টেকনাফে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে ছাত্রীকে স্কুলে পাঠালেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
টেকনাফ প্রতিনিধি:
বিয়ে বাড়িতে সাজ সাজ রব। অতিথিদের পোলাও-মুরগীতে আপ্যায়ন করা হচ্ছে। বধু সেজে বসে আছে নবম শ্রেণীর ছাত্রী নাজমা আক্তার লাকী (১৪)। পাশ্ববর্তী উখিয়া উপজেলা থেকে কিছুক্ষণ পরেই আসবে বর।
ঠিক ওই সময়ে বিয়ে বাড়িতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার আহমদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। বিয়ের আসর থেকে নাজমা আক্তার লাকীকে উঠিয়ে স্কুল ড্রেস পড়িয়ে স্কুলে পাঠালেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এভাবেই বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেলেন টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী নাজমা আক্তার লাকী (১৪)। তবে অনুষ্ঠানে বর উপস্থিত ছিলেন না।
জানা যায়, বাল্যবিবাহের বিষয়ে এলাকার লোকজন স্থানীয় সাংবাদকর্মীদের অবহিত করলে বাল্য বিবাহের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার আহমেদ এর নজরে আসলে বিয়ের দিন সোমবার দুপুরে তাদের নিজ বাড়িতে বিয়ে চলাকালে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে বই নিয়ে ছাত্রীকে স্কুল পাঠান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ।
উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়াপাড়ার বাসিন্দা প্রবাসী হাজী মনছুর আলমের মেয়ে নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী নাজমা আক্তার লাকীর সাথে উখিয়া জালিয়াপালং ইউনিয়নের মনখালী গ্রামের হাজী নুরুল বশরের ছেলে নুরুল আমিনের অতি ধুমধামের মধ্য দিয়ে অনাঙ্ক্ষিত বাল্য বিবাহ হচ্ছিল।
এঘটনায় বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে স্কুল ছাত্রীর মা হাসিনা আক্তার মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবে না বলে ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট মুচলেকা প্রদান করেন।
এব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুষার আহমদ জানান, বিয়ে বাড়িতে গিয়ে কাগজপত্র দেখে মেয়ের নির্ধারিত বয়স না হওয়ায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
তিনি আরো জানান, ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মেয়েদের স্থান শশুর বাড়ি নয়, বিদ্যালয়। বাল্য বিবাহ বন্ধে প্রশাসন সব সময় সক্রিয় রয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছার, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনর্চাজ মো. মাকসুদ আলম, শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাষ্টার মনজুর আহমদ, টেকনাফ সাংবাদিক ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হোসাইনসহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ।