জনগণের মাঝে আর্থসামাজিক উন্নয়নের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে

DSC_0398 copy

সাজেক প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ নিরাপত্তাবাহিনীর বাঘাইহাট জোনে অনুষ্ঠিত হেডম্যান ও কার্বারী সম্মেলনে, সাজেকের ২০০৮/১০ সালের ঘটনা উল্লেখ করে হেডম্যান/কার্বারীরা বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ৮/১০ সালের ওই ঘটনার পর এলাকায় যে বিরাজমান পরিস্থিতি ছিল পাহাড়ি বাঙ্গালীর মাঝে যে দুরত্ব ছিল তা একমাত্র নিরাপত্তাবাহিনীর ৪ বেঙ্গলের দ্বারায় জনগণের মাঝে আগের মত পাহাড়ি বাঙ্গালীর মাঝে আবারও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং ৪ বেঙ্গলের কারণেই এলাকাতে শান্তি বিরাজ করছে।

হেডম্যান/কার্বারীরা আরও বলেন, এ বেঙ্গল আসার পর সাজেক এতো প্রচার প্রসার হয়েছে যা বলার মত না, এখানকার জনগণ উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পেতনা এখন পর্যটন ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের ফলে জনগণ উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছে এর ফলে এ এলাকার জনগণের মাঝে আর্থসামাজিক উন্নয়নের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে এবং কি এ বেঙ্গল অন্যান্য বেঙ্গলের থেকে আলাদা এ বেঙ্গল আসছে পর্যন্ত কখনও নিরিহ লোককে হয়রানি করেনি এবং জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে এ বেঙ্গল এলাকায় উন্নয়ন করে যাচ্ছে শান্তির পরিবেশ বজায় রাখছে আশাকরি এর ধারা অব্যাহত থাকবে।

এধরনের সম্মেলন সাজেকসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয়দের অভিমত। এছাড়া নিয়মিতভাবে এ ধরনের সম্মেলনের মাধ্যমে দিকনির্দেশনা প্রদানের জন্য অংশ গ্রহণকারীরা নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

হেডম্যান ও কার্বারী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বাঘাইহাট জোনের অধিনায়ক লে.ক ইসমাইল হোসেন খাঁ(পিএসসি)। এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, বাঘাইহাট জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মঈনুল ইসলাম(পিএসসি), বঙ্গলতলী ইউপি চেয়ারম্যান কার্বারী জ্ঞনোজ্যোতি চাকমা, হেডম্যান বিশ্বজিত চাকমা, কার্বারী অতুলাল চাকমা(সাবেক চেয়ারম্যান), কার্বারী নতুনজয় প্রমুখ।

এসময় বাঘাইহাট জোনের আওতাধীন এলাকার অর্ধ-শতাধিক হেডম্যান ও কার্বারী উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে হেডম্যান ও কার্বারীগণ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরাপত্তাবাহিনীর অবদানের কথা অকুণ্ঠ চিত্তে স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সকল হেডম্যান ও কারবারীদের কাছ থেকে তাদের এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে, উঠে আসে বাঘাইহাট হতে করেঙ্গাতলী সড়কের বেহাল অবস্থার কথা, গংগারাম/নন্দারাম এলাকায় স্কুলের শিক্ষা সহায়ক উপকরণ সহ স্কুল নানান সমস্যার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক ঘটনায় নিরিহ লোকজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থাসহ আরও নানা সমস্যা। এসময় জোন কমান্ডার সব বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সম্মেলনে জোন অধিনায়ক লে.ক ইসমাইল হোসেন খাঁ বলেন, সাজেকের মানুষ শান্তি প্রিয় আর সরকারও শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উন্নয়নমূলক কাজে সরকারকে সহযোগিতা করছে নিরাপত্তাবাহিনী। এলাকায় চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসীমূলক অপরাধ কর্মকাণ্ড ও দুষ্কৃতিকারীদের নির্মূলে পাড়া কারবারী ও মৌজা হেডম্যানদের ভূমিকা রাখতে হবে। শান্তির পরিবেশ অশান্ত করার কোনো কাজ করলে কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।

যারা অন্যায়ভাবে নিরীহ জনগণ থেকে চাঁদা আদায় করছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে স্পষ্ট করে বলেন, যেখানে অস্ত্রের ঝনঝনানি যেখানে চাদাঁবাজি সেখানেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে অতীতেও এ ইউনিট তার উদাহরণ দিয়েছে।

এসময় তিনি আরও বলেন, যারা চাঁদা নেন তারা সংখ্যায় খুবই নগন্য। সকলে সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে । এলাকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অন্যায় অপরাধ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।

বর্তমানে সাজেকের শান্তি শৃঙ্খলা সুস্থ পরিবেশ বজায় রেখে চলমান উন্নয়ন কাজকে আরও এগিয়ে নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, এলাকাতে যে সব দুষ্কৃতিকারী রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হেডম্যান কারবারীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। পাহাড়ি-বাঙ্গালী সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়, এর থেকে বিরত থেকে সম্প্রীতি সৌহার্দের সাথে সবাইকে বসবাস করতে হবে। সাজেকে আইন-শৃঙ্খলা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে এ জনপদে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠির মাঝে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে।

সম্মেলনে হেডম্যান-কারবারীদের পাশাপাশি অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাজেক থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল আনোয়ার, সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলশন চাকমা, বাঘাইহাট বাজার কমিটির সভাপতি ডা. নাজিম উদ্দিন, সাধারণ-সম্পাদক মো. জুয়েল  প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন