চকরিয়া থানায় জব্দকৃত গাড়ী নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন, তদন্তকারী কর্মকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা

চকরিয়া প্রতিনিধি:
চকরিয়া থানায় জব্দকৃত জীপ গাড়ি নিয়ে আদালতে কোন ধরণের তদন্তবিহীন মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করায় আদালত থানার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পুলিশ রেগুলেশন বেঙ্গল ১৯৪৩ এর ৩০ নং প্রবিধান এবং পুলিশ আইনের ১৮৬১ এর ২৩ ধারা অনুযায়ী আদালতের নির্দেশ না মানার বিষয়ে ফৌজধারী কার্যবিধি ও বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে না মর্মে ৭ দিনের কারণ দর্শানো দিয়েছে।

আদালতের ওই আদেশের পর প্রতিবেদন দাখিলকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতের কাছে প্রথম বারের মত ক্ষমা প্রাথনার আবেদন করেন।

জানাগেছে, অকশন জীপ গাড়ী, যার লট নং ২২ আইভি/২০১/ভেহিঃস্যাল, টেন্ডার তাং ০৭মার্চ’২০১৬ইং, চ্যাসিস নং ইঔ৭০-০০০৬৮৫১, ইঞ্জিন নং ৩ই-০৮২৩৭৩৩, প্রস্তুতকারক-টয়োটা ল্যান্ডক্রোজার জীপ গাড়ীটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ঢাকা সেনানিবাস থেকে ঢাকার মিরপুর পল্লবী সেকশন-১১, ব্লক সি, এভিনিউ-৩/৪/৬ এলাকার মৃত এম.এ মন্নান পাটোয়ারী’র পুত্র মো. হাবিব উল্লাহ বিগত ৮ মে’ ১৬ইং প্রকাশ্যে নিলামে অংশ নিয়ে অকশন নিয়েছেন। অকশনে নেওয়া ওই গাড়ীটি ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট/নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ৩০০ (তিন শত) টাকার স্ট্যাম্পে হলফনামা মূলে ২,৩০,০০০/- (দুই লাখ ত্রিশ হাজার) টাকায় ক্রয় করেন চকরিযা উপজেলা-পৌরসভার ভরামুহুরী মসজিদ পাড়া গ্রামের মরহুম হাজী ফকির মোহাম্মদের পুত্র মো: নাজিম উদ্দিন। মোটরযানের মালিকানা বদলী সংক্রান্ত মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৪০ (১) ধারা এবং মোটরযান বিধি ১৯৮৪ এর ৬৪ (১) ধারা মতে টিও এবং টিটিও ফরম এর রেজিষ্টারিং অথরিথি মূলে মো: নাজিম উদ্দিনের কাছে অকশনে নেওয়া গাড়ীর মালিকানা হস্তান্তর করেন।

গাড়ীর বর্তমান মালিক নাজিম উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, বিগত ১৫ মে’ ১৭ইং তার মালিকানাধীন জীপ গাড়িটি থানা রাস্তার মাথা থেকে অন্যায়ভাবে থানায় নিয়ে গিয়ে জব্দ তালিকায় দেখান। এনিয়ে গাড়ী মালিক আদালতের স্মরণাপন্ন হলে বিজ্ঞ আদালত গত ৮ জুন শুনানী শেষে থানাকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুন ‘১৭ইং আদালতে ননজিআর প্রতিবেদন দাখিল করেন চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

ওই প্রতিবেদনে বৈধ এ গাড়ীটিকে দেখানো হয়েছে কাগজপত্র বিহীন অবৈধ হিসেবে। এনিয়ে গাড়ী মালিক বিজ্ঞ আদালতের স্বরণাপন্ন হয়ে প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির অভিযোগসহ থানা পুলিশ কোন কাগজপত্র গ্রহণ করেননি বলে অবহিত করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত গত ২০ জুন ‘১৭ইং গাড়ী নিয়ে থানা প্রতিবেদন দাখিলকারী তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে না মর্মে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন।

এর আলোকে গত ৩০ জুন ’১৭ইং আদালতের কাছে অনিচ্ছাকৃত ভুলবশত: মানবিক বিবেচনায় প্রথম বারের মত ক্ষমা প্রাথনা করে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। এদিকে গাড়ী মালিক ক্ষতিগ্রস্ত মো. নাজিম উদ্দিন বিজ্ঞ আদালতের কাছে তার সকল বৈধ কাগজপত্র বিবেচনা ও পর্যালোচনা করে থানায় জব্দকৃত জীপ গাড়ীটি ফেরৎ দাবী করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন