকের কম সময় বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ কম থাকায় রাইচ মিল, বাসা বাড়িতে কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, চার্জ লাইট, পানির মোটর ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে বিদ্যুৎ থাকুক আর না থাকুক কিন্তু গ্রাহকদের মধ্যে বিল প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগের কোন পরিবর্তন নেই। নিয়মিত বিদ্যুৎ থাকলে যে বিল পরিশোধ করতে হয়, না থাকলেও একই বিল পরিশোধ করতে হয়। অফিসে  মিটার রিডার নেই, ফলে গ্রাহকদের ওপর চলছে মনগড়া বিল ছাপিয়ে দেয়ার রীতি।

বাটাখালী এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান জানান, লো-ভোল্টেজের কারণে বাড়ির ফ্রিজে রাখা মাছ, মাংস ও বিভিন্ন তরিতরকারী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া খাবার ও ব্যবহারের জন্য মটর দিয়ে পানি তুলতে বড়ই সমস্যা হয়ে পড়েছে। এ ভাবে তো জীবনমান চলতে পারেনা।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ ছিদ্দিকী জানান, লোডশেডিং’র বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ হয় দোহাজারী সাবস্টেশন থেকে। লো-ভোল্টেজ সমস্যাটি নিরসনে আরও কয়েকটি বছর সময় লাগবে। বড় কেভি’র একটি সাবস্টেশনের কাজ চলছে। তা সম্পন্ন করতে আরও দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে।

দোহাজারীতে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা ৩৩হাজার ভোল্টেজ, কিন্তু তা পাচ্ছি ২৬হাজার ভোল্টেজ।তিনি আরও বলেন, সিস্টেমের অবস্থা খুবই খারাপ। লাইন আপডেট করতে সময়ের প্রয়োজন। দুরত্বও অনেক বেশি। প্রায় ৬০কিমি পথ অতিক্রম করে এ বিদ্যুৎ সংযোগে লাইন আসছে, তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে  লো-ভোল্টেজের সমস্যাটা সমাধান করার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন