Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

চকরিয়ায় সরকারী নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ 

Untitled-1 copy

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিংভং সরকারী বিদ্যালয়’র নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মালেকা বেগম। কিন্তু ওই বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হুমায়রা আযাদি বিদ্যালয়ে যোগদানে বার বার বাধা প্রদান করেন।এনিয়ে কয়েকবছর ধরে দুই শিক্ষিকার মধ্যে মারামারি, মামলাসহ নানা ধরনের বিরোধ চলছিল। কিন্তু দুই শিক্ষিকার এ বিরোধ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়াও ২০১৩ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওযামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোসহ অতিসম্প্রতি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশী মামলা রুজু করে প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা আযাদি।

তার অভিযোগ, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম প্রভাব খাটিয়ে ও তার সহধর্মীনিকে সাথে নিয়ে কয়েকদিন আগে বিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে শারীরিকভাবে মারধর করেন। এমনকি তার কাছ থেকে হাজিরা খাতাটি নিয়ে লাঞ্ছিত ও শ্লীলতাহানি করেন।

তবে দায়ের করা নালিশী মামলাটি একেবারে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং যড়যন্ত্রমূলক দাবি করে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন উপজেলায় কর্মকর্তা  শিক্ষক-শিক্ষিকা। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দরা চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এতে ৬টি দাবি তুলে ধরেন এসব শিক্ষক-শিক্ষিকা।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারী নিয়ম-শৃক্সক্ষলা ভঙ্গকারী হুমাইরা আযাদি কর্তৃক উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম ও তার সহধর্মীনি শাহেদা জাফর এবং সহকারী শিক্ষিকা মালেকা বেগমের বিরুদ্ধে দায়ের করা নালিশী মামলা প্রত্যাহার করা, সরকারী নিয়োগপ্রাপ্ত মালেকা বেগমকে রিংভং দক্ষিণ পাহাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করা, শীঘ্রই বিদ্যালয়ে একজন পরিপূর্ণ প্রধান শিক্ষক পদায়ন করে বিদ্যালয়’র স্বাভাবিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদ হতে তার স্বামীকে পদচ্যুত করা, সরকারী আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসদাচরণকারী শিক্ষিকা হুমাইরাকে চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্ত করার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এর আগে শিক্ষকদের এ প্রতিবাদ সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু,

৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু তৈয়ব, চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল, হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান, কাকারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত ওসমান, কোনাখালীর চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার, লক্ষ্যারচরের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার, বিএমচরের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম, কৈয়ারবিলের মক্কী ইকবাল হোসেন, ডুলাহাজারার চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। এছাড়াও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরাও বক্তব্য রাখেন।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক যথাক্রমে মকছুদুর রহমান, সাহাবউদ্দিন, নাছিমা আক্তার, সেলিনা আক্তার, সিরাজুল করিম, সহকারী শিক্ষক যথাক্রমে হারুণুর রশিদ চৌধুরী, শাহেদা জাফর, মালেকা বেগম, আবুল কালাম। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুতুবদিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ আনচারী ও পরিচালনা করেন চিরিঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’র প্রধান শিক্ষক তসলিম উদ্দিন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

তিনি বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি। তাই এ পদের কারণে আমাকে এ সমস্যা নিরসনের দায়িত্ব বর্তায় আমার ওপর। কিন্তু আমার দলের কিছু মৌসুমী ও সুবিধাভোগী নেতারা এ ঘটনায় রাজনীতি নিয়ে এসেছেন। রিংভং দক্ষিণ পাহাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা আযাদিকে দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক মামলাও করিয়েছেন আদালতে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৫ সালে। বনবিভাগের জায়গায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলেও সেই সময় আমি বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়টির অবস্থান নিশ্চিত করি। উপজেলা পরিষদের সার্বিক প্রচেষ্টায় প্রায় ৬ লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করে বিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যবস্থা করি। বিদ্যালয়’র শুরুতে এখানে কর্মরত ছিলেন চারজন শিক্ষক। তারা হলেন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হুমায়রা আযাদি, সহকারী শিক্ষক বেলাল হোছাইন, ইয়াছমিন জন্নাত ও মালেকা বেগম। ২০১৩ সালে বর্তমান সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের অপরাপর রেজিস্টার্ড সকল বিদ্যালয়’র সাথে রিংভং দক্ষিণ পাহাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারীভাবে গেজেটভুক্ত হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে মালেকা বেগম বিদ্যালয়টিতে চাকুরীতে বহাল আছেন। কিন্তু বিদ্যালয়টি সরকারীভাবে গেজেটভুক্ত হওয়ার পর হঠাৎ করে প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের বিনিময়ে নতুন একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য তোড়জোড় করেন। এরপর থেকে সহকারী শিক্ষিকা মালেকা বেগমকে তিনি বিদ্যালয়ে যেতে নানাভাবে বারণ করেন এবং বাঁধা দেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুই শিক্ষিকার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই মধ্যে দুই জনের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রধান শিক্ষিকা হুমায়রার মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলও খাটতে হয় সহকারী শিক্ষিকা মালেকা বেগমকে।

তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষিকা মালেকার অধিকার রক্ষায় তার পাশে রয়েছি। এ কারণে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক মহলটি আমার পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান ক্ষুন্ন করতে মাঠে নেমেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন