থানছি-আলীকদম রিজার্ভ ফরেস্টে সেনা-বিজিবির সাঁড়াশি অভিযান চলছে
স্টাফ রির্পোটার:
বান্দরবানের সীমান্তবর্তী থানচি উপজেলার দুর্গম বড় মদক এলাকায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি’র সশস্ত্র সদস্যদের বিরুদ্ধে শনিবার চতুর্থ দিনের মতো সেনাবাহিনী ও বিজিবি কম্বিং অপারেশন অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি পরিত্যক্ত আস্তানা খুঁজে পায় যৌথ বাহিনী। আস্তানা থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ব্যবহার্য বেশ কিছু সামগ্রী ও গুলি উদ্ধারের তথ্য পাওয়া গেলেও বিজিবি তা অস্বীকার করেন।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিজিবির মদক ক্যাম্প থেকে ১৫ কিলোমিটার ভিতরে থানচি ও আলিকদম রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় শনিবার অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে কোন বিচ্ছন্নতাবাদীদের আটক করা যায়নি। তবে স্থানীয়দের সূত্র বলেছে, দূর থেকে যৌথবাহিনীকে দেখে রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সদস্যরা মিয়ানমার সীমান্তের দিখে পালিয়ে যায়।
এদিকে অভিযান পরিচালিত এলাকা দুর্গম পাহাড়ি গহীন অরণ্যে এলাকায় রাতের অন্ধকারে ও বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে অভিযান পরিচালনা দু:সহ ও ব্যহত হচ্ছে যৌথবাহিনীর। তারপরও সন্ত্রাসীদের নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছেন বিজিবি।
গত বুধবার বিকাল থেকে সেনাবাহিনী ও বিজিবি জওয়ানরা আরাকান আর্মি লুকিয়ে থাকতে পারে এমন জায়গাগুলোতে চিরুণী অভিযান শুরু করেন। ওই দিনই সকালে বিজিবির টহলদলের ওপর গুলি চালায় অস্ত্রধারীরা। এসময় উভয় পক্ষের চার ঘণ্টা ব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
বান্দরবান বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল. ওয়ালিওয়র রহমান জানিয়েছেন, বিপুল সংখ্যক বিজিবি ও সেনা সদস্যরা কম্বিং অপারেশন অব্যাহত রেখেছে। সাম্ভাব্য স্থানগুলোতে সন্ত্রাসীদের ধরতে ও নির্মূল করতে যৌথ অভিযান পরিচালত হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, থানচির মদক বিজিবির ক্যাম্প থেকে ১৫ কিলোমিটার ভিতরে থানচি ও আলিকদম রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় শনিবার অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ পর্যন্ত কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী কাওকে আটক বা কোন অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি বলে তিনি জানান।
বড়মদক ক্যাম্প থেকে ৪/৫ কিলোমিটার দক্ষিণে যাত্রং পাড়া নামক স্থানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মিদের একটি পরিত্যক্ত আস্তানার সন্ধান ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর ব্যবহার্য বেশ কিছু সামগ্রী উদ্ধার বিষয় অস্বীকার করেন বিজিবি সেক্টর কমান্ডার।
বিজিবি সূত্র আরো জানিয়েছেন, অভিযানের পর থেকে যৌথবাহিনী বিভিন্ন পাড়ায় অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাস দমন ও জনগণের নিরাপত্তা এবং জনগণের উৎকণ্ঠা দূর করতে কাজ করে যাচ্ছেন ।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন, থানছির তিন্দু, রেমাক্রী আলীকদমের চৈক্ষং ইউনিয়ন ও থানছি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং জনপ্রতিনিধিদের মদক ক্যাম্পে ডাকা হয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা এলাকাবাসীর উৎকণ্ঠা দূর করতে ও সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিয়ে বিজিবিকে সহায়তা করতে পরামর্শ দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন পাড়া প্রধান বা কার্বারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সন্ত্রাসী নির্মূলে স্থানীয়দের সহযোগিতা চান।
স্থানীয় লোকজন জানায়, যৌথ অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মিসহ অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদীর সদস্যরা সরে গিয়ে মিয়ানমার সীমান্তের দিকে অগ্রসর হয়েছে।