Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণে নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা

news23 copy

বাইশারী প্রতিনিধি:

তিন দিন ধরে টানা বর্ষণের ফলে  পাহাড়  ধসের  আশঙ্কা  দেখা দিয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ি জনপদ গুলোতে। বিশেষ করে, উপজেলার শতাধিক গ্রামে হাজারেরও অধিক পরিবার এখন পাহাড় ধসে আমলে নিয়ে সকল দুর্ঘটনা এড়াতে তৎপর হয়েছেন নানাভাবে। রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারমান সহ পরিষদ বর্গকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন ইতিমধ্যেই।

সরেজমিন, ঘুরে আরও জানা যায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাটি মূলত পাহাড়ি জনপদ। এখানকার শতভাগ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আর ৪০ শতাংশ বাঙ্গালী বসবাস করে পাহাড়ের চূড়ায় বা ঢালুতে। প্রায় ৭০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ উপজেলায় সে হিসেবে অধিকাংশ মানুষের বাস পাহাড়ে। এ কারণে এ আশঙ্কার বিষয়টি এখন নাইক্ষ্যংছড়ির আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে সাগরে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তক সংকেত ঘোষণা করে তারা। আর ভারি বর্ষণ হলে তো  বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা দিতেই পারে। আর এরই মধ্যে পাহাড় ধস একটি।

একাধিক সচেতন ব্যক্তি জানান, উপজেলার শতাধিক গ্রামে শতশত পরিবার পাহাড়ের ঢালু বা চূড়ায় বসবাস করছে বর্তমানে। এসবের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের আদর্শ গ্রাম, মসজিদ ঘোনা, বিছামারা, জারুলিয়াছড়ি, সোনাইছড়ি, ঘুমধুম ফাত্রাঝিরি, বৈদ্যছড়া, তুমব্রু বাইশপাড়ি, লেবুছড়ি, পাইনছড়ি, টাংগ্ররা, ছরই মুরু পাড়া, ভাইসাং চাক পাড়া, বাইশারীর সাপমারা ঝিরি, দশতলা পাহাড়, ছাগল খাইয়া, হরিণখাইয়া, ডলুর ঝিরি, চিকনছড়ি, রাঙ্গাঝিরি, কাগজিখোলা, ইদগড় হেডম্যান পাড়া, উপর চাক পাড়া,তোফান আলী পাড়া, করলিয়া মুরা, হলদিয়া শিয়া ও লম্বাবিল সহ অসংখ্য গ্রাম  রয়েছে পাহাড় অধ্যুষিত। এ সব এলাকায় এমনিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে সব সময়। আর এর উপর পাহাড় কেটে বিরান ভূমিতে পরিনত হওয়া এ সব গ্রাম এ ঝুঁকিতে বেড়ে তিন গুনে দাঁড়িয়েছে।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানী জানান, বাইশারীতে বিভিন্ন সময় পাহাড় ধসে মারা গেছে বেশ ক’জন নারী ও শিশু। এর মধ্যে রাঙ্গাঝিরি অন্যতম। বর্তমানে তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে  পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথা চিন্তা করে তিনি তার পরিষদ বর্গকে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে বলে নিয়েছেন ইতিমধ্যেই। কেননা এটা চলতি মৌসুমের প্রধান এবং অন্যতম কাজ। উপজেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে ফোন করেছেন তাকে। তাই তিনি এটিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষভাবে। এভাবে পুরো উপজেলাতে প্রস্তুত হয়ে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বার্হী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল জানান, সামনে ভারি বর্ষণের খবর তিনি শুনেছেন। এ কারণে নানা প্রস্তুতিও নিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের বিষয়ে কী করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে তিনি কাজ শুরু করতে চান সকলকে নিয়ে। আর তা আজকালের মধ্যে শুরু করবেন তিনি। বিশেষ করে যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, নাই্ক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধস হওয়ার কারণ একাধিক। তম্মধ্যে পাহাড় কেটে নানাভাবে মাটি সরানো এলাকা গুলোর আশ পাশের জনবসতিতে পাহাড় ধস হওয়ার আশঙ্কা বেশি  দেখা দিয়েছে। বড় বড় পাহাড় কেটে এ উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে মাটি ভরাটের কাছ চলছে জোরেশোরে। যা চলে আসছে কয়েক মাস ধরে। আর এ সবে জড়িত স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। যাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।

তারা আরও জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের নিরবতার সুযোগে পাহাড় খেকোরা এ অরাজকতা করেছে প্রকাশ্যে এবং ইচ্ছা মাফিক। আর স্থানীয় প্রশাসনও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এ বিষয়ে সামনে এগিয়ে যাননি বেশি দূর। আর এ সুযোগটা লুফে নেয় পাহাড় খেকোরা। এ কারণেই এখন সামান্য বৃষ্টিতেই পাহাড় ধসের আশঙ্কার বিষয়টি সামনে আসছে পাহাড়ি জনপদ নাইক্ষ্যংছড়ি।

অপরদিকে, কক্সবাজার আবহওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, বর্তমানে বৃষ্টি হচ্ছে দু’দিন। সামনে আরও হবে। তবে জুনের আদলে ভারি বৃষ্টি হবে না এপ্রিল বা মে মাসে। তবে পাহাড় কেটে মাটি সরানো পাহাড় গুলো ধসের আশঙ্কায় থাকে সব সময়। কেননা এ সময়ে হিলি সয়েল গুলো নরম হয়ে এদিক-ওদিক সরে গিয়ে ধস নামতে পারে সিরিয়াসলি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শুধু বঙ্গোপসাগরের জন্যে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত রয়েছে থাকবে আরও ক’দিন। উপকূলীয় বসতির জন্যে নয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন