Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

থানছিতে জংলী আলু খেয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ

343

থানছি প্রতিনিধি:

দিনে এক বেলা ভাত আর রাতে জঙ্গলের আলু খেয়ে জীবন যুদ্ধ ময়দানে সংগ্রাম করে যাচ্ছে থানচির তিন্দু অঞ্চলের বাসিন্দারা। সকালে ঘুম থেকে ওঠে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে জঙ্গলের আলুর সন্ধানে নেমে পড়ে সারাটা দিনের জন্য। ভিজিডি কার্ড থাকলেও ৫ মাস যাবৎ তাতে কিছুই পাওয়া যায়নি আর ভিজিএফও পাওয়া যায়নি বললেন বান্দরবানে থানছি উপজেলা ২নং তিন্দু ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ডে দুঃলা খিয়ান (৫৫), নলিরাং ত্রিপুরা (৪০), বিসম্ভ ত্রিপুরা (৪৮)সহ অনেকে। তাদের সাথে থানচি বাজারে কথা বলার সময় এই অভিযোগ করেন।

তারা আরো বলেন, দাতা সংস্থা ইউএনডিপি-এর কমিউনিটি উন্নয়ন খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের উপকার পাওয়া যায়নি। কমিউনিটি সভাপতি/সম্পাদক ও ইউএনডিপি সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের আলোর মুখ দেখার সুযোগ দেননি অভিযোগ করে বললেন তারা। অপরদিকে ৪ থেকে ৫ মাস যাবৎকাল পর্যন্ত ভিজিডি কার্ডধারীরাও চাউল পায়নি। খাদ্য অভাবে কেউ মারা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, এই পর্যন্ত কোন লোক মারা যায়নি ।

কি কারণে খাদ্য সংকট প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, গত ২০১৫ সালে ভারী ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ধান কাটা সময় অধিকাংশ ধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যায়। খাদ্য সংকটে কত পরিবার হতে পারে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, তিন্দু ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে প্রায় ৩শত পরিবার এই সমস্যায় আছেন। অপর দিকে রেমাক্রী ইউনিয়নের ১, ২, ৬ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৩শত পরিবার মতো হতে পারে।

সঠিক কত পরিবারে সংকট হতে পারে প্রশ্ন করা হলে দুঃলা খিয়ান ও নলিরাং ত্রিপুরা জানান, অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ঘর বাড়ী ছেড়ে বান্দরবান সদরে অবস্থান করার ফলে তারা যদি তালিকা না করে তাহলে আমাদের কি করা আছে।

গত ২৬ এপ্রিল থানছি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সামনে গোল ঘরে সরকারি দুর্নীতি বিরোধী কর্মকাণ্ডে, উপজেলা উন্নয়ন ভাবনা, চোরাচালান প্রতিরোধ ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সর্ম্পকে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা, আওয়ামী লীগের সভাপতি রনি মারমা, বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মংশ্রেয় মারমা, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা, মুইশৈথুই মারমা প্রমূখ উপস্থিত থেকে থানচি উপজেলাব্যাপী পাহাড়ে খাদ্য সংকটে চলছে। খাদ্যাভাবে যে কোন মুহুর্তে মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।  তাই জরুরী অবস্থা মোকাবেলায় সকল শ্রেণীর লোকে সহযোগিতা ও জেলা প্রশাসনে বরাদ্দ দেয়ার আবেদন জানান।

সভায় জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশ দিয়েছেলেন কত পরিবার খাদ্য সংকটে আছে তার তালিকা জমা দেয়ার জন্য বলেছিলেন। অদ্যবধি প্রশাসনের হাতে তালিকা যায়নি বালে জানা গেছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস সহকারী ইমরান হোসাইন জানান, গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি ২ মাস সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে ভিজিডি বিতরণে জন্য সংশ্লিষ্ট খাদ্য গুদামের ডিও ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। মার্চ, এপ্রিল ও মে এই ৩ মাসের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে সচিবের নিকট একইভাবে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু জেলা সদরে কাজ থাকায় বিতরণে খোঁজ খবর নেয়া হয়নি। অপর দিকে মাস্টার রোল ও জমা দেয়নি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গত ২৬শে এপ্রিল মতবিনিময় সভা শেষে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলে জরুরী ভিক্তিতে উপজেলা ৪টি ইউনিয়নের ৮শত পরিবারকে ২০ কেজি করে মোট ১৬ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দকৃত চালগুলো মে মাসের ২৩ তারিখ মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানিয়েছেন।

তবে বিতরণে সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ছিলাম না তবে আমরা প্রতিনিধি ছিল।

যোগাযোগ করা হলে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা বলেন, আমার ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে অধিকাংশ পরিবার খাদ্য সংকটে রয়েছে। জঙ্গলে আলু খেয়ে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফোনে বলেছি। তবে ভিজিএফ বিতরণ করা হয়েছে। আর এ বিষয়ে আমার কোন ধারণা নেই। আমি দায়িত্ব বুঝে নিলে সব কিছু বলতে পারবো।

রেমাক্রী ইউনিয়নে ১, ২, ৬ ও ৯ নং ওয়ার্ডে প্রায় ৩শত পরিবারের গত মার্চ মাস থেকে খাদ্য সংকটের মধ্যে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে রেমাক্রী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মালিরাং ত্রিপুরা জানান। ভিজিএফ, ভিজিডি বরাদ্দ ও বিতরণে তদারকি জানার জন্য পিআইও মোহাম্মদ আলমগীরকে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বান্দরবান অফিসের অফিস সহকারী মোফাজ্জল হোসাইন জানান, ‘আমি মাসব্যাপী বাড়িতে আছি আমার বলার কিছু নেই’। পিআইও নম্বর দেয়ার জন্য বললেও মুঠো ফোন নম্বর দিতে রাজী হয়নি তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন