দীঘিনালার মাইনীর নদীর চরে আগাম তরমুজ

Dighinala picture 26-02-2017 copy

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

দীঘিনালার দুর্গম জারুলছড়ি বেলতলী এলাকার মাইনী নদীর চরে আগাম তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তরমুজের আগাম ফলন হওয়ায় ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। তরমুজের আকারও হয়েছে বড় বড়। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন গিয়ে ক্ষেত থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তরমুজের আকার বড় ও ভালো দাম পাওয়ায় দুই ভাই নব জ্যোতি চাকমা (৩৭) ও তপন জ্যোতি চাকমা (৩২)খুব খুশি।

সরেজমিনে রবিবার উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের জারুলছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জারুলছড়ি এলাকার মাইনী নদীর পশ্চিম পাড়ে নুনছড়ি অংশে চরে তরমুজ খেতে কাজ করছিলেন নব জ্যোতি চাকমা ও তপন জ্যোতি চাকমা। কথা হয় তাদের সাথে, তারা জানান, ক্রেতারা খেত ও পার্শ্ববর্তী দোকান থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আকার ভেদে প্রতিটি তরমুজ ১শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যাচ্ছে। আগাম তরমুজের ভালো দর পেয়ে একদিকে খুশি চাষিরা অন্যদিকে খুশি ক্রেতারা।

এসময় নব জ্যোতি চাকমা ও তপন জ্যোতি চাকমা আরও জানান, তাদের বাড়ি নুনছড়ি সুব্রত কার্বারী পাড়া গ্রামে। গত বছর ২০ শতক পরিমাণ নদীর চরে তরমুজ চাষ করে ৬০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। তাই এ বছর দুই ভাই মিলে দুই হাজার টাকায় ৪০ শতক চর বর্গা নিয়ে তরমুজ খেত করেছেন। ৪০ শতক জমিতে তরমুজ লাগাতে খরচ হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মত। আশ্বীন মাসের শেষের দিকে তরমুজ লাগিয়েছিলেন। মাঘ মাসের শুরু থেকে খেত থেকে তরমুজ উত্তোলন শুরু করছেন।

এ পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার মত তরমুজ বিক্রি হয়েছে। দুই লাখ টাকার মত বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা কোন পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছে তরমুজ বিক্রি করছেন না। লোকজন খেত থেকেই এসেই তরমুজ নিয়ে যাচ্ছে।

তারা জানান, খেতে কোন শ্রমিক দিয়ে পরিচর্যা করেননি। তাদের দু’জনের খেতে সহযোগী হিসেবে ছিল নব জ্যোতির স্ত্রী স্বপ্না চাকমা ও তপন জ্যোতির স্ত্রী এপি চাকমা। দুজনের স্ত্রী জানান, স্বামীদের সাথে তরমুজ খেতে কাজ করতে পেরে এবং তরমুজে ভালো ফলন দেখে তারা নিজেরাও আনন্দিত।

খেত থেকে তরমুজ কিনতে আসা বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সমর বিজয় চাকমা ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য গগণ বিকাশ চাকমা বলেন, এ সময়ে তরমুজ তো আশা করা যায় না। তরমুজের খবর পেয়ে আমরা ৮ কিলোমিটার দূর থেকে তরমুজ কিনতে এসেছি। তরমুজের আকারও বড় ও খেতেও মিষ্টি। আমরা পাঁচটি মাঝারী আকারের তরমুজ কিনেছি দেড় হাজার টাকায়। দুই ভাইয়ের পরিশ্রম সফল হয়েছে।

বাবুছড়া ইউনিয়নের ধনপাতা কৃষি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুদত্ত চাকমা বলেন, নব জ্যোতি চাকমা ও তপন জ্যোতি চাকমার তরমুজ খেত আমি দেখেছি। তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শও দিয়েছি। আগাম তরমুজ ফলন খুব ভালো হয়েছে এবং তরমুজের আকারও বড়। স্বাভাবিকভাবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে তরমুজের ফলন হয়। কিন্তু দুই ভাইয়ের পরিশ্রমের কারণে তারা জানুয়ারির শুরুতেই তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন