চকরিয়ায় নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

 

চকরিয়া প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি)’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বৃহস্পতিবার। এ রায়কে ঘিরে সারা দেশের ন্যায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়।বৃহস্পতিবার যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চকরিয়া পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিডিআর) ও আনসারসহ তিন শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যকে মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের বাড়ি চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসন হওয়ায় কক্সবাজারের মধ্যে এই দুটি উপজেলাকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহিৃত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। সে হিসেবে চকরিয়া পেকুয়াকে জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুরুত্ব হিসেবে দেখছেন।

প্রশাসনের পাশাপাশি নাশকতা ঠেকাতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ দলটির অঙ্গও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সারা দিন প্রশাসনকে সহায়তা করতে মাঠে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম এম এ।

৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে অনেকেই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে নানা মন্তব্য লেখায় তাদের টার্গেট করেও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

বুধবার(৭ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছে চকরিয়া পৌরসভা সেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক কায়সার হামিদ, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মহিম উদ্দিন ও হারবাং ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আনোয়ার আলীকে।

এর আগের দিন চকরিয়া পৌর বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপি সদস্য এম গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসানসহ জামাত শিবিরের আরো পাঁচ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে চকরিয়া থানা পুলিশ।

চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো. মতিউল ইসলাম বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে বুধবার থেকেই চকরিয়া-পেকুয়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে কোন ধরণের নাশকতা ঠেকাতে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও ব্যাটলিয়ন আনসার বাহিনীর সদস্যরা দুই উপজেলার স্টেশনসহ মহাসড়ক, আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কে অবস্থান করছে। এছাড়া নাশকতা করতে পারে এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।

তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার চকরিয়া-পেকুয়ায় নিরাপত্তা নির্বিঘ্ন রাখতে বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুলের নেতৃত্বে চকরিয়ায় পুলিশের ৫০ সদস্য ও পেকুয়ায় পুলিশের ৩০ সদস্য গিয়েছে। এছাড়া র‍্যাবের কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে চকরিয়ায় ৪০জন ও পেকুয়ায় ২০জন র‌্যাব সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া চকরিয়ায় ২৫ ও পেকুয়ায় ২০ বিজিবি সদস্যসহ চকরিয়ায় আনসার বাহিনীর ২০ সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।

র‌্যাব ও বিজিবি চকরিয়া পৌর শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও প্রশাসনিক এলাকায় অবস্থানের পাশাপাশি মোবাইল ডিউটিতে থাকবে। সদর উপজেলা থেকে আসা পুলিশসহ দুই থানার দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য টহলের পাশাপাশি চকরিয়া পৌরশহর, জিদ্দাবাজার, বানিয়ারছড়া, বরইতলী নতুন রাস্তার মাথা, হারবাং, ফাঁসিয়াখালী, মালুমঘাট, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, পেকুয়ার চৌমুহনী, পেকুয়া বাজার, মগনামা ঘাট ও উপজেলার আঞ্চলিক সড়কের স্টেশনগুলোতে অবস্থান নেবে। এ সময় কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে থাকবেন।

এএসপি বলেন, এই দুই উপজেলায় নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী জিরো টলারেন্স নীতি অনুযায়ী চলবে। কোনোভাবেই নাশকতা করতে দেয়া হবেনা। যারাই নাশকাতর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইন প্রয়োগকারী শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন