চকরিয়ায় পাঁচ আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল গুলি উদ্ধার, আটক ৩: সাজানো নাটকের অভিযোগ

chakaria-pic-arms-14-10

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চিংড়ি প্রকল্প থেকে দেশে তৈরী পাঁচটি অস্ত্র ও ২০ রাউন্ড গুলিসহ চিংড়ি প্রকল্পের মালিক ও দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে একটি লাইসেন্সধারী অস্ত্রও রয়েছে। শুক্রবার সকালে থানা ও বদরখালী নৌ-পুলিশের সদস্যরা উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন।

আটককৃতরা হলেন, চিংড়ি প্রকল্পের মালিক চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলার ইউনিয়নের দরবেশকাটা গ্রামের মৃত ফজল করিমের ছেলে আনিসুল মোস্তফা (৫৫), কর্মচারী একই এলাকার আজিজুল হকের ছেলে আবু ওবায়েদ (২৮) ও মহেশখালী উপজেলার কালামাছড়া ইউনিয়নের নয়াপাড়ার গ্রামের মৃত সালেহ আহমদের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৪৪)।

চকরিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ির আইসি এসআই ইসমাইল হোসেন জানান, পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের লম্বাখালী এলাকার চিংড়ি প্রকল্পে অস্ত্রধারীরা জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুর বারোটার দিকে অভিযান চালিয়ে লম্বাখালীস্থ একটি চিংড়ি প্রকল্প থেকে দেশীয় তৈরী পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, ২০ রাউন্ড গুলি, একটি লম্বা কিরিচ, একটি চুরি, একটি গুলির বেল্ট, ৪টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় আটক করা হয় তিনজনকে।

এদিকে বিকেলে থানা সেন্টার এলাকায় সাংবাদিক সম্মেলনে চিংড়ি প্রকল্পটির মালিক পক্ষের অংশীদার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা এলাকার বাসিন্দা ও বাংলাদেশ লবণ চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ ঘের মালিকেরা দাবি করে বলেন, তাদের চিংড়ি প্রকল্পটি প্রকল্পটি নিয়ে কারো সাথে কোন ধরণের বিরোধ নেই। তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা হানা দিয়ে মাছ ও মালামাল লুট করার কারনে তারা সরকারিভাবে লাইসেন্সধারী বন্দুক নিয়ে চিংড়ি প্রকল্পটিতে পাহারা দিত। সেখানে অবৈধ অস্ত্র রাখার প্রশ্নেই আসেনা। পুলিশ অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সধারী একটি অস্ত্র উদ্ধার করেন। ওই সময় তার ভাই আনিসুল মোস্তাফাকে চিংড়ি প্রকল্পের খামার বাড়ি থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় এবং দুই কর্মচারীকে কাজ করার সময় আটক করেন। তবে উদ্ধার করা অবশিষ্ট অস্ত্র গুলো তাদের চিংড়ি প্রকল্পের অনেক বাইর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

চিংড়ি প্রকল্পটির অংশীদার শহিদুল ইসলাম দাবি করেন, তার ভাই আনিসুল মোস্তাফা কিছুদিন আগে ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদে নির্বাচন করেন। এ কারনে এলাকার একজন মেম্বারের সাথে নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। তার ধারনা, নির্বাচনের ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে ওই প্রার্থী আগেরদিন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাদের চিংড়ি প্রকল্পে এসব অবৈধ অস্ত্র ফেলে রেখে বদরখালী নৌ-পুলিশের কাছে খবর দিয়ে অভিযানের নামে তার ভাই ও কর্মচারীদেরকে ফাঁসানোর জন্য অপচেষ্টা করেছে। তিনি এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন।

চকরিয়া থানার ওসি মো.জহিরুল ইসলাম খান বলেন, অভিযানের সময় উদ্ধারকৃত অস্ত্র সমুহ ও গ্রেফতারকৃত তিনজন থানা হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন