Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রাঙামাটিতে ছোট হরিণা ইউনিয়ন নিয়ে জেএসএসের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে?

পাঠকের অভিমত

সুনীল পাল

পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি আন্দোলনের ডাকে গত ১৩-১৪ জুন টানা দুইদিনের সড়ক ও নৌ অবরোধ শেষ না হতেই আবারো ১৯-২১ জুন টানা তিন দিনের সড়ক ও নৌ অবরোধের ডাক দিয়েছে। এমনিতেই টানা এক সপ্তাহের নৌ অবরোধে জেলার বরকল উপজেলার অধিবাসীরা চরম দূর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছিল। জেলা সদরের সাথে নৌ যোগাযোগ নির্ভর এ উপজেলায় নৌ অবরোধ চলায় জেলা থেকে কোনো ধরণের খাদ্য, জ্বালানীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ ছিলো। তার উপর নতুন করে জেলাব্যাপী ডাকা অবরোধে সেই দূর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসে অবরোধ চলায় রোজাদারদের দূর্ভোগ চরমে ওঠে। অন্যদিকে ঈদের বাজারে অবরোধ চলায় ব্যবসায়ীরাও যারপরনাই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তার উপর আবার নতুন করে টানা তিন দিনের অবরোধ ডাকায় ব্যবসায়ী ও রোজাদার এবং শহরের সাধারণ নাগরিকেরা বিক্ষুব্ধ। কিন্তু নাগরিক দূর্ভোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করতে দেখা যায়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে রাঙামাটি জেলার ইউপি নির্বাচনে জেএসএসের বিপুল জয়লাভের পরও কেন একটি ইউপি নিয়ে এতো বেশী বাড়াবাড়ি? কি আছে এর নেপথ্যে?

 ফিরে দেখা : রাঙ্গামাটির ইউপি নির্বাচন- ২০১৬

বিগত ২৩ এপ্রিল সারা দেশের ন্যায় ৩য় দফায় রাঙ্গামাটিতেও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় রাজনৈতিক দলসমূহের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হুমকীর কারণে জাতীয় রাজনৈতিক দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে মাত্র ২২টিতে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দিতে পেরেছিল। স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে তাদের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া কাউকে প্রার্থী হতে দেয় না।

প্রত্যেকটি ইউপিতে জেলা আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভয়ে অন্যান্য ইউপিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাহস পায়নি। জেলা আওয়ামী লীগের এসব অভিযোগের কারণে নির্বাচন কমিশন রাঙ্গামাটির নির্বাচন পিছিয়ে ষষ্ঠ ধাপে বিগত ৪জুন রাঙ্গামাটি জেলার নির্বাচন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

নির্বাচন পেছানো হলেও জেলার জাতীয় রাজনৈতিক দলসমূহের দাবী অনুযায়ী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বা অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে তেমন কোন প্রশাসনিক তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি। কোন অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি, একজন সন্ত্রাসীও গ্রেফতার হয়নি।

তারপরও নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৪৪টিতে জেলা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হয়। হুমকীর কারণে বাকী ৪টিতে জমা দেয়া যায়নি। কিন্তু মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর থেকে শুরু হয় নৌকামার্কার প্রার্থী ও ভোটারদের প্রতি ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকী। বিষয়টি বারংবার নির্বাচন কমিশনে জানানোর পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত ২১ মে রাঙ্গামাটির ডিসি অফিসের সম্মেলন কক্ষে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ নির্বাচনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পদপ্রার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এক বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠকে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আবেদনের মাধ্যমে বেশ কিছু দাবী-দাওয়া পেশ করা হয়। দাবীসমূহের মধ্যে রয়েছে –

  • ১. স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রের জোরে তাদের নিয়ন্ত্রিত ভোট কেন্দ্রে তাদের এজেন্ট বা ভোটারদের দ্বারা প্রায় নির্বিঘ্নে জাল ভোট দিতে পারে। ভোটারদের সাথে এনআইডি কার্ড রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলে এই জাল ভোট প্রদান অনেকাংশে রোধ করা যাবে বলে আমরা মনে করি। ভোটার আইডি কার্ড এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। আইডি কার্ড দেখাতে পারলেই কেবল ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের ব্যালট পেপার দেয়া যাবে। একইসাথে কার্ডের ছবির সাথে ভোটারের মিল আছে কিনা পরীক্ষা করতে প্রত্যেক বুথে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা রাখতে হবে। কারণ প্রিজাইডিং বা পোলিং অফিসারগণ স্থানীয় হওয়ায় ভোট কেন্দ্রে তারাও অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। তাই ভোটারদের সাথে ভোটার আইডি কার্ড রাখা বাধ্যতামূলক করা দরকার।
  • ২. ভোটাররা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে কিনা মোবাইলের মাধ্যমে ছবি তুলে তার প্রমাণ দিতে হয়। এই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধ করতে সেলফোন বা মোবাইল ফোনসেট ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রে নিয়োজিত কোনো পোলিং এজেন্ট বা ভোটার মোবাইল সেট নিয়ে যেতে পারবেন না।
  • ৩. দেখা গেছে ভোটকেন্দ্র কাঁচা বাড়ি হলে পোলিং বুথের এক পাশে গিয়ে সহজে ছিদ্র করে কে কোথায় ভোট প্রয়োগ করছেন তা সঙ্গোপনে উঁকি মেরে দেখে থাকে সন্ত্রাসীরা। নির্দেশিত প্রতীকে ভোট না দিলে পরে সেই ভোটারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় সন্ত্রাসীরা। তাই ভোটকেন্দ্র কাঁচাবাড়ির হলে পোলিং বুথসমূহ মোটা কাপড় দ্বারা আচ্ছাদিত করতে হবে এবং সেই বুথের কাছাকাছি যাতে কেউ যেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ৪. কয়েকটি উপজেলার দুর্গম ভোট কেন্দ্রে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অন্য কোন দলের বা প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয় না। পোলিং বুথ থেকে অন্য প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত জাল ভোট প্রয়োগ করে থাকে। অস্ত্রের মুখে সেখানকার রিটার্নিং ও পোলিং অফিসার বা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অসহায় হয়ে পড়েন। তাই দূরবর্তী ও দুর্গম পোলিং সেন্টারগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট না থাকলে বা তাদের কেন্দ্রে যেতে না দেওয়ার অভিযোগ আসলে সেসব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখতে হবে।
  • ৫. এখন থেকে অবৈধ অস্ত্রধারীদের ধরতে এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে চিরুণী অভিযান চালানোর জন্য জোর দাবী জানানো হচ্ছে যাতে করে আগামী সব নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয় এবং পার্বত্য জনগণ যাতে অবাধে ভোট প্রয়োগ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
  • ৬. ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা করতে হবে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অফিসে। কারণ কেন্দ্রে ভোট গণনা করলে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা গণনা কাজে অস্ত্রের জোরে প্রভাব খাটিয়ে তাদের প্রার্থীর পক্ষে ফলাফল ঘোষণা করতে বাধ্য করে থাকে।
  • ৭. ব্যক্তিগত স্বার্থে জেলার প্রশাসনিক কোন কোন কর্মকর্তা পক্ষপাতমূলক আচরণ করে থাকেন। যেমন বিলাইছড়ি থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের পূর্বে অর্থাৎ এখনই তাদেরকে অন্যত্র বদলী করা দরকার বলে আমরা মনে করি।
  • ৮. বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়নের জেএসএস সমর্থিত স্বতন্দ্র প্রার্থী অমরজিত চাকমা দুদকের মামলায় একজন অ্যারেস্ট ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। পুলিশের নাকের ডগায় সম্পূর্ণ মুক্তভাবে ঘুরাফিরা করলেও তাকে ধরা হচ্ছে না। মামলাভুক্ত এসব প্রার্থীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

পেশকৃত দাবী অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও নির্বাচনের আগে ও পরে উল্লিখিত দাবী-দাওয়ার কোনটি পূরণ করা হয়নি বলে আওয়ামী লীগের অভিযোগ রয়েছে। ফলে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আরো জোরালোভাবে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নামে ৩২টি ইউপি’র চেয়ারম্যান ও অধিকাংশ সদস্যপদের বিজয় জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।

সম্প্রতি দেশে টার্গেটেড কিলিং বেড়ে যাওয়ায় তা রোধ করতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে পেট্রল বোমাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস দমন করতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলেছিল। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ব্যাপক চাঁদাবাজিসহ নানা অত্যাচার ও নির্যাতনে পার্বত্যবাসীর নাভিশ্বাস উঠলেও দুঃখজনকভাবে সেই অভিযানের আওতামুক্ত ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম।

পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় রাজনৈতিক দলসমূহের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরাও দীর্ঘদিন ধরে গুপ্তহত্যা চালিয়ে আসছে। এখানে তাদের টার্গেট এখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীবৃন্দ। ইতিমধ্যে তাদের হাতে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী অপহরণ ও খুনের শিকার হয়েছেন। চাঁদাবাজিতো চলছেই, প্রাণনাশের হুমকীর মধ্যে রায়েছেন অধিকাংশ নেতা-কর্মী। দেশে চলমান টার্গেটেড কিলিংয়ের সুযোগ নিয়ে এখানকার অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক এখন টার্গেটেড কিলিংয়ের শিকার হওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন রাঙ্গামাটির আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

বরকল উপজেলাধীন ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছোট হরিণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র দখলসহ ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে তা বাতিল করে নতুনভাবে ভোট গ্রহণের দাবীতে সম্প্রতি জন সংহতি সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। ঐ কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবীতে বরকল উপজেলায় গত ৭ জুন থেকে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ চলছে। পাশাপাশি জন সংহতি সমিতির ডাকে সারা জেলায় ১৩ ও ১৪ জুন টানা ৩৬ ঘন্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধের নামে চালানো হয়েছে হরতাল। রমজান মাসে এ ধরনের কর্মসূচি দেয়ায় রাঙ্গামাটির মুসল্লীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন, সাধারণ জনগণেরও প্রচণ্ড ভোগান্তি পেতে হয়েছে।

৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪৮টি ইউপি’র মধ্যে জন সংহতি সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জিতেছেন ২৩ জন, আওয়ামী লীগের ১৩ জন, ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯ জন, সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ২ জন এবং বিএনপির ১ জন। সর্বোচ্চ সংখ্যক চেয়ারম্যান পদ লাভ করেও একটি মাত্র চেয়ারম্যান পদের বিষয়ে তাদের কেন এত জোরালো আন্দোলনের ডাক, তা রহস্যজনক।

কারো কারো মতে অবৈধ অস্ত্রের জোরে ছিনিয়ে নেয়া তাদের ২৩টি প্রশ্নবিদ্ধ চেয়ারম্যান পদ থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতেই এ আন্দোলন। আবার কেউ কেউ বলছেন, জাতীয় নির্বাচনসহ আগামীতে অনুষ্ঠেয় সব নির্বাচনে জেএসএস হারলে যে তীব্র আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে, তারই মহড়া চালাচ্ছে জেএসএস।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীবৃন্দ নির্বাচনের পূর্বে যে আশঙ্কা করেছিলেন সেটাই সত্যি হয়েছিল বলে তাদের নেতা-কর্মীসহ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। অবৈধ অস্ত্রের জোরে যে অধিকাংশ সদস্যপদ ও ৩২টি চেয়ারম্যানের পদ ছিনিয়ে নিয়েছে, এসব ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে তাদের উপর নির্যাতনসহ জীবননাশের ভয় আছে বলে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিবাদ জানাতে সাহস পায়নি বলে জানান।

বরকল উপজেলায় মোট ইউনিয়ন পরিষদ হচ্ছে ৫টি। ৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫টির মধ্যে ৪টিতেই জেএসএস সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছে। শুধুমাত্র ৪ নং ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রার্থী ৪,৪২০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জেএসএস সমর্থিত আনারস মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছে ৪,০৯৮ ভোট।

জেএসএস –এর অভিযোগকৃত ছোট হরিণা ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোট ভোট পেয়েছেন ১,৬৬২ এবং জেএসএস সমর্থিত প্রার্থী পেয়েছেন ৮৩৪ ভোট। জেএসএস –এর অভিযোগ অনুসারে নৌকার অনুকূলে ভোট কেন্দ্র দখল বা ব্যাপক জালিয়াতি হলে জেএসএস –এর প্রার্থী এত ভোট পাওয়ার কথা নয়।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলছেন – আসলে ভোট ডাকাতি হয়েছে কয়েকটি কেন্দ্রে, তন্মধ্যে ঠেগা খুববাং, মধ্য ছাদারাছড়া ও ধনুবাগ কেন্দ্র অন্যতম। খুববাং কেন্দ্রে জেএসএস প্রার্থী পেয়েছে ৯৫৫, নৌকা পেয়েছে মাত্র ১৭ ভোট। মধ্য ছাদারাছড়া কেন্দ্রে জেএসএস পেয়েছে ৫৬৪, আওয়ামী লীগ পেয়েছে মাত্র ৬ ভোট। ধনুবাগ কেন্দ্রে জেএসএস পেয়েছে ১০৯২, আওয়ামী লীগ পেয়েছে মাত্র ২২ ভোট। এসব কেন্দ্রে জালিয়াতি এবং ভোট কেন্দ্র দখল করা হয়েছে বলে এরূপ অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য রেজাল্ট হয়েছে।

ছোট হরিণা ভোট কেন্দ্রে পাহাড়ি ভোটার সংখ্যা বেশী হলেও এটা মনে করার কারণ নেই যে তারা সবাই পাহাড়ি প্রার্থীকে ভোট দেবে। এসব সাম্প্রদায়িক চিন্তা নিয়ে রাজনীতি করা সমীচীন নয়। পাহাড়ি ভোটারদের অধিকাংশই কিন্তু আওয়ামী লীগের সমর্থক। তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে এটাই স্বাভাবিক। ছোট হরিণা কেন্দ্রে হয়েছেও তাই।

ছোট হরিণা কেন্দ্র নিয়ে জেএসএসের মরিয়া ভাবের কারণ

৪ জুনের নির্বাচনে রাঙ্গামাটি জেলার ৪৯ টি ইউপি’র মধ্যে ২৫ টি’তে জেএসএস সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়। বাকী ২৪ টিতে তারা পরাজিত হয় (বিএনপি ১ টি, আওয়ামীলীগ ১৩ টি, ইউপিডিএফ ৮ টি, স্বতন্ত্র ১টি ও জেএসএস লারমা ১ টি)। অন্য আসনগুলোতে পরাজিত হলেও তাদের মনোকষ্ট শুধু ছোটহরিণাকে ঘিরেই। শুধু এই ইউপিতেই তারা পুণঃ নির্বাচন চায়। কিন্তু কেন? ছোট হরিণা ইউপি কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ? একটু খোঁজ নিলেই অন্তরালের বিরাট কৃষ্ণগহ্বর বের হয়ে আসবে।কিন্তু কী সেটা?

সেটা আর কিছু নয় ছোট হরিণার অবস্থানগত গুরুত্ব। এর নেপথ্যে রয়েছে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি, চোরাকারবারী ও অবৈধ পারাপার নিয়ন্ত্রণ, আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ ইত্যাদি। অতীতে এ এলাকাগুলো ছিল তথাকথিত শান্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এবং এ এলাকাগুলো থেকে সন্ত্রাসীরা বিপুল অংকের অর্থ সংগ্রহ/চাঁদাবাজি করতো। পরবর্তীতে তার দখল নেয় সন্তু লারমার অনুগতরা। নিরীহ পাহাড়ি ও বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী তাদের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারে আজ নিষ্পেষিত। আর তার সমুচিত জবাব দিয়েছে এবার নিরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে। এলাকায় আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থী বিজয় লাভ করায় তাদের মাথায় যেন বজ্রপাত ঘটে। উক্ত নির্বাচনে ছোটহরিণা ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ভোটে জয়লাভ করে। আওয়ামীলীগ প্রাথীর জয় এবং সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু দিলীপ কুমার চাকমার পরাজয়ে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো ভূমিকা পালন করেছেঃ

ছোটহরিণা এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে জেএসএস সন্ত্রাসীরা পাহাড়ি জনসাধারণ বিশেষ করে কাঠ ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, জুম চাষী, সাধারণ ব্যবসায়ী এবং বাঙ্গালীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের নিকট হতে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে আসছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার চাকমা এলাকায় কোন উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ড না করায় এলাকাবাসী বিশেষ করে পাহাড়ি সম্প্রদায় পূর্ব থেকেই তার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। ছোটহরিণা, বড়হরিণা, থেগামুখ সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় জেএসএস এর কর্মীদের কথার বাহিরে স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙ্গালী জনগণ চলাচল করলে তাদেরকে বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় এবং তাদের ‍উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত পাহাড়িরা বিভিন্ন টিলায় একাকী বসবাস করায় সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করা তাদের সম্ভব হয়ে উঠে না। তারা যেন জেএসএস সন্ত্রাসীদের নিপীড়নে নিষ্পেষিত। সেখানে চাঁদা না দিয়ে কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করা সম্ভব নয়। স্থানীয়      কাঠ ব্যবসায়িরা গাছের সরকারী ভ্যাট ও কর প্রদানের মাধ্যমে ছোটহরিণা থেকে নদী পথে রাংগামাটি নেওয়ার পথে পারমিট প্রতি এক লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হয় এবং কাঠের পরিমাণ বেশী হলে আরও বেশী টাকা দিতে বাধ্য করা হয়ে থাকে। কাপ্তাই কর্ণফুলি পেপার মিলে যে বাঁশ যায় সরকারকে রাজস্ব দেওয়ার পরও বাঁশের হাজার প্রতি ২০০/- (দুইশত) টাকা চাঁদা দিতে হয়। বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বিভিন্ন চাঁদা আদায়সহ বাজার থেকে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার প্রতি দোকান হতে ৩০০/- (তিনশত) টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হয়।

জেএসএস কর্তৃক নিয়োগকৃত চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দ্রব্যাদির উপর নিম্নলিখিত হারে চাঁদা আদায় করে থাকে যা নিম্নরূপ:

চাঁদাবাজি

এই সীমাহীন চাঁদাবাজির কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা জেএসএস’র উপর ক্ষুব্ধ ছিলো। ফলে নিরীহ পাহাড়ি জনগণ নীরবে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে তাদের মতামত ভোটের মাধ্যমে প্রকাশ করে। বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের জন্য নতুন নির্মিয়মান স্থল বন্দর থেগামুখ যাতায়াত এই ছোট হরিণা দিয়েই করতে হয়। ৫ শতাধিক কোটি টাকা প্রজেক্টের এই নির্মিয়মান স্থল বন্দর নির্মাণ কাজ থেকে চাঁদাবাজি ও এই স্থল বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতেই ছোট হরিণাকে জেএসএস এতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে। সবেচেয়ে বড় কথা রাঙামাটি থেকে পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের ভারতের সাথে আসা-যাওয়া, যোগাযোগসহ অস্ত্র সংগ্রহ, মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এই করিডোরটি ব্যবহার করে। কিছুদিন আগে এই রুট দিয়ে ভারত থেকে আসা স্পিড বোট থামিয়ে বেশ কয়েকটি স্বর্ণমূর্তি, বস্তাভর্তি টাকা, যৌণৈ উত্তেজক পানীয় প্রভৃতি আটক করে। কিন্তু ধর্মীয় আবেগের কথা ভেবে বিজিবি তা ছেড়ে দেয়।

এদিকে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী জয় লাভের পর স্থানীয় জেএসএস সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের পর হতে বরকল উপজেলার নির্বাচন বাতিলের দাবীতে মিছিল, মিটিং, বাজার বয়কট এবং নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আরো ২৩ টি আসনে হারলেও তা নিয়ে তাদের তেমন কোন অভিযোগ নেই। শুধুই ছোটহরিণাকে ঘিরেই তাদের সকল আপত্তি। তাদের আপত্তি ও মনোঃকষ্টের কারণ এখন আর কারোই অজানা নয়। ছোটহরিণা জোন এলাকায় বসবাসরত পাহাড়ি এবং বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী অত্যন্ত গরীব এবং দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। বাজার বয়কট এবং নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙ্গালী তাদের উৎপাদিত শস্য স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ক্রয় করতে না পারায় জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের মাধ্যমে দিনাতিপাত করছে। দুঃখের বিষয় হলো: জেএসএসের এই নৈরাজ্যের প্রতিবাদের স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্রয়দানকারীর মতো। সারা দেশে পুলিশ সরকিার বিরোধী আন্দোলন ও নৈরাজ্য কঠোর হস্তে দমন করলেও রাঙামাটিতে জেএসএসের কাছে তাদের ভুমিকা অসহায়ের মতো।  গত ১২ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার সুমন কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় পরিস্কার করে বলেছে রাঙামাটিতে স্থানীয় প্রশাসন জেএসএস’র সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে জেএসএসের সন্ত্রাসের কাছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কেমন অসহায় হয়ে পড়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরে সন্ত্রাসীদের থামাতে এবং অস্ত্র উদ্ধার করতে বিশেষ অপারেশন পরিচালনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।

কেননা অবৈধ অস্ত্রের জোরে নির্বাচনে জয়লাভের যে সংস্কৃতি রাঙ্গামাটিতে আরম্ভ হয়েছে, তা টিকে গেলে আগামীতে অনুষ্ঠেয় সব নির্বাচনেই তা অনুসরণ করার আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনের পূর্বে প্রতি উপজেলায় সশস্ত্র গ্রুপ পাঠিয়ে নির্বাচনকে ম্যানিপুলেট করার সংস্কৃতি আরম্ভ হয়েছে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময়। সেসময় নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের অভিযোগ। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচনসহ প্রত্যেক নির্বাচনে একই কৌশল প্রয়োগ করে সফল হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো।

ব্যতিক্রম শুধু রাঙ্গামাটি পৌরসভা নির্বাচন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা শহরের ভোট কেন্দ্রগুলো দখলে নিতে পারেনি, তাই অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান পদটি দখলে নিতে পারেনি তারা।

আগামী যে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযানের বিকল্প নেই। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যাবে, অস্ত্রবাজির কারণে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে পার্বত্য জনগণ মুক্তি পাবে। কিন্তু তা আদৌ হবে কি? জাতীয় স্বার্থে, দলীয় স্বার্থে, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতি রক্ষা করতে এই সন্ত্রাসীদের এখনই থামাতে হবে।

সুনীল পাল(ছদ্ম নাম): নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

7 Replies to “রাঙামাটিতে ছোট হরিণা ইউনিয়ন নিয়ে জেএসএসের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে?”

  1. Very informative write up. This depicts true picture of hooliganism of so called JSS or Shantu bahinis. It gives rise to a question. Who controls CHTs? I think time has come to prosecute Shantu Larma for his unlawful activities and disturbing the peace in CHTs.

  2. A good reporting covering pros and cons. We are more abreast of the current situation. Thanks for the write up. It is going to give definite dividend.

  3. “আগামী যে কোন নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযানের বিকল্প নেই। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। শুধু সুষ্ঠ নির্বাচন নয়, চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম, খুন ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যাবে, অস্ত্রবাজির কারণে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে পার্বত্য জনগণ মুক্তি পাবে। কিন্ত তা আদৌ হবে কি? জাতীয় স্বার্থে, দলীয় স্বার্থে, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতি রক্ষা করতে এই সন্ত্রাসীদের এখনই থামাতে হবে।”

    — প্রকৃত ঘটনা বলার মত সাহসী লিখনীকে ধন্যবাদ জানাই। প্রশাসন কি এই খবরে জাগ্রত হবে? আইন প্রয়োগকারী বিজিবি, সেনাবাহিনী অথবা পুলিশ কি শুনবে পাহাড়ী বাংগালীদের আর্তনাদ?

  4. গনতান্ত্রিক দেশে এই নৈরাজ্য আর কতদিন চলবে? জাতির কাছে বিবেকের প্রশ্ন।

  5. বাংগালহালিয়া বাজারে জে এস এস মাছ বাজার হতে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪২০০০ টাকা চঁাদা অাদায় করাছে অাজ ১৫/৬/১৬ তারিখে।

  6. Most appropriate write up depicting true story of suppressed locals.The writer, publisher and all concerned deserve very high appreciation.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন