থানচিতে সাংগু নদের বালুর খেকোদের বেপরোয়া

থানচি প্রতিনিধি:

নিরাপত্তা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে থানচিতে সাংগু নদের তীরবর্তী সাংগু সেতু ও উপজেলা হাসপাতালের পশ্চিম পারে ৩-৪টি পয়েন্টে প্রশাসনে নাকের ডকায় বালির উত্তোলন অব্যাহত। পরিবেশ ভারসাম্য নদের নাব্যতা হারিয়ে হুমকির মূখে পড়েছে সরকারি স্থাপনা উপর।

গত জানুয়ারি থেকে মার্চ ১৮ পর্যন্ত তিন মাসব্যাপী অবাধে বালি উত্তোলনে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে কোন প্রকার যাচাই-বাচাই ও ঝুঁকি নিরুপণ করা হয়নি। ফলে শঙ্খ নদীর দুই ধারে নাব্যতা হারিয়ে নৌযান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে।

সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ের সাংগু সেতু ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনটিও মারাত্বক হুমকির মূখে পড়েছে। উপজেলার একাধিক সিন্ডিকেট এ অবৈধ পন্থা বালির উত্তোলন করলে ও উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা নিয়ে এলাকার চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে ।

গত ২২মার্চ বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহাঙ্গির আলম সাংবাদিকদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বললে ও আদৌ কেন পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। 

সরেজমিনে গেলে থানচি উপজেলা এক মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঠিক পশ্চিমে সাংগু নদের বালুর চরে বালি উত্তোলন করেই চলছে। প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিকবার ডাম্পার ট্রাক যোগে বালু উত্তোলন করে থানচিতে বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন কাজে ব্যবহারের নিয়ে যাচ্ছেন।

বালুর পরিবহনের থাকা ট্রাক ড্রাইভার (লট-নং ১০৩ ও ৭২) জাকের ও জিয়া ড্রাইভার বলেন, ১৬ ইসিবি মসজিদের ইমাম হুজুর হাবিব সাহেব অনুমতিক্রমে এখান থেকে বালুর উত্তোলন করছি। আমাদের হাতে কোন কাগজ পত্র নাই বলে জানান। ট্রাক চালক আরও বলেন ৫-৬টি ট্রাক করে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ বার লোড-আনলোড করতে পতিঘনফুট ৩০ টাকা হারে পান তারা।

যোগাযোগ করা হলে ইমাম হাবিবুর রহমান জানান, থানচি বড় মদক রাস্তায় বক্সকার্টিং ও সেন প্লেন কাজের আমাকে এক্সভেটর ২টা দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য এন এন বিল্ডার্স লি. এর ইজ্ঞনিয়ার ফারুক ও রাজু নির্দেশক্রমে কাজ করছি । তিনি আরও জানান, সরকারের উন্নয়ন কাজের রাজস্ব ও অনুমতি প্রয়োজন মনে করেন না ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৬ইসিবি হতে থানচি বড় মদক রাস্তায় ০ কিলো হতে ৫ কিলো পর্যন্ত বক্স কার্টিং, সেন প্লেয়িন,সাব ডেস, ইটের খোয়া ও কার্পেটিং কাজ বাস্তবায়নের জন্য এন এন বিল্ডার্স লিঃকে কাজের আদেশ ( ওয়ার্ক অর্ডার) দেন । এ আদেশ মূলে এনএন বিল্ডার্স লি. এর নিয়োজিত সাব ইজ্ঞিনিয়ার ফারুক ও রাজু ১৬ ইসিবি ইমামকে দিয়ে বালু উত্তোলন করে সরবরাহ জন্য মৌখিক আদেশ দিয়েছে ।

যোগাযোগ করা হলে ইজ্ঞিনিয়ার ফারুক বলেন, সরকারি কাজেই কোন প্রকার রাজস্ব দেয়া লাগেনা, একটি পরিবেশ ব্যাহত হলে অন্য একটি সংরক্ষণ হচ্ছে। তবে আমি সন্ধ্যা আপনাদের সাথে দেখ করব। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, ৫ কিলোমিটার বক্সকাটিং, সেন প্লেয়িন ও কার্পেটিং কাজের ৫ লক্ষাধিক ঘনফুট বালির ও আড়াই লক্ষাধিক ঘনফুট স্থানীয় পাথরের খোওয়া প্রয়োজন হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজার জেলা রামু উপজেলা সদরের মসজিদের ইমাম হাবিবুর রহমান তিনি ১৬ ইসিবি সেনা ক্যাম্পের মসজিদের ইমাম ও সরকারি চাকুরী করেন। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নদের তীরবর্তী থেকে গত তিন মাস ধরে বালুর উত্তোলন করে আসছে ।

এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বালির উত্তোলনের আগেই থানচি থানা, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের যথাযথ সম্মানে সহিত ম্যানেজ করছি। যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গির আলম জানান,সরকারি ভাবে কোন প্রকার বালুর মহাল সংরক্ষণ নেই।

থাকলেও সাংগু নদের তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ প্রশাসনের মালিকানা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণ অবৈধ। শীগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন