Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

টেকনাফ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা

rohinga_myanamar_bu-1-copy

টেকনাফ প্রতিনিধি:

টেকনাফ সীমান্তজুড়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলছে ব্যবসা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্যবসায়িক মনোভাবের মানুষেরা দিন দিন আরো বেশী সক্রিয় হয়ে উঠছে। অনুপ্রবেশে সহায়তাকারী দালালরা এবারে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে ‘রোহিঙ্গা ব্যবসা’ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দিয়ে ওপার থেকে কৌশলে ইয়াবাও নিয়ে আসছেন বলে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সুযোগের সৎ ব্যবহারে দালালদের অনেকে মাসের ব্যবধানে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক বনে গেছে।

এদিকে প্রশাসনিক নজরদারীর কারণে ২-১দিন অনুপ্রবেশ কিছুটা কমলেও ফের লাভজনক আদমপাচার ব্যবসা আবারো চলছে। হোয়াইক্যং পুলিশ কাঞ্জরপাড়া ষ্টেশন থেকে স্থানীয় কবির আহমদের পুত্র রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহায়তাকারী দালাল সেলিম(৩০)কে আটক করেছেন। অভিজ্ঞ মহল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনপ্রতিনিধি-স্থানীয়দের অসযোগিতা এবং মাদক ব্যবসায়ীদের কৌশলগত থাবার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন। একারণেই আদমঘাট নিয়ন্ত্রণকারী-অনুপ্রবেশে সহায়তাকারী চক্র খুঁজে বের করা আজ সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। অনুপ্রবেশস্থ চিহ্নিত পয়েন্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের সমন্বয়ে গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে ‘রোহিঙ্গা ব্যবসায়’ জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, টেকনাফের আদমঘাট সংশ্লিষ্ট এলাকার নৌকার মালিকেরা জেলেদের দিয়ে রাতের আঁধারে রোহিঙ্গাদের এপারে নিয়ে আসছে। এ সময় ঘাট পারাপারের দালালরা যে যা পাচ্ছে ওপার থেকে নিরবে তাই নিয়ে আসছে। নির্যাতিত অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা সীমান্তে প্রবেশের বদৌলতে বিভিন্ন স্তরে টাকা-পয়সা, মূল্যবান জিনিসপত্র, গয়নাপাতি দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না। এসব রোহিঙ্গারা ভয়ে মানুষ নামের জানোয়ারদের কিছুই বলতে পারছেন না।

স্থানীয়রা জানায়, দালালরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাণিজ্যের আঁড়ালে অনেক কিছু করেই যাচ্ছে। সীমান্তের একাধিক গ্রাম পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায়, প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে ভোর রাত পর্যন্ত হ্নীলা-হোয়াইক্যংয়ের বেশ কিছু এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। মিয়ানমারের নাগাকুরা, ক্যাংবারাং, ঢেউবনিয়া, কুইরখালী, শিলখালী, কুয়াইনছি মং, রাইম্যবিল ও গউজিবিল এলাকার বেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এবং শিশুরা হ্নীলা নাটমুরাপাড়ার জালিয়াপাড়া, দক্ষিণ ফুলেরডেইল, পূর্ব ফুলেরডেইল, স্লুইচপাড়া, হোয়াব্রাং, মৌলভীবাজার, উত্তর দমদমিয়া, জাদীমুরা, হোয়াইক্যংয়ের ঝিমংখালী, নয়াপাড়া, উলুবনিয়া, মিজ্জীছড়া, খারাইগ্যাঘোনা এবং কাঞ্জরপাড়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে দালাদের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ করেছে। এবারে আদমাঘাট নিয়ন্ত্রণকারী দালালরা বুদ্ধিমত্তায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে স্থানীয় জেলেদের ব্যবহার করে আসছেই। অল্প সময়ে অধিক মুনাফার আশায় জেলেরাও রাতের বেলায় ওপার থেকে রোহিঙ্গা নিয়ে আসতে রীতিমত মুখিয়ে থাকে।

উল্লেখ্য, বিগত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১টি ব্যাটলিয়ান সদর ও ৪টি সীমান্ত চৌকি সহ ৫ পয়েন্টে একযোগে সন্ত্রাসী হামলার ফলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী নিহত, অস্ত্র ও বুলেট লুটের ঘটনার জের ধরে সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গা মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুদের উপর হামলা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং নির্বিচারে খুন-গুমের ফলে বাঁচার তাগিদে আতঙ্কিত হয়ে উঠে রোহিঙ্গা মুসলিমরা। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সেদেশের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনী বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চরম আতঙ্ক সৃষ্টির পর সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ সীমান্তে চলে যেতে বাধ্য করায় প্রাণরক্ষার্থে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ৫২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নাফনদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। বিজিবি এবং স্থানীয় প্রশাসনের তীঘ্ন নজরদারীতেও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থেমে নেই।

এদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হলেও দালালরা কিন্তু ঠিকই বেপরোয়া। তালিকা প্রণয়ণের মাধ্যমে এদের আটক করে শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাবে না। ‘রোহিঙ্গা ব্যবসা’ এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বিষয়টি জনপ্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি কর্তৃক গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝে গণসচেতনতা সমস্যার সমাধানে কার্য্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন