থানচিতে শিক্ষকদের বেতন, শ্রেণীর কক্ষ সম্প্রসারণ ও শিক্ষক নিয়োগের  দাবী

img_0977-copy

থানছি প্রতিনিধি:

বান্দরবানের থানছিতে দূর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের এক মাত্র  উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেনার্দি ত্রিপুরা, সহকারি শিক্ষক পুচিংমং মারমা দাবী করেন, তাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৫জন শিক্ষকের ৮মাসের বেতন প্রায় ৫ লক্ষ ৮৪ হাজার ১৫০ টাকা তারা পাননি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শ্রেণীর কক্ষ সম্প্রসারণ, নতুন তিনজন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ নানা সমস্যা  বিষয়ের তুলে ধরেন।

শুক্রবার সকাল ১০টায়  রেমাক্রী উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণীর কক্ষে  ত্রিমাসিক সভার পরিচালনা কমিটি, আমন্ত্রীত অতিথি ও অভিবাবকদের নিকট এসব দাবী তুলে করেন।

উচ্চ বিদ্যালয়ের নানা সমস্যা নিয়ে ত্রৈমাসিক সভায় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মালিরাং ত্রিপুরা সভাপতিত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে  ২ লক্ষ টাকা অনুদান ও মহিলা ভাইস্ চেয়ারম্যান বকুলি মারমা নিজস্ব তহবিল থেকে মাসের এক বস্তা চাউল অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা ।

সভা সভাপতি মালিরাং ত্রিপুরা  বিদ্যালয়ের সকল সমস্যা সমাধনে উপায় হিসেবে উপস্থিত সকলকে জানান, পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ইতিমধ্যে ২৫ লক্ষ ব্যয়ের স্কুল ভবন  ও ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ের শিক্ষার্থীদের হোষ্টেল ভবন নির্মানে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে নভেম্বর মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন কাজ শুরু করবেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর  পরিচালনা পর্ষদ সভায় সিন্ধান্ত  অনুসারে বিদ্যালয় পরিচালনা ও শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন  মাননীয় পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী   ২ লক্ষ, উপজেলা চেয়ারম্যান ২ লক্ষ, রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান ১ লক্ষ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ৫০ হাজার, তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ১ লক্ষ ও পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী’র প্রতিনিধি ৫০ হাজার টাকা মোট ৭ লক্ষ টাকা আগামী ডিসেম্বর সরকারিভাবে এলাকার উন্নয়নের জন্য টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এলজিএসপি-২  বরাদ্ধ পৌঁছলে পেয়ে যাবেন। তখন সকল সমস্যা ক্রমন্বয়ের সমাধান হবে। প্রতি বছর এমপি কোটায় বরাদ্ধ হলে তা থেকে মন্ত্রীর প্রতিনিধিকে  মংথোয়াইম্যা মারমা (রনি) ঐসব চাহিদা মিঠানোর কথা  সভায় উল্লেখ করা হয়।

জানা যায় , থানছি উপজেলা পরিষদের উদ্যোগের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১৪ সালে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করেন। ২০১৫ সালে   পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির নির্দেশক্রমে উপজেলা চেয়ারম্যান  ক্যহ্লাচিং মারমা তৎকালীণ ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাং ত্রিপুরা ও স্থানীয়দের উদ্যোগের বিদ্যালয়ের ৫জন শিক্ষক ও ১জন দপ্তরী নিয়োগ করে বিদ্যালয়টি ৮শ শ্রেণীর পর্যন্ত চালু করা হয়। ওই সালে ৮ম শ্রেনীর কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হলে ২০১৬ সালে উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে  পরিনত করেন। কিন্তু অদ্যাবধি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি মিলেনি বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের ৩ কক্ষ বিশিষ্ট কক্ষে থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতা একটি কক্ষকে অর্ধেক পার্টিশন করে অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে । সর্বমোট ৫৬ জন শিক্ষার্থী ও ৯ম শ্রেনীর জন্য শ্রেনীর কক্ষ না থাকায় শিক্ষকদের অফিস রুমে ক্লাস পরিচালনা করে আসছে বলে সভার অতিথি ও শিক্ষকদের বক্তব্যে জানা যায় ।

সভায় অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বকুলি মারমা, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব ও তিন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা, ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উচমং মারমা, রেমাক্রী ইউনিয়নের ৪.৫.৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মেম্বার মেপ্রু মারমা, ৪নং ওয়ার্ডে সদস্য লাইথাং খুমী প্রমূখ ।

সভায় অর্ধশতাধিক অভিবাবকরা স্বতষ্ফুর্ত অংশগ্রহন করেন এবং আগামী ১৮ ই নভেম্বর ২০১৬ইং তারিখ শুক্রবার সকাল ১০টায় ইউনিয়নের সকল জনসাধারন, হেডম্যান, কারবারী,  জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের সিন্ধান্ত গ্রহনে সম্মেলন করার প্রস্তাবও গৃহীত হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন