চকরিয়া-পেকুয়া আসনে নৌকা প্রার্থী জাফর আলম বিপুল ভোটে জয়ী

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজার চকরিয়া-পেকুয়া আসনে নৌকা প্রার্থী জাফর আলম বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।

ভোট গণনা শেষে রাত সাড়ে আটটার দিকে এই প্রতিবেদন তৈরী পর্যন্ত বেসরকারিভাবে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, কক্সবাজার-১ আসনে দুই লাখ ১৯ হাজার ৭০৩ ভোটের বিশাল ব্যবধানে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মহাজোটের প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম।

দুই উপজেলার ১৩৯টি কেন্দ্রে জাফর আলম (নৌকা) প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৭৪হাজার ৯৬৩ ভোট। তাঁর নিকটতম বিএনপির প্রার্থী হাসিনা আহমেদ পেয়েছেন ৫৫ হাজার ২৬০ ভোট।

১৯৭৩ সাল পরবর্তী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রতীকে এমপি পদে বিজয়ী হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাফর আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা সারাজীবনের রাজনীতি ছিল গণমানুষের জন্য। এজন্য চকরিয়া ও পেকুয়ার মানুষ আমাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। এই বিজয় চকরিয়া-পেকুয়াবাসীকে উৎসর্গ করলাম।’

৩০ ডিসেম্বর কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে প্রত্যেক কেন্দ্রে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইনে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।

তবে ভোটকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্ন কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই আসনের দুই উপজেলার চকরিয়া ও পেকুয়ার ১৩৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের মাতব্বর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে সাড়ে এগারটার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত ও আরও চারজন আহত হয়েছে।

দুই উপজেলায় একটি কেন্দ্র ছাড়া অন্যান্য সব কেন্দ্রগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে দুই উপজেলায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকেই পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের মাতব্বরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে এগারটার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়। এ সময় উভয়পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধলে হামলা ও গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় রাজাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ আল ফারুক (২২)। সে ইউনিয়নের উলুদিয়া পাড়ার নুরুল আবচারের পুত্র। এ সময় আহত হন আওয়ামী লীগ কর্মী একই এলাকার আবু তালেব (৩২), রবি আলম (২৪), মাতব্বর পাড়ার রুহুল কাদের (৩০)। আহতদের মুমূর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পেকুয়ার ৪০টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি ছাড়া বাকী কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ‘চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৯৯টি ভোটকেন্দ্রে সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানের উৎসব চলে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন