চকরিয়ায় বদরখালীতে যাতায়াতে ৫শত পরিবার চরম দুর্ভোগে
চকরিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়া উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ব্লকের পাঁচ গ্রামের জনসাধারণ ১০ বছর ধরে সংস্কার ও উন্নয়নের অভাবে গ্রামীণ অভ্যান্তরীণ মাঝের পাড়া সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের খামখেয়ালিপনা ও দায়িত্বহীনতার অভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ এসড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায় ৫শত পরিবারের জনসাধারণকে চরম ভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ছাড়া দীর্ঘ প্রায় দশ বছর ধরে সড়কের ভাঙ্গন, কালভার্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে ওই এলাকার ৫টি গ্রামের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীদের যানবাহন যাতায়াত করতে পারছে না। বর্ষাকাল আসার পূর্বে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলাচল অনুপযোগী সড়কটি অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে এলাকার সচেতন মহল।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উপকূলীয় সমুদ্রতীরবর্তী মহেশখালী চ্যানেলের পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন হচ্ছে বদরখালী ইউনিয়ন। ৫০হাজার জনগোষ্ঠি নিয়ে ৩টি ব্লকে বিভক্ত এ ইউনিয়নটি। তৎমধ্যে ১নম্বর ব্লকের পরিষদের এক নম্বর এ ওয়ার্ডটি একেবারে উন্নয়ন বঞ্চিত। প্রায় ৫শত পরিবার ও ৫হাজার জনগোষ্ঠির জনগুরুত্বপূর্ণ যাতায়াতের একমাত্র সড়ক হচ্ছে মাঝের পাড়া সড়ক। এ সড়ক দিয়ে হাজারো গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। পার্শ্ববর্তী ডেমুশিয়া ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন এবং অত্র ইউনিয়ন ও বদরখালী বাজারের সাথে ওই সড়ক এক মাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। কিন্তু স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের খামখেয়ালি ওদায়িত্বহীনতার অভাবে সড়ক চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বদরখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের পাড়া সড়ক দিয়ে ওই এলাকার ৫গ্রামের উত্তর নতুনঘোনা, বদরী পাড়া, মাঝের পাড়া, কুতুবদ্বিয়া পাড়া ও ডেমুশিয়া পাড়ার বাসিন্দারা যাতায়াত করে আসছে। দীর্ঘ সময় ধরে সড়কের মধ্যখানে চিংড়ি ঘেরের পানি চলাচলের জন্য নির্মিত বক্সকালভার্ট এপ্রোজের মাটি সরে যাওয়ার ফলে জনগণের যাতায়াত করা মুলত ভোগান্তিতে পড়েছে। স্থানীয় ওই ওয়ার্ডের কতিপয় ব্যক্তি তাদের চিংড়ি ঘের প্রকল্পের পানি চলাচল ও বক্সকালভার্টের জাল বসা এবং রাস্তার ইট চুরি করে নিয়ে যাওয়ার কারণে কালভার্টের দু’পাশে মাটি সরিয়ে যায় এমনই অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। যার ফলে রাস্তার এ করুণদশা পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আজও কোন ধরণের কোন সংস্কার ও উদ্যোগ নেইনি। এ সড়কটি বর্তমানে যাতায়াত ও যান চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পথচারীদের চলাচল ও যানবাহন যাতায়াত এক প্রকার বন্ধ বললেই চলে। এখানকার স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শত শত ছাত্র-ছাত্রী আসা যাওয়া করে।
এছাড়াও অত্র ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বদরখালী বাজারে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বদরখালী কলেজ, বদরখালী কলোনিজেশন উচ্চ বিদ্যালয়, বদরখালী এমএস ফাজিল মাদ্রাসা ও আশ পাশের সরকারী এবং বেসরকারী দ্বীনই প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য এ সড়কটি সংস্কার অত্যান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। মাঝের পাড়া সড়কটি চলাচল অকজো হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
বদরখালী ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র সৌরভ হোসেন জানান, প্রতিবর্ষার মৌসুমে ৫গ্রামের শিক্ষার্থীরা সড়ক দিয়ে যাতায়াতের জন্য খুবই দুষ্কর হয়ে পড়ে। রাস্তার দু’ধারে বিলীন হয়েগেছে ইট। যেন রাস্তার অস্তিত্ব ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এক কিলোমিটারের পথ এখন দুই কিলোমিটার ফাঁড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে হয়।
এ ব্যাপারে বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল বশরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় (এলজিইডি) বিভাগের অধিনে সড়কটি কাজ করে সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যর্থতার কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি আজ বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে।
পরিকল্পিত ভাবে উন্নয়ন না হওয়ায় ও সুষ্ঠ তদারকির অভাব এবং প্রশাসনের চরম ব্যর্থতার কারণে গ্রামীণ এ সড়ক উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। তাই এ ব্যাপারে চকরিয়া-পেকুয়া জাতীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ৫গ্রামের বাসিন্দা ও সচেতন মহল।