ঝড়ো হাওয়ায় উখিয়ার বালুখালীতে রোহিঙ্গা বস্তি লন্ডভন্ড
উখিয়া প্রতিনিধি :
আস্মিক ঝড়োহাওয়া ও বৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে উখিয়ার বালুখালীতে গড়ে ওঠা নতুন রোহিঙ্গা বস্তি। সোমবার ৬ মার্চ বিকেলে হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে উখিয়া আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।
কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীর পান বাজার ষ্টেশনের পশ্চিম পার্শ্বে পাহাড়ে বনবিভাগের জায়গায় ঝুঁপড়ি ঘর বেঁধে আশ্রয় নেয় প্রায় ২২শ’ রোহিঙ্গা পরিবার। এখানে রোহিঙ্গারা এলোমেলোভাবে যার যার মত করে শত শত ঘর তৈরি করে বসবাস করছে। পলিথিন ও জঙ্গলের ছাউনি দিয়ে বস্তির ঘর তৈরি করে খেয়ে না খেয়ে কোন রকম মানবতের জীবন যাপন করছে তারা। এরই মধ্যে হঠাৎ আস্মিক বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে তাদের মাথাগুঁজার আশ্রয়টুকুও। ফলে শত শত রোহিঙ্গা পরিবার এখন দিশাহারা অবস্থার মধ্যে পড়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বালুখালীতে নতুন গড়ে ওঠা বস্তিতে গেলে সাংবাদিকরা রোহিঙ্গাদের এ অসহায় চিত্র দেখতে পায়। এ সময় রোহিঙ্গা নারী জুলেখা বেগম (৩০) জানান, ‘মা-বাবাসহ ৫ জনকে নিয়ে ঝুঁপড়ি ঘরে থাকছি। বৃষ্টি পানিতে ও বাতাসে একমাত্র থাকার ঘরটি ভেঙ্গে গেছে। এখন কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।’ অপর রোহিঙ্গা আবুল বশর (৪২) ও তার স্ত্রী সাবেকুন্নাহার জানান, ‘৫ ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকার ঝুঁপড়ি ঘরটি ভেঙ্গে গেছে।’ ছমুদা খাতুন জানান, ‘২ ছেলে ৩ মেয়ে নিয়ে মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বালুখালীতে আশ্রয় নিয়েছি। আয়-রোজগার করার কেউ নেই। অনাহারে অর্ধহারে দিনাতিপাত করছি। স্বামী বুকে ব্যাথার রোগী হওয়ায় কিছু করতে পারে না। গতকাল সোমবার রাতে ভাত খেয়েছিলাম। এরপর থেকে না খেয়েই আছি। কোন ত্রাণ সামগ্রী কপালে জুটেনি।’
এভাবে রোহিঙ্গা বস্তিতে চলছে হাহাকার অবস্থা। নতুন বস্তির মাঝি লালু জানান, মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অমানবিক জীবন যাপন করছে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা পরিবারে খাবারের জন্য একমুঠো চাউল নেই।