চকরিয়ায় পুলিশকে মারধর করে হত্যা মামলার আসামীকে ছিনতাই, পুলিশের গুলি বর্ষণ

 
চকরিয়া প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশকে মারধর করে হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় ছিনিয়ে নেয়া আসামীর মেয়ে খাদিজা বেগম ও পুলিশকে সহায়তাকারী যুবক আরাফাত।

হামলাকারীদের পিটুনিতে এসআই মাহবুবুর রহমানসহসহ পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়। উচ্ছৃঙ্খল দুর্বৃত্তদের ধাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পায় পুলিশ। পুলিশের নিয়ে যাওয়া সিএনজি চালিত ট্যাক্সি ভাংচুর ও চাকা কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ছিনিয়ে নেয়া আসামীর নাম আবদুল কাদের। তিনি পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নরে চর পাড়ার মৃত দৌলত
হোসেনের ছেলে। গুলিবিদ্ধ হওয়া আহতরা হলেন পুলিশকে সহায়তাকারী একই এলাকার আক্তার আহমদের ছেলে আশেক এলাহী আরাফাত (২০)। তাকে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা
দিয়ে রেফার করলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ অপর আহত আবদুল কাদেরের মেয়ে খাদিজা বেগম (১৪) কে চকরিয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পূর্ব বড় ভেওলায় ১৯৯২ সালে নিজ বাড়ীতে ঘুমন্ত অবস্থায় কালা মিয়াকে হত্যা করা হয়। এ হত্যায় দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় আসামী আবদুল কাদের। তিনি গ্রেফতার হয়ে বেশ কিছুদিন কারাভোগ করেন। পরে জামিনে বের হয়ে বিদেশ পাড়ি দেন। ফলে আদালতে হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয়। দীর্ঘ ৫বছর পর কাদের বিদেশ থেকে ঘরে ফিরেছে খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ গতকাল সকালে অভিযান চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কাদেরকে গ্রেফতারর করে সিএনজি চালিতট্যাক্সিতে তুলে থানায় আনার প্রস্তুতি নেয়া মাত্রই কাদেরের আত্মীয়স্বজনসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি প্রথমে ট্যাক্সির চাকা কেটে পাংচার করে দেয়। পরে পুলিশকে ধাওয়া ও পিটুনি দিলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং নিকটবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের রক্ষা করে পুলিশ।

ধৃত আসামী কাদেরকে নিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া এসআই মাহবুবুর রহমান বলেন, হত্যা মামলার আসামী কাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে পুলিশের উপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারী ও পুলিশের মধ্যে ৬-৭ রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়। তবে কেউ আহত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। পুলিশের কেউ আহত হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আরিফ দুলাল বলেন, এসআইসহ পুলিশের ৪ সদস্য শরীরে কাদামাখা অবস্থায় ইউপি কার্যালয়ে এক ঘন্টা আশ্রয় নেয়। এসময় এসআই মাহবুবের হাতে রক্ত দেখা যায়। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স গিয়ে পরিষদে আশ্রয় নেয়া পুলিশ সদস্যদের থানায় নিয়ে যায়। হামলাকারী কতৃর্ক ভাংচুর ও টায়ার কেটে দেয়া সিএসজি চালিত ট্যাক্সিটি গ্যারেজে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি আমি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনার ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। হামলাকারীদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযানে রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন