Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

তিতলির প্রভাবে নাইক্ষ্যংছড়িতে কয়েক কোটি টাকার ফসল নষ্ট

 

বাইশারী প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে টানা ৭ দিনের বর্ষণে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে আমন ফসল, রবি শস্য ও রাবার বাগানের উৎপাদন বন্ধ থাকায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তলিয়ে গেছে ফসলি জমির পাকা ও কাঁচা ধান। অতি বর্ষণে মারা যাচ্ছে রবি শস্যের গাছগাছালি ও চারা বীজ। বন্ধ রয়েছে রাবার শিল্প নগরী খ্যাত বাইশারীর কয়েক হাজার একর রাবার বাগানের উৎপাদন। পাশাপাশি উপজেলার দৌছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও ঘুমধুমের রাবার বাগান গুলোও অতি বৃষ্টির কারণে বন্ধ রয়েছে।মূলত বৃষ্টি হলেই গাছ না শুকানো পর্যন্ত রাবার গাছ থেকে কষ আহরণ/উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে শ্রমিকেরা বাগানের কষ আহরণ থেকে বিরত রয়েছে।

পার্বত্য বান্দরবানের বাইশারীতে রয়েছে অন্তত ১৫ হাজারেরও অধিক রাবার বাগান। হাজারের অধিক রয়েছে বাগানের শ্রমিক। যারা রাবার বাগানে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

পিএইচপি রাবার বাগানের হিসাব রক্ষক মো. ইউনুছ জানান, ৭ দিনের টানা বর্ষণে বাগানের উৎপাদন বন্ধ থাকায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নাজমা খাতুন রাবার বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক মো. আল আমিন জানান, অতি বৃষ্টির কারণে একদিকে কষ আহরণ বন্ধ, অন্যদিকে মাটি নরম হয়ে গাছ উপড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় তিনি শংকিত। তার বাগানেও বর্তমানে উৎপাদন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের আগামী মাসের বেতন ভাতা নিয়ে হিমশিম খেলে হবে বলে তিনি জানান।

অপরদিকে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে পাকা ধান ও কাঁচা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি শীত মৌসুমের আগাম সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে হয়েছে স্থানীয় কৃষকেরা জানান।

দৌছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক মো. কালু মিয়া জানান, শীত মৌসুমকে সামনে রেখে নদীর পাড় ও চরে এবং সমতল ভূমিতে শষা, মূলা, বড়বডি, বেগুন ও ঢেঁড়স সহ নানা জাতের সবজি আবাদ করছিল। বৃষ্টির আগে কিছু ফসল বাজারে বিক্রি করলেও এখন তার ক্ষেতের অধিকাংশ নষ্ট হওয়ার পথে।

সরজমিনে পাঁচ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও একাধিক কৃষক এবং খেটে খাওয়া মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, টানা বর্ষণে আমন ফসল, আগাম শীতকালীন সবজি ক্ষেত, রাবার উৎপাদন বন্ধ ও দিনমজুরেরা এখন অসহায় পড়েছে। পুরো উপজেলায়  প্রতিদিনে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায়।

বাইশারী ইউনিয়নের বাসিন্দা জরিনা খাতুন জানান, সহায় সম্বল যা ছিল, তা দিয়ে এক একর জমিতে আমন ফসলের চাষ করেছিলেন। কিছু ধান পাকলেও বাকী ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সে এখন অসহায়।

সবজি চাষী আবুল শামা জানান, প্রতি মৌসুমে তিনি কাকরুল, তিতকরল, বেগুন, ঢেঁড়স, বড়বডি সহ নানা জাতের সবজি চাষ করে থাকেন। টানা বর্ষণে অধিকাংশ গাছ এখন মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া দিন মজুর আবুল হোসেন জানান, টানাবর্ষণে ক্ষেত খামারের কাজও এখন পাচ্ছিনা। দৈনন্দিন কাজ না পেলে, তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

ইউপি সদস্য আনোয়ার সাদেক বলেন, টানা বর্ষণে তার এলাকায় বিভিন্ন গ্রামীন সড়ক কাঁদা পানিতে ভরে গেছে। পাশাপাশি শীত মৌসুমের আগাম সবজি ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া তিনি তার এলাকার বিভিন্ন সড়কের করুন দশার চিত্রও এই প্রতিবেদকের নিকট তুলে ধরেন।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় তিতলীর প্রভাবে টানা বর্ষণে রাবার শিল্প নগরী বাইশারীর রাবার উৎপাদন বন্ধ থাকায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাই তিনিও শঙ্কিত।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে ১ শত একর আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে এবং রাবার বাগান, চা বাগান ও শীতকালীন আগাম সবজির আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অতি বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় তিতলীর প্রভাবের বিষয়টি ইউনিয়নের সকল জনসাধারণকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

এই প্রতিবেদন তৈরি হওয়া পর্যন্ত সেখানে থেকে থেমে বৃষ্টি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন