জাহেদুল আলম ও তার অনুসারীদের বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমপি সমর্থিত আওয়ামী লীগের স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

সাময়িক বহিস্কৃত খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম, তার সহোদর মেয়র রফিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এসএম শফি, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কামাল পাটোয়ারী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার অভিযোগ এনে বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারিরা।

রবিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলামের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক মংক্যচিং চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আশুতোষ চাকমা, সত্যচিত চৌধুরী ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. রইছ উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, বাকশাল থেকে আসা জাহেদুল আলম বার বার দলীয় শৃঙ্ক্ষলা ভঙ্গ করে আসছেন। সর্বশেষ গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করে তার ছোট ভাইয়ের পক্ষে নির্বাচন করেন। পৌর নির্বাচনের পর থেকে খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা-মামলা চালাচ্ছে। জাহেদুল আলম, রফিকুল আলম ও দিদারুল আলমের নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনির হোসেন খান, কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরীসহ বহু নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত ও বহু নেতাকর্মীর বাড়ী-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং ভাংচুর করেছে।

এর আগে কদমতলীস্থ অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শহরের শাপলা চত্বর প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নেয়। মিছিল থেকে জাহেদুল আলম ও রফিকুল আলম বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে তাদের ও তাদের অনুসারীদের গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়।

গত ১ লা আগস্ট রাতে খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়ায় সন্ত্রাসীরা জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সুরুজ মিয়াকে কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করে।

এদিকে সুরুজ মিয়ার উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক জানু সিকদার বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা চেষ্টা ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে। মামলায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম, তার ছোট ভাই জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন ফিরোজসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গত দুই বছরে অন্তত অর্ধশতাধিক বার হামলা-পাল্টা হামলার মামলার ঘটনা ঘটে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন