চকরিয়ায় বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় নববধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিয়ের ১৫ দিনের মাথায় রমজানের প্রথম দিনে শ্বশুর বাড়ি থেকে ফাতেমা বেগম (২০) নামের এক নববধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে চলছে নানা ধরণের গুঞ্জন।
শুক্রবার (১৮ মে) প্রথম রমজানের দিন দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ২নং
ওয়ার্ডের মধ্যম নোনাছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফাতেমা বেগম ওই এলাকার নাছির উদ্দিনের পুত্র কাঠমিস্ত্রী সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ও উখিয়া উপজেলার
ইনানীস্থ রুপপতি এলাকার মোহাম্মদ আলমের মেয়ে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আজ থেকে ১৫ দিন পূর্বে উখিয়া উপজেলার রুপপতি এলাকার মো. আলমের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সঙ্গে উপজেলার হারবাং মধ্যম নোনাছড়ি এলাকার নাছির উদ্দিনের পুত্র সাইফুলের প্রেমের সম্পর্কের বিয়ে হয়। শুক্রবার দুপুরে নিহত ফাতেমার স্বামীর বাড়ির লোকজনের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে গিয়ে তার রুমের ভেতর ভিমের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচাঁনো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে খবর দেয়।
চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি আবুল কালামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে রাতে ঘটনাস্থল থেকে নিহত নববধুর লাশ উদ্ধার করে।
ফাতেমার শ্বশুর নাছির উদ্দিন বলেন, শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে জুমার নামাজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। এসময় আমার পুত্রবধু (সাইফুলের স্ত্রী ফাতেমা) মোবাইলে কথা বলছিল তার বাপের বাড়ির লোকজনের সাথে। ওই সময় তার স্বামী সাইফুল বাড়িতে ফার্নিচারের কাজ করছিল। আমি তাকে প্রথম রমজানের জুমার নামাজে যাওয়ার জন্য তাগাদা দিলে সে দ্রুত ফার্নিচারের কাজ রেখে অজু করতে যায়। ফাতেমার মোবাইল ফোনে কথা শেষ হওয়ার পরে দেখতে পাই সে কান্নাকাটি করেছে। তবে কি জন্য কেঁদেছে তা জিজ্ঞাস করিনি। পরে সাইফুলসহ বাড়ির অন্যদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে চলে যাই।
তিনি বলেন, জুমার নামাজ শেষ করে ২টার দিকে বাড়িতে এসে দেখতে পাই আমার বাড়িতে আশপাশের লোকজনের ভীড়। পরে জানতে পারি সাইফুলের স্ত্রী ফাতেমা বেগম তার রুমের মধ্যে বাড়ির ভীমের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
অপরদিকে ফাতেমা’র মা মমতাজ বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। আজ (শুক্রবার) দুপুরেও তার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। তারা দু’জনই প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে একে অপরকে ভালবেসে বিয়ে করে। ১৫ দিন পূর্বে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান করে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়।
মমতাজ বেগম দাবী করে বলেন, আমার মেয়েকে তারা নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করে ওই ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।