Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

ত্রাণ বিক্রি করছে রোহিঙ্গারা

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা ত্রাণ সংগ্রহের পর সেগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা এসব ত্রাণ কিনে তা খোলা বাজার এবং গ্রামের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করেছেন। নগদ টাকা নেই-এই অজুহাতে রোহিঙ্গারা চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১২টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিনই লাখ টাকার ত্রাণ ও অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ক্যাম্পেই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ। এসব ক্যাম্পে ত্রাণের কারণে ঘুমানোর মতো জায়গাও নেই। তবে কিছু রোহিঙ্গার অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পায়নি তারা। এদিকে ত্রাণ বিতরণের কাজে যুক্ত কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি গৃহনির্মাণ সামগ্রী, কম্বল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে।

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২নং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আবুল কালাম জানান, বাংলাদেশে আসার পর থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ পেয়েছেন। মিয়ানমারে যে অভাব ছিল তা এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নেই। প্রতি সপ্তাহেই ত্রাণ পাচ্ছেন। তার ছোট ঘরে এত ত্রাণ রাখার জায়গা নেই। তাই ত্রাণ বিক্রি করে কিছু নগদ কিছু টাকা পেলেই স্বস্তি।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লম্বাশিয়া বস্তির শফিউল আলম ও মিনা আরা বেগম জানান, পরিবারের সদস্য সংখ্যা খুবই কম। তাই এতো চাল, ডাল ও তেল নিয়ে কী করবেন। এজন্য স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। হাতে কিছু নগদ টাকা থাকলেও আর কোনও ভয় থাকে না। চার-পাঁচ জনের পরিবার ১৫-২০ কেজির মতো চাল ত্রাণ হিসেবে প্রতিবার পান বলেও জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগদ টাকার জন্য দেশি-বিদেশি সাহায্য সংস্থা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেওয়া বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছে রোহিঙ্গারা। বাজার থাকা দামের চেয়ে অর্ধেক দামে এসব সামগ্রী বিক্রি করছে তারা। আর অল্পমূল্যে কেনা এসব ত্রাণ সামগ্রী কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ত্রাণ কিনতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক কয়েকটি সিন্ডিকেটও গড়ে উঠেছে এরই মধ্যে।

কুতুপালং, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে এক কেজি চালের দাম ৫০-৬০ টাকা। সেখানে রোহিঙ্গারা ত্রাণের চাল বিক্রি করছে মাত্র ৩২ টাকা কেজি দরে। ৬০ টাকা কেজি দরে চিনি কিনে রোহিঙ্গাদের দেওয়া হচ্ছে। আরা রোহিঙ্গারা সেই চিনি বিক্রি করছে মাত্র ৩০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি ডালের দাম ১২০ টাকা। সেখানে রোহিঙ্গারা বিক্রি করছে ৭০ টাকায়। ১২০ টাকা লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি করছে মাত্র ৬০ টাকায়। এছাড়া ৫০০ গ্রাম ডানো দুধ বিক্রি করছে ১০০ টাকায়। চিড়া বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর রোহিঙ্গারা বিক্রি করছে ৩০ টাকা কেজি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫-৭ জন সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে সপ্তাহে দুই বার ত্রাণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১০-১৫ কেজি চাল, ২-৩ কেজি ডাল ও ২-৩ লিটার তেল দেওয়া হয়। এ হিসাব অনুযায়ী, তারা সপ্তাহে ২০-৩০ কেজি চাল, ৪-৬ কেজি ডাল ও ৪-৬ লিটার তেল পান।

মিয়ানমারের ঢেঁকিবুনিয়ার আমান উল্লাহ বলেন, ‘আমার বাড়িতে অনেক ত্রাণ আছে। এখন টাকার প্রয়োজন তাই ত্রাণ বিক্রি করে দিচ্ছি।’

কুতুপালং বাজারে চাল বিক্রি করতে আসা রোহিঙ্গা মৌলানা কেফায়ত উল্লাহ বলেন,  ‘গত ২০ দিনে বাসায় পাঁচ বস্তা চাল জমা হয়েছে। এত চাল আমাদের লাগবে না। প্রতিদিন চাল পাচ্ছি। তাই টাকার প্রয়োজনে দুই বস্তা চাল ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিয়েছি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশে মানুষ মানবিকতাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম দিকে যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণ হওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ওই সময় কেউ ত্রাণ পেয়েছেন, আবার কেউ পাননি। এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ত্রাণ বিতরণ হওয়ায় এ সমস্যা কেটে গেছে। কারণ, সরকারি-বেসরকারি যেসব ত্রাণ এখন রোহিঙ্গাদের জন্য আসছে সব ত্রাণ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে সংরক্ষিত অস্থায়ী গুদামে জমা রাখা হচ্ছে। এরপরও রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিক্রির বিষয়টি মাথায় রেখে আগামীতে খতিয়ে দেখা হবে।’

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন